ধর্ষণের শিকার স্কুলছাত্রী হলো মা, কনস্টেবলকে গ্রেপ্তারের নির্দেশ
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৯:০৯ পিএম, ২৬ ফেব্রুয়ারী,শুক্রবার,২০২১ | আপডেট: ০৩:৫৭ পিএম, ২৫ নভেম্বর,সোমবার,২০২৪
ধর্ষণে অভিযুক্ত পুলিশ কনস্টেবল ওহিদুল আলম শাওনের বিরুদ্ধে ফেনী আদালতে ২২ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন এক স্কুলছাত্রী।
গতকাল বৃহস্পতিবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে জেলার সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কামরুল হাসান তার জবানবন্দি গ্রহণ করেন। এর আগে গত ১২ ফেব্রুয়ারি ধর্ষণের কারণে গর্ভবতী হয়ে পড়া ওই স্কুলছাত্রী কন্যা সন্তানের জন্ম দেয়।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, ভুক্তভোগী স্কুলছাত্রীর বাড়ি ফেনীর ফুলগাজী উপজেলায়। অভিযুক্ত কনস্টেবল ওহিদুল আলম শাওন ফুলগাজী উপজেলায় তার নানার বাড়িতে বেড়াতে গিয়ে নবম শ্রেণির ওই ছাত্রীকে ধর্ষণ করেন। ওহিদুল আলম শাওন বর্তমানে রাঙামাটিতে একটি ফাঁড়িতে কর্মরত আছেন।
এ ঘটনায় গতকাল বৃহস্পতিবার ভুক্তভোগী ফুলগাজী থানায় মামলা দায়ের করে। মামলায় পুলিশ কনস্টেবল শাওনসহ অন্য আসামিরা হলেন তার বাবা আমিনুল ইসলাম, মা শানু অপরজন ফিরোজ আহম্মদ বাবু।
আদালত সূত্র আরও জানায়, বাদীর অভিযোগ প্রাথমিকভাবে সত্যতা পাওয়ায় কনস্টেবলসহ বাকি তিন আসামিকে গ্রেপ্তার করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য ফুলগাজী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। বিষয়টি নিশ্চিত করেন কোর্ট পরিদর্শক গোলাম জিলানী।
এ বিষয়ে ফুলগাজী সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার আতোয়ার রহমান বলেন, ‘যেহেতু আদালত নির্দেশ দিয়েছে সেভাবেই আমরা খুব দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।’
মামলার নথি সূত্রে জানায়, পূর্ব পরিচয়ের সূত্র ধরে শাওন এক বছর আগে ওই ছাত্রীর সঙ্গে সম্পর্কে জড়ায়। পরে গর্ভবতী হয়ে পড়ে ওই ছাত্রী। বারবার শাওনকে বিয়ে করার চাপ দেওয়া হলেও তিনি রাজি হননি। পারিবারিকভাবে চেষ্টা করেও ফল পাওয়া যায়নি। গত ১২ ফেব্রুয়ারি ওই ছাত্রী একটি কন্যা সন্তানের জন্ম দেয়।
গতকাল এ বিষয়ে ফুলগাজী থানায় মামলা হলে থানার উপপরিদর্শক (এসআই) রাশেদুল ইসলামকে মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়।
মামলায় বলা হয়, বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে প্রথমে সখ্যতা এবং একদিন ঘুরে বেড়ানোর কথা বলে ফেনী শহরের কোনো একটি বাসায় নিয়ে যাওয়া হয় তাকে ওই স্কুলছাত্রীকে। এদিন ফলের জুসের সঙ্গে চেতনানাশক ওষুধ খাইয়ে দিয়ে তাকে ধর্ষণ করা হয়।
প্রায় তিন ঘণ্টা পর জ্ঞান ফিরলে ভুক্তভোগী যখন বিষয়টি নিয়ে প্রতিবাদ করে তখন তার অশ্লীল ভিডিও ধারণ করা হয়েছে বলে জানিয়ে তা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়।
এভাবে একাধিকবার ধর্ষণের শিকার হয়ে গর্ভবতী হয়ে পড়ে সে। বিষয়টি অভিযুক্ত পুলিশ সদস্যকে জানালে সে নানা কৌশলে এড়িয়ে যেতে থাকে। মামলার এজাহার এবং গতকাল বিকেলে হাকিমের সামনে এমন জবানবন্দি দেন ওই ছাত্রী।