টঙ্গীবাড়ীতে ইউপি সদস্যের কাছে দীর্ঘদিন ঘুরেও ঘর পায়নি প্রতিবন্ধি সিরাজ
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১০:৩৮ পিএম, ৫ ফেব্রুয়ারী,শুক্রবার,২০২১ | আপডেট: ০৪:৩৩ পিএম, ২১ নভেম্বর,বৃহস্পতিবার,২০২৪
মুন্সীঞ্জের টঙ্গীবাড়ী উপজেলার রাউৎভোগ গ্রামে দির্ঘদিন ইউপি সদস্যর পিছনে ঘুরেও একটি ঘর পায়নি প্রতিবন্ধী সিরাজ মোল্লা।
তাই স্ত্রী সন্তান নিয়ে শীতের মধ্যে অতি কষ্টে জীবন যাপন করছে সে। দীর্ঘ কয়েক মাস ঘুরেও একটি ঘর না পেয়ে একদিকে যেমন রয়েছেন চরম হতাশায় অন্যদিকে শীত আর শিশিরের সাথে যুদ্ধ করে জীবন কাটছে ওই পরিবারের।
সরেজমিনে উপজেলার রাউৎভোগ গ্রামে গিয়ে দেখা যায়,ছোট একটি কুড়ে ঘরে সিরাজ মোল্লার বসবাস। শারীরিক প্রতিবন্ধি সিরাজ মোল্লার একটি হাত ছোট এবং উচ্চতায় সে সাড়ে ৩ ফুটের মতো। এছাড়া কানেও কম শোনেন তিনি। শারীরিক প্রতিবন্ধি হওয়ায় হালকা ধরনের কাজ করতে পারে সে।
বাবার পৈতিক ওয়ারিশ সুত্রে ২ শতকের মতো ভিটে বাড়ি পেলেও চাষাবাদ যোগ্য কোন জমি নেই তার। পৈতিক ওয়ারিশ সুত্রে প্রাপ্ত কুড়ে ঘরটি তার এখন বসবাসের অযোগ্য হয়ে পরেছে। উপরের টিনের চাল ছিদ্র হয়ে সুর্য কিরন একদিকে যেমন প্রবেশ করে অন্যদিকে শীতের দিনে সারারাত শিশির পরে তাতে মুখ কাথার বাহিরে রেখে ঘুমানোর উপায়ান্তর নাই। তাই কাথা মুড়ি দিয়েই ঘরের মধ্যে ঘুমাতে হয় ওই পরিবারের।
এছাড়া কুড়ে ঘরের পাট খড়ি ও মুলি দিয়ে তৈরী বেড়াগুলো সংস্কারের অভাবে পচেঁ খসে খসে পড়ে বড় বড় ফুটোর সৃষ্টি হয়েছে। ওই ফুটোগুলোতে ছালার চট কেটে টাানিয়ে রাখলেও একটু বাতাসে চটগুলো নড়ে গিয়ে অবলিলায় ঘরের মধ্যে শীতের হিমেল হাওয়া প্রবেশ করছে। এ ব্যাপারে সিরাজ মোল্লার স্ত্রী সামজেলা বেগম জানান, ঘরের চাল দিয়ে শিশির পড়ায় ঘরের মধ্যে আমরা লেপ ও কাথা মুড়ি দিয়ে থাকি।
আমাদের এলাকার মেম্বারকে অনেকদিন যানাইছি। সে গুরুত্ব দেয় নাই। আমি কয়েকমাস গেছি সে বলছে ঘর আসলে পাইবা শুধু এই টুকুই বলে আসছে। আমার কথার কোন গুরুত্ব দেয় নাই সে। সে আরো জানায়, বৃষ্টির দিন এলে বাইরে বৃষ্টি না পড়লে ঘরে পরে আগে। ঘরের মধ্যে ঢুকেলে দেখা যায় ওই ঘরের চাল ও বেড়া অধিকাংশই ফুটা।
সিরাজ মোল্লা জানান, আমি কামলা বদলি দিয়া খাই আমার কিছু নাই। আমি গরীব মানুষ আমার ঘর নাই। বৃষ্টি মেঘ আইলে বাইরের আগে ঘরে পড়ে পানি। বাইরে থেকে ফর্সা হয়ে যায় ঘর আমার আগে। অমি অসুবিধায় কষ্টে আছি। আপনাদের কাছে আমি একটা ঘর ভিক্ষা চাই। আমি মেম্বারের কাছে গেছি আমাকে ঘর দিবো কইয়া ঘর দিলোনা অন্য মাইনষেরে ঘর দিল আমারে দিলোনা।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত ইউপি সদস্য কালাম পাইকের সাথে যোগাযোগ করা হলে সে জানায়, সিরাজ মোল্লা অসহায় লোক। তার ঘর নাই। ঘরের জন্য আমি চেয়ারম্যানের কাছে আবেদন করে রাখছি। এবার একটি ঘর আসলেও তাকে দেওয়া হবে। এ ব্যাপারে টঙ্গীবাড়ী উপজেলা ভারপ্রাপ্ত প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলম জানান, সরকার বর্তমানে যাদের জমি নাই তাদের জমিসহ ঘর দিচ্ছে। কিছুদিন পরে যাদের ভিটা আছে ঘর নাই তাদেরও ঘর দেওয়া হবে। খোঁজে নিয়ে ওই প্রতিবন্ধি যাতে ঘর পায় সেই ব্যবস্থা করা হবে।