কুমিল্লা দক্ষিনাঞ্চলে লক্কর-ঝক্কর পরিবহনের দখলে শহরের সড়ক
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৬:২৯ পিএম, ১৭ ফেব্রুয়ারী,
বুধবার,২০২১ | আপডেট: ০৪:৫৮ এএম, ২০ নভেম্বর,
বুধবার,২০২৪
কুমিল্লা দক্ষিনাঞ্চলের লাকসাম, লালমাই, বরুড়া, নাঙ্গলকোট ও মনোহরগঞ্জ উপজেলার সর্বত্র এবং ঐতিহ্যবাহী বানিজ্যিক নগরী লাকসাম, বরুড়া ও নাঙ্গলকোট পৌরশহরের অধিকাংশ সড়কগুলো নিবন্ধনহীন নানা পরিবহনের দখল রাজত্বে পথচারীদের যানচলাচল মারাত্মক ঝুকিতে পড়েছে। সড়কগুলোতে যানজটের অন্যতম কারন নির্ধারিত ষ্ট্যান্ড কিংবা যত্রতত্র পরিবহনের দৌরাত্ব।
স্থানীয় একাধিক সূত্র জানায়, জেলা দক্ষিনাঞ্চলের সবকটি উপজেলার সর্বত্র যোগাযোগের ক্ষেত্রে নানা পরিবহন ব্যবস্থা সড়ক পথে যান চলাচলে মারাত্বক অন্তরায় সৃষ্টি করে চলেছে।
উপজেলা শহরের উপর দিয়ে দেশের রাজধানী সহ বিভিন্ন জেলার সাথে সড়ক পথই একমাত্র যোগাযোগ মাধ্যম। এ অঞ্চলের সাথে বিভিন্ন আন্তঃজেলা সড়ক ও সংযোগ সড়ক পথ গুলো বিভিন্ন সমস্যায় পড়ে সাধারণ যাত্রীদের অবর্ননীয় দূর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে প্রতিনিয়ত। জেলা দক্ষিনাঞ্চলের ৫টি উপজেলার সড়ক পথগুলো ট্রেড ইউনিয়ন শ্রমিক সিন্ডিকেটের নিয়ন্ত্রনে, চাঁদাবাজি, পকেটমার, মাদক সেবীদের দৌরাত্ব, বখাটে মাস্তানের আড্ডা, নিম্নমানের অনুমোদনহীন লক্কর-ঝক্কর মার্কা গাড়ী চলাচল, যাত্রী ছাউনি ও নির্ধারিত কোন টার্মিনাল কিংবা পরিবহন স্ট্যান্ড বলতে কিছুই নেই।
বিশেষ করে অভিজ্ঞ কোন ড্রাইভার হেলপারসহ বিভিন্ন সমস্যা বিদ্যমান। অনেক যানবাহনের কোন বৈধ-রুট পারমিটও নেই।
সূত্রগুলো আরও জানায়, জেলা দক্ষিনাঞ্চল ৫টি উপজেলার প্রধান ও পাশ্ববর্তী সড়ক ঢাকা-চাঁদপুর, ঢাকা- চট্রগ্রাম ও ঢাকা-নোয়াখালী সড়ক অতিক্রম করেছে বলে এ অঞ্চলের গুরুত্ব অপরিসীম। উপজেলাগুলোর প্রধান প্রধান সড়ক পথ গুলোর সাথে শাখা লাইন সড়ক গুলোর মধ্যে লাকসাম- চৌদ্দগ্রাম, লাকসাম-চাঁদপুর, লাকসাম-মনোহরগঞ্জ, লাকসাম-কুমিল্লা ও লাকমাম- নাঙ্গলকোট, লাকসাম-কাশিনগর সড়কগুলোর সমস্যা আরো প্রকট। জেলা সদরের সাথে আশে পাশে উপজেলার হাট বাজারের সড়ক গুলো-তো আছেই।
উল্লেখিত সড়ক গুলোতে লক্কর-ঝক্কর মার্কা ও পরিবেশ দূষণ যুক্ত যত্রতত্র বিভিন্ন ধরনের ফিটনেস বিহীন যানবাহন চলাচল, যাত্রী হয়রানী, সরকারী নির্ধারিত ভাড়ার চেয়েও অতিরিক্ত ভাড়া আদায়, মালামাল পরিবহনে বাস শ্রমিক ও স্থানীয় লেবারদের দৌরাত্ব অনেকটা বৃদ্ধি পেয়েছে। তার উপর স্থানীয় মাস্তানদের অবাধ দৌরাত্ব তো আছেই যা বলার অপেক্ষা রাখে না।
স্থানীয় একাধিক আইন ও পরিবেশবিদদের সূত্র জানায়, সুপ্রীম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগে দায়েরকৃত পিটিশান নম্বর ৯১৬/২০১৯ এর অন্তরবর্তীকালীন আদেশে মাত্রাতিরিক্ত কালোধোঁয়া নিঃসরনকারী মোটরযান সমূহ চিহ্নিত করে আটক করার বিষয়ে একটি নির্দেশনা প্রদান করলেও জেলা বি.আর.টি.এ কর্তৃপক্ষ সহ স্থানীয় প্রশাসন এ ব্যাপারে নীরব দর্শক। বিশেষ করে কালো ধোঁয়া নিঃসরণকারী মোটরযান রাস্তায় চলাচল থেকে বিরত থাকতে এবং ঐ সকল মোটরযান সড়কে চলাচল করলে ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট মোটরজান এবং চালক কিংবা মালিকের বিরুদ্ধে সড়ক পরিবহন আইন ২০১৮ এর ৮৯ ধারা মোতাবেক শাস্তির ব্যবস্থা নেয়ার বিধান রয়েছে কিন্তু এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট মহলের দায়িত্বহীনতা ও ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন আছে জনমনে।
অপরদিকে ওই সড়কে মারাত্মক ঝুঁকি নিয়ে যাত্রী ও মালামাল পারাপার করছে অনেক পুরানো জরার্জীণ ও লক্কর ঝক্কর মার্কা পরিবহন। এসবের মধ্যে বেশ কয়েকটি পরিবহন প্রায় ৩০/৩৫ বছর ধরে বিভিন্ন সড়কে চলাচল করছে। এতে এলাকার পরিবেশ ও যান চলাচল অনেকটা ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে।
এ ব্যাপারে সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগের একাধিক কর্মকর্তার মুঠোফোনে বার বার চেষ্টা করেও তাদের বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।