৯৯৯-এ সাহায্য চাওয়াই সন্ত্রাসীদের কাছে তথ্য দিলেন পুলিশ
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৩:২৭ পিএম, ১৪ মার্চ,রবিবার,২০২১ | আপডেট: ০৩:০১ পিএম, ২১ নভেম্বর,বৃহস্পতিবার,২০২৪
জাতীয় জরুরি সেবা নম্বর ৯৯৯-এ ফোন করে পুলিশের সহযোগিতা চেয়েছিলেন তিনি। সাহায্যের বদলে পুলিশের এক উপপরিদর্শক (এসআই) সন্ত্রাসীদের কাছে তথ্য জানিয়ে দেন। পরবর্তী সময়ে ক্ষিপ্ত হয়ে ধারালো অস্ত্র দিয়ে সাহায্য চাওয়া যুবককে কুপিয়ে গুরুতর আহত করা হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। ওই যুবকের মাথা ও হাতে আঘাত লেগেছে।
গত শুক্রবার সকাল ৯টার দিকে ভেড়ামারা উপজেলার জুনিয়াদাহ এলাকার ফয়জুল্লাপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। ভুক্তভোগী যুবকের নাম আসাদুল হক (২৮)। তিনি ওই এলাকার মৃত আবু বক্করের ছেলে।
কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসা শেষে গতকাল শনিবার দুপুরে তিনি বাড়ি ফিরেছেন। এ ব্যাপারে ওই এসআইসহ সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে পুলিশ সুপারের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন তিনি।
সাহায্যের বদলে পুলিশের এক উপপরিদর্শক (এসআই) সন্ত্রাসীদের কাছে তথ্য জানিয়ে দেন। পরবর্তী সময়ে ক্ষিপ্ত হয়ে ধারালো অস্ত্র দিয়ে সাহায্য চাওয়া যুবককে কুপিয়ে গুরুতর আহত করা হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
পুলিশ সুপারের কাছে লিখিত অভিযোগে আসাদুল হক উল্লেখ করেছেন, শুক্রবার সকাল ৯টার দিকে জুনিয়াদহ এলাকায় তাঁর বাড়ির পাশে পদ্মা নদীতে হঠাৎ করে তিনটি গুলির শব্দ শুনতে পান। গুলির শব্দ শুনে তিনি দ্রুত জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯-এ ফোন দিয়ে বিষয়টি জানান।
এরপর সেখান থেকে তাঁর সঙ্গে ভেড়ামারা থানার দায়িত্বরত কর্মকর্তার (ডিউটি অফিসার) সঙ্গে যোগাযোগ করিয়ে দেওয়া হয়। ঘটনাস্থল ভেড়ামারা থানার কুচিয়ামোড়া পুলিশ ক্যাম্পের আওতায় হওয়ায় ভেড়ামারা থানার দায়িত্বরত কর্মকর্তা ভুক্তভোগী যুবকের নাম ও মুঠোফোন নম্বরটি তৎক্ষণাৎ কুচিয়ামোড়া পুলিশ ক্যাম্পে উপপরিদর্শক (এসআই) জাহাঙ্গীর হোসেনকে দেন।
পরে এসআই জাহাঙ্গীর হোসেন অভিযোগকারী যুবক আসাদুল হকের মুঠোফোনে কল দিয়ে হুমকির সুরে বলেন, ‘তুই ফাজলামি করিস, আমি খবর নিয়ে দেখেছি এলাকায় কোনো ঘটনা ঘটেনি।’ এ কথা বলার পর তিনি কল কেটে দেন।
এরপর কয়েকজন সন্ত্রাসী ওই যুবকের বাড়িতে গিয়ে যুবককে দেশীয় অস্ত্র দিয়ে এলোপাতাড়ি কোপাতে থাকে। ডাক-চিৎকার শুনে আশপাশের বাসিন্দারা ছুটে এলে তারা পালিয়ে যায়। আহত ওই যুবককে উদ্ধার করে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করেন স্বজনরা।
গতকাল শনিবার দুপুরে ছাড়পত্র নিয়ে তিনি বাড়ি চলে যান। যাওয়ার আগে পুলিশ সুপারের কাছে একটি লিখিত অভিযোগ দেন। এর অনুলিপি জেলা প্রশাসকের কাছেও দেন।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে কুচিয়ামোড়া ক্যাম্পের এসআই জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, ‘এ বিষয়ে নিউজ করার দরকার নাই। যারা এসব করেছে, তারা স্থানীয় আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী এক নেতার লোকজন। স্থানীয় এক সাংবাদিক সব জানেন, আপনি তাঁর সঙ্গে কথা বলে নিয়েন।’
ভেড়ামারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহজালাল সন্ধ্যায় বলেন, ‘ঘটনাস্থলে দুটি পক্ষ আছে যারা বালুঘাটে থাকে। কে নদীতে (পদ্মা) নামবে না-নামবে সেটা নিয়ে ঝামেলা হয়। ৯৯৯-এ ফোন কখন কোন স্টেজে দিয়েছে সেটা জানি না। কারণ আমি ঢাকাতে ছিলাম।
শুক্রবার দিবাগত রাতে ভেড়ামারায় ফিরেছি। অভিযোগ দিয়ে থাকলে অবশ্যই আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। যেহেতু মারধর করেছে, কোনো মার্সি (ক্ষমা) হবে না।’
রাতে জানতে চাইলে পুলিশ সুপার খাইরুল আলম বলেন, একজন এসেছিলেন। আইনগত পদক্ষেপ নিতে ভেড়ামারা থানার ওসিকে বলা হয়েছে।