সংঘাত–অনিয়মের শঙ্কার মধ্যেই আজ ৫৫ পৌরসভায় ভোট শুরু
ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ০৩:৪৭ পিএম, ১৪ ফেব্রুয়ারী,রবিবার,২০২১ | আপডেট: ১০:৫৫ এএম, ২১ নভেম্বর,বৃহস্পতিবার,২০২৪
কেন্দ্রে আসার আগেই ভোটারদের আটকে দেওয়ার ‘কায়দা’ শেখানো, এলাকা ছাড়ার হুমকি এবং প্রচারে সংঘাতের নানা ঘটনা চতুর্থ দফার পৌরসভা নির্বাচনে উত্তাপ ছড়িয়েছে। ভোটের পরিবেশ নিয়ে শঙ্কার কথা বিএনপিসহ বিরোধী দলের প্রার্থীদের পক্ষ থেকে বার বার বলা হলেও নির্বাচন কমিশনকে (ইসি) কঠোর কোনো ব্যবস্থা নিতে দেখা যায়নি। এমন পরিস্থিতিতে আজ রোববার সকাল আটটা থেকে চতুর্থ ধাপে ৫৫টি পৌরসভায় ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে। ভোটে সংঘাত–অনিয়মের শঙ্কা রয়েছে।
এর আগে তিন দফায় অনুষ্ঠিত পৌর ভোটের দিন সহিংসতার পাশাপাশি নানা অনিয়মের ঘটনা দেখা গেছে। তখনো ইসির ভূমিকা ছিল অনেকটাই নিষ্ক্রিয়।
নির্বাচনী প্রচারের সময় অনেক জায়গায় আচরণবিধি লঙ্ঘন করেছেন স্থানীয় সাংসদেরা। এর আগে বিভিন্ন স্থানীয় সরকার নির্বাচনে সাংসদদের চিঠি দিয়ে সতর্ক করা হলেও এবার সে রকম পদক্ষেপও ছিল না।
আজ রবিবার সকাল আটটা থেকে বিকেল চারটা পর্যন্ত কোনো বিরতি না দিয়েই ভোট গ্রহণ চলবে। দেশের ৩৪ জেলার ৫৫টি পৌরসভার মধ্যে ২৯টিতে ভোট গ্রহণ করা হচ্ছে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম)। আর ২৬টি পৌরসভায় ভোট হচ্ছে কাগজের ব্যালটে। এসব পৌরসভায় মোট ভোটার ১৬ লাখ ৬৭ হাজার ২২৪ জন। মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ২১৭ জন, সাধারণ কাউন্সিলর পদে ২ হাজার ৭০ জন ও সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে ৬১৮ জন। মোট ভোটকেন্দ্র ৭৯৩টি। চতুর্থ ধাপে ভোট হওয়ার কথা থাকলেও মাদারীপুরের কালকিনি এবং নাটোর সদর পৌরসভার নির্বাচন স্থগিত করেছে ইসি।
এই নির্বাচনকে কেন্দ্র করে গত কয়েক দিনে অন্তত ৩০টি পৌরসভায় সংঘর্ষ, হামলা, ভাঙচুর ও প্রচারে বাধা দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে একাধিকবার হামলা ও সংঘর্ষ হয়েছে পটুয়াখালীর কলাপাড়া, ঠাকুরগাঁও সদর ও টাঙ্গাইলের গোপালপুর পৌরসভায়। যে ৩০টি পৌরসভায় সংঘর্ষ হয়েছে, তার মধ্যে ১৮টি ঘটনাই ঘটেছে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে। আর ছয়টি ঘটনা ঘটেছে আওয়ামী লীগ ও দলের ‘বিদ্রোহী’ প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে।
নির্বাচনী প্রচারের সময় অনেক জায়গায় আচরণবিধি লঙ্ঘন করেছেন স্থানীয় সাংসদেরা। এর আগে বিভিন্ন স্থানীয় সরকার নির্বাচনে সাংসদদের চিঠি দিয়ে সতর্ক করা হলেও এবার সে রকম পদক্ষেপও ছিল না। আচরণবিধি লঙ্ঘনের দায়ে জেল–জরিমানা করা থেকে শুরু করে প্রার্থিতা বাতিল করার ক্ষমতা থাকলেও ইসিকে শক্ত কোনো অবস্থান নিতে দেখা যায়নি।
ভোটের প্রস্তুতি নিয়ে গতকাল বিকেলে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন ইসি সচিবালয়ের সচিব হুমায়ুন কবীর খোন্দকার। তিনি বলেন, ইসির লক্ষ্য হচ্ছে অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন করা। এ জন্য যা যা করা দরকার, সে সব ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। অনিয়ম রোধে প্রতি কেন্দ্রে তিন-চারজন অস্ত্রধারী পুলিশ থাকবে। আনসারসহ সব মিলিয়ে প্রতি কেন্দ্রে ১১ থেকে ১৩ জন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য থাকবেন। এর বাইরে প্রতিটি সংরক্ষিত ওয়ার্ডে একটি র্যাব ও পুলিশের টিম থাকবে। প্রতিটি কেন্দ্রে একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট থাকবেন।
সর্বশেষ গত ৩০ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত তৃতীয় ধাপের পৌর নির্বাচনে সংঘর্ষ, গোলাগুলি, প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর এজেন্টদের ভোটকেন্দ্রে ঢুকতে না দেওয়া এবং মারধরের ঘটনা ঘটে অন্তত আটটি পৌরসভায়। আর ১০টি পৌরসভায় বিএনপি ও স্বতন্ত্র প্রার্থীরা ভোট বর্জন করেছিলেন।