টঙ্গীবাড়ীতে থাম খুটির অভাবে ঘর উঠাতে পারছেনা জহুরা, মানবেতর বসবাস
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১০:৪০ পিএম, ৬ ফেব্রুয়ারী,শনিবার,২০২১ | আপডেট: ০৪:২০ পিএম, ২১ নভেম্বর,বৃহস্পতিবার,২০২৪
মুন্সীগঞ্জের টঙ্গীবাড়ী উপজেলার দিঘিরপাড় ইউনিয়নের পদ্মা পাড়ের কান্দারবাড়ি গ্রামের সরকারী জমিতে দীর্ঘদিন যাবৎ ঘর উঠিয়ে পরিবারসহ বসবাস করে আসছে জহুরা বেগম (৬০)। কিন্তু বিগত ৬ মাস আগে পদ্মার ভাঙ্গনে তার বসবাসরত ভিটাটি নদী গর্ভে বিলীন হয়ে যায়। যাওয়ার স্থান না থাকায় নদীর পাশেই ঘরটি ভেঙ্গে দুটি চাল মাটিতে হেলান দিয়ে খাড়া করে রেখে তার ভিতর বসবাস করছে সে।
ঘরটি ভাঙ্গার পর থাম খুটি গুলি নষ্ট হয়ে যাওয়ায় টাকার অভাবে ঘর তুলতে পারছেনা সে। যাওয়ার কোন স্থান না থাকায় যে ভিটিটি ভেঙ্গে গেছে নদীতে তার পাশেই সরকারী জমির এক টুকরো জমি দখল করে রেখেছে সে। কিন্তু অর্থের অভাবে থাম খুটি কিনতে না পারায় ঘর উত্তোলন করতে পারছেনা সে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, তার ভেঙ্গে যাওয়া ঘরের দুটি চাল মাটির সাথে খাড়া করে রেখে তার ভিতর সেসহ তার পরিবার বসবাস করলেও চালের দুটি অংশের মধ্যে স্থানে রয়েছে বিশাল ফাঁকা। সে ফাঁকা দিয়ে শীত আর শিশিরের খেলা চলে রাতভর। সকালে সূর্য কিরনও অবলীলায় প্রবেশ করে। নদীর পাশের ওই স্থানটিতে হিমেল বাতাসে শীতে শরীরে কাপন তুললেও শীতে তাদের সম্বল মানুষের কাছ থেকে পাওয়া পাতলা কম্বল। যা গায়ে মুড়ি দিয়ে শুয়ে শীত নিবারন করা বেশ কষ্টকর।
এক যুগেরও বেশি সময় ধরে পদ্মার পাড়ে এই স্থানেই বসবাস করে আসছে তার পরিবার। এখানে থেকেই তিন মেয়ে ও দুই ছেলের বিয়ে দিয়েছেন। বড় ছেলেরা এখন আর তার খোঁজ-খবর নেয় না। কয়েক বছর ধরে এক ছেলে ও এক মেয়েকে নিয়ে একটি দুই চালা টিনের ঘরে কোনোরকমে দিন পার করছিলেন। ঘরটিই ছিল তার একমাত্র সম্বল। কিন্তু সেটিও পদ্মার শাখা নদীর ভাঙনে বিলীন হয়ে গেছে।
জহুরা বেগম বলেন, ২ বছর হয় তার স্বামী মারা গেছে। স্বামীর মৃত্যুর পর ছোট ছেলে জহিরুল ইসলাম (১৫) সংসারের হাল ধরেছেন। দিনমজুরের কাজ করে কোনো মতে সংসার চালাতে পারলেও বসতঘরটি পুনরায় নির্মাণ করার সামর্থ্য নেই তাদের। ফলে বসতঘরটি ভেঙে নদীর পাড়েই রেখে দিয়েছেন।
সে আরো জানায়, সরকার ঘর দিচ্ছে আমি শুনেছি কিন্তু কোথায় ঘর চাইতে হবে আমি জানিনা। আমার ঘর ভেঙ্গে গেছে এলাকার ভোলা মেম্বারকে অনেক আগে জানাইছি।
এ ব্যাপারে টঙ্গীবাড়ী উপজেলা ভারপ্রাপ্ত প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলম জানান, দ্বীতিয় পর্যায়ে ঘর বিতরণ এক মাসের মধ্যে শুরু হবে। আসা করি যাদের ঘর নাই ইনশাআল্লাহ সবাই ঘর পাবেন।