ধর্ষনে অন্তসত্ত্বা কিশোরী, হুমকিতে বাড়ি ছাড়া পিতা
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০১:৩৫ এএম, ২১ ফেব্রুয়ারী,রবিবার,২০২১ | আপডেট: ০১:৫৯ পিএম, ২০ নভেম্বর,
বুধবার,২০২৪
মুন্সীগঞ্জের টঙ্গী বাড়ীতে ধর্ষনের শিকার কিশোরী ৬ মাসের অন্তসত্ত্বা হয়ে পড়েছেন। এই দিকে ধর্ষক পরিবারের হুমকির কারনে ওই অন্তসত্ত্বা কিশোরীর বাবা বাড়ি ছাড়া রয়েছেন। জানা গেছে,উপজেলার উত্তর পাইকপাড়া গ্রামের ওই ধর্ষিতা কিশোরীর মা মানুষিক ভারসাম্যহীন হওয়ায় অনেক আগেই কিশোরী পরিবারকে ছেড়ে চলে যান।
ধর্ষিতা কিশোরী বাবার সাথে উপজেলার উত্তর পাইকপাড়া গ্রামে বসবাস করতেন। কিশোরীর বাবা দিনমজুর ভবেঘুরে প্রকৃতির লোক হওয়ায় প্রতিবেশী চাচী রুনা বেগম ধর্ষিতাকে দেখে শুনে রাখতো।শনিবার সন্ধায় ধর্ষিতার পিতা বাদী হয়ে টঙ্গীবাড়ী থানায় অভিযোগ দায়ের করেন।
সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, ওই কিশোরী কে প্রায় ৬ মাস আগে একই এলাকার হাসান মিয়ার ছেলে হাবিবুর (১৫) ও আফসার চৌধুরীর ছেলে সানি (১৮) পালের বাড়ি পরিত্যক্ত বাগানে নিয়ে ধর্ষন করে। সে সময় ওই এলাকার লোকজন বিষয়টি দেখে ফেললে চর থাপ্পর মেরে ধামাচাপা দেয়। ধর্ষিতা কিশোরী জানান, ৬ মাস আগে একদিন সন্ধায় আমাদের প্রতিবেশী বাবুল মিয়ার ছেলে ফাহিম আমার চাচি রুনু বেগম আমাকে ডাকছে বলে আমাকে আমাদের বাড়ির পাশে পালের বাড়িতে নিয়ে যায়। আমি সেখানে গিয়ে দেখি, আমাদের এলাকার সামি দাড়িয়ে আছে। পরে সামি আমাকে ধরে জোর করে ধর্ষন করে।
এ সময় আমাদের অপর প্রতিবেশী হাবিবুর আসে। সানির পরে হাবিবুরও আমাকে ধর্ষণ করে। সে সময় আমার চিৎকারে এলাকার লোকজন আগাইয়া আসলে আমি তাদের জানালে, এলাকার লোকজন ওদের চর থাপ্পর দিয়ে তাড়িয়ে দেয়। ধর্ষিতা আরো জানায়,পরে আমি হাবিবুর এর মাকে এ ব্যাপারে জানাইলে সে বলে তুমি এগুলো আর কাউকে বলোনা। কাউকে বললে তোমার বাবাকে মেরে এলাকা হতে তাড়িয়ে দেওয়া হবে।
এ ব্যপারে ধর্ষিতার পিতা জানান, কিছুদিন আগে আমার মেয়ে তার নানী বাড়িতে বেড়াতে গেলে তার নানী আমার মেয়ের লক্ষন দেখে বুঝতে পেরে ওকে জিজ্ঞাসবাদ করলে ও ওর নানিকে সব খুলে বলে। পরে আমি ২০ দিন আগে ওকে মেডিকেল চেকাপ করলে ডাক্তার জানায় ওর পেটে ৬ মাসের বাচ্চা আছে। আমি মেয়েকে ১৮/২০ দিন আগে টঙ্গিবাড়ী হাসপাতলে নিয়ে এক নার্সের অধিনে রেখে এসেছি।
সে আরো জানায়, ধর্ষক হাবিবুর এর পিতা হাসান আমাকে হুমকি দিচ্ছে। হাসান বলে সানির মামারা অস্ত্র ব্যবসা করে তুমি এটা নিয়ে বেশি বাড়বাড়ি করলে তোমার ভালো হবেনা। তুমি এলাকা হতে চলে যাও। আমি ভয়ে বিভিন্ন যায়গায় পালিয়ে বেড়াচ্ছি। ওই এলাকার সোহাগ, অয়ন, শুভ, শাহিন, রয়েল, কামরুল, লিমনসহ কতিপয় যুবক জানান, আমাদের এলাকার মেয়ে ধর্ষনের শিকার হয়ে গরীব বলে দীর্ঘদিন যাবৎ বিচার পাচ্ছে না।
আমরা বিষয়টি এলাকার চেয়ারম্যান, মেম্বার, ও আমাদের মসজিদের সভাপতিম মঞ্জুর মিয়াসহ স্থাণীয় লোকজন কে জানাইছি। তারা গত শুক্রবারের মধ্যে এর মিমাংশা করে দিবে বলে আমাদের আশ্বাস দিয়ে এখন সানির মামা মঞ্জিল বলছে ডিএনএ টেষ্ট করে নিয়ে এসো। আমরা এর শুষ্ঠ বিচার চাই।
এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট আবদুল্লাহপুর ইউপি চেয়ারম্যান আ. রহিম জানান, আমার কাছে কয়েকজন যুবক আসছিলো। আমি ওদের আইনগত ব্যাবস্থা নিতে বলেছি।
এ ব্যাপারে টঙ্গিবাড়ী থানার ওসি হারুন অর রশিদ জানান, একটি অভিযোগ দায়ের করতে ভুক্তভোগী পরিবার থানায় এসেছে। তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।