অপরাজনীতির হোতারা সব পর্যায়ে নেতৃত্ব দিচ্ছে - কাদের মির্জা
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০১:৩০ এএম, ২৪ মার্চ,
বুধবার,২০২১ | আপডেট: ০৯:৫৮ পিএম, ২০ নভেম্বর,
বুধবার,২০২৪
অপরাজনীতির হোতারা সব পর্যায়ে নেতৃত্ব দিচ্ছে অভিযোগ করে নোয়াখালীর বসুরহাট পৌরসভার মেয়র আবদুল কাদের মির্জা বলেছেন, আমি বৃষ্টির কাছ থেকে কাঁদতে শিখেছি, আমাকে কাঁদানোর ভয় দেখিয়ে লাভ নেই। আমাকে ভেঙে ফেলতে পারবে কিন্তু মচকাতে পারবে না।
আজ মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে নিজের ফেসবুক আইডিতে লাইভে এসে তিনি এ কথা বলেন। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের ভাই কাদের মির্জা বলেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদের (বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য) মৃত্যুতে একটি শোকসভার আয়োজন করেছিলাম। ডিআইজির নির্দেশে পুলিশ তা করতে দেয়নি। ৭২-এ সংবিধান প্রণেতা ড. কামাল হোসেনের সহযোগী ছিলেন তিনি (মওদুদ)। যে মানুষটি বলেছিলেন ‘১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের পর যদি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ফিরে না আসতেন, তাহলে মিত্রবাহিনী কখনো ভারতে ফিরে যেত না।’
গত ৯ মার্চ বসুরহাটে আওয়ামী লীগের বিবদমান দুই গ্রুপের সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে সিএনজিচালক আলা উদ্দিনের প্রাণ হারানোর ঘটনা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আলা উদ্দিন হত্যা পূর্বপরিকল্পিত। একজন মানুষকে মারতে ১৬৪ জনের প্রয়োজন হয় না। এ মামলায় আমার নিরীহ কর্মী, আমার সন্তান ও ভাইকে বাদ দিয়ে আমাকে জড়ান। আমি যদি এ হত্যায় জড়িত থাকি আমার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিন। আমার ইউনিভার্সিটিতে পড়–য়া ছেলে ঢাকায় পরীক্ষা দিচ্ছিল। তাকেও হত্যা মামলায় জড়িত করা হয়েছে। আমি নেত্রীকে (আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা) বলেছি, এখন পর্যন্ত কোনো প্রতিকার বা ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। এটা দুঃখজনক। এক দেশে দুই আইন চলে কি-না, প্রশ্ন তুলে কাদের মির্জা বলেন, আমার ছেলেদের জামিন হয় না, আর তারা (প্রতিপক্ষ) জামিন নিয়ে এসে আমার ছেলেদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে হুমকি দিচ্ছে। আজকে কোথায় মানবাধিকার সংস্থা?
তিনি ওবায়দুল কাদেরকে ইঙ্গিত করে বলেন, কেউ কেউ বলেন- কেউ যদি অধম হয়, আমি কেন উত্তম হবো না; ‘শরম যদি লাগে গো ঘোমটা দিয়া হাঁট গো’। আমার সঙ্গে আল্লাহ, দলের ত্যাগী কর্মী ও সাধারণ মানুষ ছাড়া আর কেউ নেই। তবে আমি হতাশ নই, আমি তো আগেই বলেছি- ‘যদি তোর ডাক শুনে কেউ না আসে তবে একলা চলো রে’।
কাদের মির্জা অভিযোগ করে বলেন, ওবায়দুল কাদের ও তার স্ত্রী প্রশাসনকে বলে দিয়েছেন যে, আমার সঙ্গে যেন একটা লোকও থাকতে না পারে। সেই ব্যবস্থার অংশ হিসেবে এখন প্রশাসন থেকেও নানা ধরনের হুমকি দিচ্ছে। আমি এ দেশের মানুষের কাছে বিচার দেব, আল্লাহর কাছে বিচার দেব।
যারা অপরাজনীতির হোতা তারা সব পর্যায়ে নেতৃত্ব দিচ্ছে অভিযোগ করে তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে হেফাজতের পাশাপাশি আওয়ামী লীগের এ ‘অপরাজনীতিবিদরা’ও ষড়যন্ত্র করছে।
তিনি বলেন, আমি বিশ্বস্ত সূত্রে খবর পেয়েছি- গত পার্লামেন্ট নির্বাচনে হুসেইন মুহম্মদ এরশাদকে যেভাবে রাতের অন্ধকারে তার বাসা থেকে জোর করে সিএমএইচে নিয়ে গেছে, অনুরূপভাবে আমাকেও কিছু করার জন্য ষড়যন্ত্র চলছে। ওবায়দুল কাদের সাহেব তার স্ত্রীর প্ররোচনায় এসব করছেন, এটা দুঃখজনক। এ ধরনের কোনো ঘটনা ঘটলে আমি আত্মহত্যা করবো। তবে আমাকে ভেঙে ফেলতে পারবে কিন্তু মচকাতে পারবে না। আমি বৃষ্টির কাছ থেকে কাঁদতে শিখেছি, আমাকে কাঁদানোর ভয় দেখিয়ে লাভ নেই।
হুঁশিয়ারি দিয়ে কাদের মির্জা আরও বলেন, আমাকে দাবায়ে রাখতে পারবে না। সাহস করে সত্য কথা বলে যাব। সুযোগ পেলে ঢাকা গিয়ে সাংবাদিকদের বলবো কারা কী করেছে। ঢাকা থেকে এলাকা- সব শিয়ালের এক ডাক। কাদের মির্জা তার মৃত্যুর পর সমাধিতে দু মুঠো মাটি দিতে এলাকাবাসীকে অনুরোধ করেন। আর দূরের মানুষকে নামাজ পড়ে দোয়া করতে বলেন।
তরুণ সমাজের উদ্দেশে তিনি বলেন, তোমরা লেখাপড়া করো, প্রতিষ্ঠিত হও, অন্যায়ের বিরুদ্ধে মাথা উঁচু করে দাঁড়ানোর শক্তি যোগাড় করো।