মামলা করে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রী!
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০১:৪৮ এএম, ১৩ মার্চ,শনিবার,২০২১ | আপডেট: ০৪:৫২ পিএম, ২১ নভেম্বর,বৃহস্পতিবার,২০২৪
জমির দখল ঠেকাতে আদালতে মামলা করে আসামিদের ভয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন ঝর্ণা বেগম (৫০) নামে এক নারী। আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে প্রতিপক্ষের লোকেরা বিবদমান সম্পত্তিতে ভবন নির্মাণকাজ চালিয়ে যাচ্ছেন বলে অভিযোগ ভুক্তভোগী ওই নারীর।
ঘটনাটি ঘটেছে গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী উপজেলার রাতইল ইউনিয়নের ঘোনাপাড়া গ্রামে। ঝর্ণা বেগম ওই গ্রামের মৃত বীর মুক্তিযোদ্ধা সোহরাফ হোসেনের স্ত্রী।
জানা গেছে, উপজেলার ৯০নং ঘোনাপাড়া মৌজার বিআরএস ২৬৮, ৫৩৫, ২৬৯নং খতিয়ানের বিআরএস ২৬৮, ৫৩৫, ২৬৯ দাগের ৩৪ শতাংশ জমি নিয়ে দুপক্ষের মধ্যে বিরোধ চলছিল।
জমির দাবিদার ঝর্ণা বেগম গত ১ মার্চ গোপালগঞ্জ অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে নালিশি সম্পত্তি নিয়ে একটি মামলা করেন। মামলা নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত ওই সম্পত্তিতে উভয়পক্ষের প্রবেশ, স্থাপনা নির্মাণসহ শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য কাশিয়ানী থানার ওসিকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু আদালত নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে প্রতিপক্ষ বাচ্চু মোল্যা লোকজন নিয়ে ভবন নির্মাণকাজ চালিয়ে যাচ্ছেন।
ভুক্তভোগী ওই নারী অভিযোগ করে বলেন, আমার সম্পত্তিতে জোর করে প্রতিপক্ষ বাচ্চু মোল্যা ভবন নির্মাণ কাজ শুরু করেন ও আমাকে প্রাণনাশের হুমকি দিলে আমি আদালতে একটি মামলা করি। মামলায় ওই সম্পত্তিতে আদালত স্থিতাবস্থা জারি করেন। মামলার পর থেকে বাদী ও বাদীর পরিবার আমাকে প্রাণনাশের হুমকি দেয়। ভয়ে আমি দুই সপ্তাহ ধরে পালিয়ে বেড়াচ্ছি।
তিনি বলেন, আমার স্বামী বেঁচে নেই। আমার ছেলেরা চাকরি করে। আমি বাড়িতে একা থাকি। এ সুযোগে আমার জমি দখল করার জন্য দীর্ঘদিন ধরে আমার ওপর অত্যাচার নির্যাতন চালিয়ে আসছে। এর আগেও তারা আমাকে একাধিকবার মারধর করেছে। আমি ভয়ে আমার আত্মীয় বাড়িতে এসে আশ্রয় নিয়েছি। ভয়ে বাড়িতে ফিরে যেতে পারছি না।
বাচ্চু মোল্যার ছেলে জাহিদুল ইসলামের সঙ্গে মোবাইল ফোনে কথা হলে তিনি হুমকি-ধমকির কথা অস্বীকার করে বলেন, সিমেন্ট নষ্ট হয়ে যাচ্ছিল, তাই কিছুটা কাজ করেছিলাম। পুলিশ এসে বন্ধ করে দেওয়ার পর আর কাজ করেনি। বিষয়টি এলাকাবাসীকে নিয়ে সমঝোতার চেষ্টা করা হচ্ছে।
সহকারী কমিশনার (ভূমি) আতিকুল ইসলাম বলেন, আমি বিষয়টি অবগত হয়েছি এবং ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তাকে তদন্ত করে প্রতিবেদন দিতে বলেছি।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কাশিয়ানী থানার এএসআই পলক কুমার বারুরী বলেন, বিবদমান সম্পত্তিতে উভয়পক্ষকে শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য বলা হয়েছে। তবে কাজ করছিল খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে গিয়ে কাজ বন্ধ করে দিয়েছি। পুনরায় কাজ করলে দোষীদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এছাড়া বাদীর আইনগত অধিকার নিশ্চিত করতে আমরা সর্বাত্মক চেষ্টা করব।