তাহিরপুর-বাদাঘাট সড়কে চাঁদাবাজি
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৮:০৮ পিএম, ২ এপ্রিল,শুক্রবার,২০২১ | আপডেট: ০১:২৩ পিএম, ১৮ নভেম্বর,সোমবার,২০২৪
সুনামগঞ্জের ঐতিহ্যবাহী উপজেলা তাহিরপুর। এখানে রয়েছে বহুল আলোচিত পর্যটন কেন্দ্র শিমুলবাগান, বারেকটিলা, যাদুকাটা নদী, টেকেরঘাট নীলাদ্রী লেক ও টাংগুয়ার হাওর।
তাইর টানে প্রতিদিন দেশ-বিদেশ থেকে ছুটে আসছে হাজার হাজার পর্যটক। কিন্তু এসব পর্যটন স্পটে আসা-যাওয়ার সময় তাহিরপুর-বাদাঘাট সড়কের শুকনো রাস্তায় দিতে হচ্ছে চাঁদা। আর এই চাঁদাবাজি বন্ধের জন্য এলাকার ভুক্তভোগীরা গত ২৩শে ফেব্রুয়ারি তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করে। কিন্তু একমাস পেরিয়ে গেলেও এব্যাপারে নেওয়া হয়নি কোন পদক্ষেপ।
এলাকাবাসী ও দায়েরকৃত অভিযোগ সূত্রে জানা যায়- জেলার তাহিরপুর-বাদাঘাট সড়কের পোছনারঘাট নামকস্থানে ব্রিজের গোড়ার মাটি বর্যার পানিতে সড়ে যায়। কিন্তু সেই জায়গাটি মাটি দিয়ে পুনঃরায় ভরাট করা হয়নি। বাঁশ ও কাঠ দিয়ে ৫হাত মাচাঁ তৈরি করে ব্রিজের গোড়ায় বসানো হয়।
আর এই মাচাঁটি পারাপার হতে জনপ্রতি ৫টাকা, প্রতি মোটর সাইকেল ১০টাকা, প্রাইভেট কার ২শত টাকা, অটোরিক্সা ২০টাকা, ট্রাক ৫শত টাকা, বাইসাইকেল ১০টাকা হারে চাঁদা প্রতিদিন উত্তোলন করছে উপজেলার বাদাঘাট ইউনিয়নের সোনাপুর গ্রামের মৃত নাসির মিয়ার ছেলে সোহেল মিয়া ও পাতারগাঁও গ্রামের মোনতা মিয়ার ছেলে মোবারক হোসেনগং।
সম্প্রতি এই চাঁদাবাজির নিয়ে একজনের হাত ও পা ভেঙ্গে ফেলা হয়েছে। এনিয়ে দুই গ্রুপের মধ্যে থানায় মামলাও হয়েছে। তারপরও তাহিরপুর-বাদাঘাট সড়কের অবৈধ চাঁদাবাজি বন্ধের জন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে নেওয়া হয়নি কোন পদক্ষেপ।
এব্যাপারে ঢাকা থেকে আগত পর্যটক মাইনুল ইসলাম, রাইসুল ইসলাম, আল আমিন, আশরাফ আলম ও রাহুল সরকার বলেন- তাহিরপুর-বাদাঘাট সড়কের শুকনো রাস্তা দিয়ে প্রাইভেট কার নিয়ে যাওয়ার পথে পাতারগাঁও নামকস্থানে আমাদের আটক করে চাঁদা চায়। কিসের চাঁদা জিজ্ঞাসা করলে চাঁদাবাজরা জানায় মাটির এই শুকনো রাস্তাটি ইউএনও’র কাছ থেকে লীজ এনেছে। এমন অনিয়ম আমরা এই জীবনে আর দেখিনি, এর প্রতিকার চাই।
তাহিরপুর ও বাদাঘাট ইউনিয়নের বাসিন্দা সৌরভ সরকার, প্রলয় রায়, আলী আমজাদ, গৌতম মৈত্র, ইসলাম উদ্দিন, খেলু মিয়া, নুর হোসেন, চাঁন মিয়াসহ আরো অনেকেই বলেন- রাস্তাটি মেরামত না করে সারাবছর অবৈধ ভাবে চাঁদা তোলা হয়। আমরা চাঁদাবাজির অত্যাচার থেকে মুক্তি চাই। এজন্য প্রধানমন্ত্রী সুদৃষ্টি কামনা করছি।
বাদাঘাট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আপ্তাব উদ্দিন বলেন- উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তাহিরপুর-বাদাঘাট সড়কটি রাস্তটি লিজ দিয়েছেন। কত টাকা দিয়ে শুকনো রাস্তাটি লিজ দেওয়া হয়েছে তা আমি জানিনা।
এব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পদ্মাসন সিংহ বলেন- বর্তমানে রাস্তায় পানি নাই, কিন্তু ব্রিজের গোড়ায় মেরামত করা হয়েছে। তারপরও ইজারাদারদের সাথে কথা বলে দেখব এব্যাপারে কি করা যায়।