কুষ্টিয়ায় ইট প্রস্তুত কারক মালিক সমিতি ও শ্রমিকদের মানববন্ধন শেষে স্বারকলিপি প্রদান
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৫:৪৫ পিএম, ৫ ফেব্রুয়ারী,শুক্রবার,২০২১ | আপডেট: ০৭:০৪ এএম, ২৩ নভেম্বর,শনিবার,২০২৪
খুলনা বিভাগে করানাকালীন সময়ে বিকল্প ব্যাবস্থা না রেখে শ্রমিক-মালিক স্বার্থকে উপেক্ষা করে পরিবেশ অধিদপ্তর কর্তৃক গণহারে ইটভাটা ভেঙ্গে দেওয়ার কারনে বেকার হয়েছে প্রায় কোটি খানেক ভাটা শ্রমিক।
স্বর্বস্ব পূঁজি হারিয়ে হাজারকোটি টাকার ব্যাংক লোন মাথায় নিয়ে রাতারাতি দেউলিয়া হয়েছেন কয়েক হাজার ভাটা মালিক। কাজ চলে যাওয়ায় অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়েছে কোটি শ্রমিকের জীবন। এ থেকে বাঁচতে প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্বারকলিপি প্রদান, মানববন্ধন ও সমাবেশ করেছে করেছে কুষ্টিয়া জেলা ইট প্রস্তুত কারক মালিক সমিতি ও শ্রমিকরা।
'কর্মচাই নয়লে ভাত চাই! এনজিও ঋনের বোঝা থেকে মুক্তি চাই, ইট ভাটা আইন-২০১৯ বাতিল চাই' এই শ্লোগান নিয়ে কুষ্টিয়া জেলার ছয়টি উপজেলার ইট ভাটা মালিক ও হাজার হাজার শ্রমিক অংশ গ্রহন করে।
গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে কুষ্টিয়া জেলা শেখ কামাল স্টেডিয়ামের সামনে মানববন্ধন শেষে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে গিয়ে সমাবেশে মিলিত হয়।
সমাবেশে বক্তব্য রাখেন জেলা ইট প্রস্তুত কারক মালিক সমিতির সভাপতি হাজী আক্তারুজ্জামান মিঠু, সাধারণ সম্পাদক জিয়াউর রহমান জিয়া, গণসংযোগ বিষয়ক সম্পাদক শাহীন আলী, সদস্য মহিদুল ইসলাম, ভেড়ামারা উপজেলা ইট প্রস্তুত কারক মালিক সমিতির সভাপতি আব্দুল হাফিজ তপন, সহ-সভাপতি হাসান বিন মাহাম্মুদ ঝন্টু, মিরপুর উপজেলা ইট প্রস্তুত কারক মালিক সমিতির সহ-সভাপতি হাজী নুরুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক হাজী আব্দুল মান্নান, দৌলতপুর উপজেলা ইট প্রস্তুত কারক মালিক সমিতির সভাপতি হাজী মোঃ রমজান আলী, সাধারণ সম্পাদক জহুরুল আলম, সদর উপজেলা ইট প্রস্তুত কারক মালিক সমিতির সভাপতি রুহুল আমিন আজম, খোকসা উপজেলা ইট প্রস্তুত কারক মালিক সমিতির সভাপতি মুন্সী লুৎফর রহমান, সাধারণ সম্পাদক আব্দুল কাদের জুয়েল প্রমূখ।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, খুলনা বিভাগের ১০ জেলায় বাংলাদেশের সর্বাধিক ইটের ভাটা রয়েছে। আর এই ভাটা ব্যাবসায় জড়িত রয়েছে কয়েক হাজার মালিক ও এক কোটির উপর শ্রমিক। হঠাৎ করেই কয়েকদিন যাবত কুষ্টিয়ার কয়েকটি ইট ভাটায় কোন বিকল্প ব্যবস্থার চিন্তা না করেই পরিবেশ আধিদপ্তর অভিযান পরিচালনা করে।
যে কারনে রাতারাতি বেকার হয়ে পড়েছে প্রায় কোটি খানেক শ্রমিক, আর স্বর্বস্ব হারিয়ে নিঃস্ব হয়েছেন কয়েক হাজার ভাটা মালিক। যে ভাটা গুলোতে এখনও অভিযান পরিচালিত হয়নি সেখানকার মালিক ও শ্রমিকরা দিন কাটাচ্ছেন নানা রকম অজানা শঙ্কায়।
ভাটা মালিকগণ বলেন, আমরা সরকারের সমস্ত শর্ত মানতে রাজি আছি, কিন্তু আমাদের কিছুটা সময় প্রয়োজন। ইটভাটা শিল্পের বর্তমান পরিস্থিতি থেকে উত্তরনের জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সদয় হস্তক্ষেপ কামনা করেন ভাটা মালিকগণ।
সমাবেশ শেষে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট সিরাজুল ইসলাম এর কাছে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বরাবর স্বারকলিপি প্রদান করেন নেতৃবৃন্দ।
উল্লেখ্য, খুলনা বিভাগের সকল জেলায় এক যোগে মানববন্ধন ও জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর বরাবর স্বারকলিপি প্রদান কর্মসূচী পালন করেন স্ব স্ব জেলার ইট ভাটা মালিক ও শ্রমিকগণ। জানা যায়, বিগত ২০০২ সালের পরিবেশ অধিদপ্তর কর্তৃক জারিকৃত পরিপত্র মোতাবেক সনাতন পদ্ধতির ড্রামের চিমনির পরিবর্তে পরিবেশ বান্ধব ১২০ ফিট উচচতা স্থায়ী চিমনী নির্মান করা হয়েছে।
বিগত ২০১৩ সালে পরিবেশ অধিদপ্তর কর্তৃক সংশোধিত আইন এর ৮(ঙ) ধারা পরিবর্তন করা হয়। এতে আইনি জটিলতা সৃষ্টি হয়। এতে ভাটার মালিকগণ চরম ক্ষতিগ্রস্থ হয় কারন তারা আর নিবন্ধন করতে পারে না। ভাটা বন্ধ হলে, সরকার প্রতি বছর ভ্যাট, আয়কর, স্থানীয় ভুমি উন্নয়ন করসহ প্রতি বছর ৫১ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব আয় থেকে বঞ্চিত হবে।