শতভাগ বিদ্যুতায়নর উপজেলায় বৈদ্যুতিক সংযাগ থেকে বঞ্চিত ক্ষুদ্র নি-গোষ্ঠীসহ চার গ্রাম
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১১:২২ পিএম, ১০ ফেব্রুয়ারী,
বুধবার,২০২১ | আপডেট: ০৭:২৭ পিএম, ১৩ সেপ্টেম্বর,শুক্রবার,২০২৪
শতভাগ বিদ্যুতায়ন উপজলা ঘোষণার একবছর অতিবাহিত হলেও মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজলার চার গ্রাম বিদ্যুৎ সংযাগ থেকে বঞ্চিত এখনো। গত বছরের ১২ ফেব্রুয়ারী কমলগঞ্জ উপজেলাকে শতভাগ বিদ্যুতায়িত উপজলা ঘোষণা করা হয়। তড়িঘড়ি করে শতভাগ বিদ্যুতায়ন উপজেলা ঘোষণা হয় কিন্তু এখনো বৈদ্যুতিক সুবিধা থেকে বঞ্চিত খাসিয়া পুঞ্জি সহ চার গ্রাম।
সরজমিন ঘুরে স্হানীদের অভিযাগে জানা যায়, এক বছর পূর্বে কমলগঞ্জ উপজেলাকে শতভাগ বিদ্যুতায়িত উপজেেলা ঘোষণা করা হয়, অথচ এক বছর পেরিয়ে গেলেও আদমপুর ইউনিয়নের কালেঞ্জি খাসিয়া পুঞ্জি, কালঞ্জি গ্রাম, কোনাগাঁও গ্রামের একাংশ এবং ইসলামপুর ইউনিয়নের কুরমা পুঞ্জিতে বিদ্যুতায়িত হয়নি। এসব এলাকায় বিদ্যুতায়ন নিয়ে দেখা দিয়েছে জটিলতা। পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত ও সরকার প্রধানের অনুমতি ছাড়া সংরক্ষিত বনাঞ্চলের মধ্যদিয়ে বনায়ন ব্যতীত ভিন্ন কাজ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। ফলে বনবিভাগর নিষেধাজ্ঞায় বনের ভেতর বসবাসরত কমলগঞ্জের দু'টি খাসিয়া পুঞ্জি ও একটি গ্রাম বিদ্যুৎ সুবিধা থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। বিদ্যুতায়নের জন্য সম্প্রতি মানববন্ধন করছে খাসিয়া সম্প্রদায়।
কালেঞ্জি খাসিয়া পুঞ্জির হেডম্যান রিতংগন খরিয়ামসহ স্থানীয়রা জানান, মৌলভীবাজার পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি কমলগঞ্জ উপজেলায় শতভাগ বিদ্যুতায়ন ঘোষণা করেছে,অথচ কালেঞ্জি খাসিয়া পুঞ্জি, কালেঞ্জি গ্রাম এবং কুরমা পুঞ্জি এখনও বিদ্যুতায়নর আওতায় আসেনি। কালেঞ্জী খাসিয়া পুঞ্জির ৯৫ পরিবারের সদস্যরা দিনদিন নানা সমস্যায় জর্জরিত। বন বিভাগের আপত্তির কারণে এ তিনটি গ্রাম বিদ্যুতায়ন সম্ভব হচ্ছে না, ফলে পুঞ্জির নারী পুরুষ সদস্যরা টিলার নিচের কুপ থেকে পানি সংগ্রহ কর টিলার উপর তুল নিয়ে আসেন। এসব পরিবার বিদ্যুৎ সুবিধা প্রাপ্ত হলে বৈদ্যুতিক পাম্প বসিয়ে নিচ থেকে টিলার উপর ঘরে ঘরে পানি তোলা যেতো।
আদমপুর ইউপি চেয়ারম্যান আবদাল হোসেন বলেন, দ্রুত বিদ্যুৎ বঞ্চিত গ্রাম শতভাগ বিদ্যুতায়নের আশ্বাস দিয়ে আমার কাছ থেকে স্বাক্ষর নেওয়া হয়। অথচ এখন পযন্ত আমার ইউনিয়নের কোনাগাঁও গ্রামের একাংশ, কালেঞ্জি খাসিয়া পুঞ্জি ও কালেঞ্জি গ্রাম বিদ্যুৎ সুবিধা থেকে বঞ্চিত। বন বিভাগের সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, বিশেষ প্রয়োজনে বিদ্যুৎ লাইন স্থাপন , রাস্তা নিমার্ণ বা উন্নয়নমূলক কাজের জন্য পরিবশ ও বন মন্ত্রণালয় এবং বন অধিদপ্তরের অনাপত্তি প্রয়োজন। বিদ্যুৎ সংযোগ প্রদানর ক্ষেত্রে জমির মালিকানা সংক্রান্ত প্রমাণ পত্রও দরকার। এসব জটিলতায় খাসিয়া সম্প্রদায়ের দুটি পুঞ্জি ও একটি গ্রাম বিদ্যুৎ সংযোগ স্থাপন জটিলতা দেখা দিয়েছে।
এ ব্যাপারে রাজকান্দি বন রেঞ্জ কর্মকর্তা আবু তাহের বলেন, কালেঞ্জি খাসিয়া পুঞ্জি ও গ্রাম বিদ্যুতায়নের জন্য ইতিপূর্বে বন বিভাগ একটি জরিপ স্থাপন করলেও বিদ্যুতায়ন কাজ শুরু করার জন্য তার কাছে বন বিভাগের কোন নির্দেশনা আসেনি। সংরক্ষিত বনে বিদ্যুৎ লাইন স্থাপন পরিবেশ ও বন মন্তণালয়ের এবং বনবিভাগের অনাপত্তি পত্র প্রয়াজন।
মৌলভীবাজার পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি কমলগঞ্জ আঞ্চলিক কার্যালয়ের ডিজিএম মীর গোলাম ফারুক বলন, কালেঞ্জি খাসিয়া পুঞ্জি, কুরমা পুঞ্জি ও কালেঞ্জি গ্রামকে বিদ্যুতায়নের আওতায় আনতে কাজ শুরু হয়েছিলো। ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান খাসিয়া পুঞ্জি এলাকায় বৈদ্যুতিক খুটি এনে রাখে। তবে বনাঞ্চল এলাকা হওয়ায় বন বিভাগের আপত্তির কারণে তিনটি গ্রামকে এখনও বিদ্যুতায়নের আওতায় আনা যায়নি।
কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আশেকুল হক বলেন, সংরক্ষিত বনাঞ্চল হওয়ায় জটিলতা সৃষ্টি হয়েছে। তবে বিষয়টি পরিবেশ ও বন মন্ত্রী মহোদয়ের নজরে দেয়া হয়েছে। আশা করি এ বিষয়ে একটা সমাধান আসত পারে।