টঙ্গীবাড়ীতে ইউপি সদস্যের কাছে দীর্ঘদিন ঘুরেও ঘর পায়নি শারীরিক প্রতিবন্ধী
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০২:৩৭ এএম, ৬ ফেব্রুয়ারী,শনিবার,২০২১ | আপডেট: ০৭:১৮ পিএম, ২৪ নভেম্বর,রবিবার,২০২৪
মুন্সীঞ্জের টঙ্গীবাড়ী উপজেলার রাউৎভোগ গ্রামে দীর্ঘদিন ইউপি সদস্যর পিছনে ঘুরেও একটি ঘর পায়নি প্রতিবন্ধী সিরাজ মোল্লা। তাই স্ত্রী সন্তান নিয়ে শীতের মধ্যে অতিকষ্টে জীবন যাপন করছে সে। দীর্ঘ কয়েক মাস ঘুরেও একটি ঘর না পেয়ে একদিকে যেমন রয়েছেন চরম হতাশায় অন্যদিকে শীত আর শিশিরের সাথে যুদ্ধ করে জীবন কাটছে ওই পরিবারের। সরেজমিনে উপজেলার রাউৎভোগ গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, ছোট একটি কুঁড়ে ঘরে সিরাজ মোল্লার বসবাস। শারীরিক প্রতিবন্ধী সিরাজ মোল্লার একটি হাত ছোট এবং উচ্চতায় সে সাড়ে ৩ ফুটের মতো। এছাড়া কানেও কম শোনেন তিনি। শারীরিক প্রতিবন্ধী হওয়ায় হালকা ধরনের কাজ করতে পারে সে।
বাবার পৈতৃক ওয়ারিশ সূত্রে ২ শতকের মতো ভিটে বাড়ি পেলেও চাষাবাদ যোগ্য কোন জমি নেই তার। পৈতৃক ওয়ারিশ সূত্রেপ্রাপ্ত কুঁড়ে ঘরটি তার এখন বসবাসের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। উপরের টিনের চাল ছিদ্র হয়ে সূর্য কিরণ এদিকে যেমন প্রবেশ করে অন্যদিকে এই শীতের দিনে সারারাত শিশির পরে তাতে মুখ কাথার বাহিরে রেখে ঘুমানোর উপায়ন্তর নাই। তাই কাথা মুড়ি দিয়েই ঘরের মধ্যে ঘুমাতে হয় ওই পরিবারের। এছাড়া কুঁড়ে ঘরের পাট খড়ি ও মূলি দিয়ে তৈরি বেড়াগুলো সংস্কারের অভাবে পচে খসে খসে পরে এখন বড় বড় ফুটোর সৃষ্টি হয়েছে। ওই ফুটোগুলোতে ছালার চট কেটে টানিয়ে রাখলেও একটু বাতাসে চটগুলো নড়ে গিয়ে অবলীলায় ঘরের মধ্যে শীতের হিমেল হাওয়া প্রবেশ করছে।
এ ব্যাপারে সিরাজ মোল্লার স্ত্রী সামজেলা বেগম জানান, ঘরের চাল দিয়ে শিশির পরায় ঘরের মধ্যে আমরা লেপ ও কাথা মুড়ি দিয়ে থাকি। চাল দিয়ে ওস পরে। আমাদের এলাকার মেম্বারকে অনেকদিন জানাইছি। সে গুরুত্ব দেয় নাই। আমি কয়েকমাস গেছি সে বলছে ঘর আসলে পাইবা শুধু এই টুকুই বলে আসছে। আমার কথার কোন গুরুত্ব দেয় নাই সে। সে আরো জানায়, বৃষ্টির দিন এলে বাইরে বৃষ্টি না পরতে ঘরে পরে আগে। ঘরের মধ্যে ঢুকে তাকালে দেখা যায় ওই ঘরের চাল ও বেড়া অধিকাংশই ফুটা। অন্ধকার ঘরটির মধ্যে ফুটা দিয়ে সূর্যের আলো অনায়াসে প্রবেশ করছে। তেমনি ওই সমস্ত ফুটো দিয়ে প্রবেশ করছে হিমেল হাওয়াও । সিরাজ মোল্লা জানান, আমি কামলা বদলি দিয়া খাই আমার কিছু নাই। আমি গরীব মানুষ আমার ঘর নাই। বৃষ্টি মেঘ আইলে বাইরের আগে ঘরে পরে পানি। বাইরে থেকে ফর্সা হয়ে যায় ঘর আমার আগে। অমি অসুবিধায় কষ্টে আছি। আপনাদের কাছে আমি একটা ঘর ভিক্ষা চাই। আমি মেম্বারের কাছে গেছি আমাকে ঘর দিবো কইয়া ঘর দিলো না অন্য মাইনষেরে ঘর দিল আমারে দিলো না। এ ব্যাপারে অভিযুক্ত ইউপি সদস্য কালাম পাইকের সাথে যোগাযোগ করা হলে সে জানায়, সিরাজ মোল্লা অসহায় লোক। তার ঘর নাই। ঘরের জন্য আমি চেয়ারম্যানের কাছে আবেদন করে রাখছি। এবার একটি ঘর আসলেও তাকে দেয়া হবে। এ ব্যাপারে টঙ্গীবাড়ী উপজেলা ভারপ্রাপ্ত প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলম জানান, সরকার বর্তমানে যাদের জমি নাই তাদের জমিসহ ঘর দিচ্ছে। কিছুদিন পরে যাদের ভিটা আছে ঘর নাই তাদেরও ঘর দেয়া হবে। খোঁজে নিয়ে ওই প্রতিবন্ধী যাতে ঘর পায় সেই ব্যবস্থা করা হবে।