বহিরাগত ঠেকাতে সিএমপির কথার সাথে কাজে মিল ছিল না
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০২:২৯ এএম, ২৯ জানুয়ারী,শুক্রবার,২০২১ | আপডেট: ০৯:৫৫ পিএম, ৯ নভেম্বর,শনিবার,২০২৪
সংঘাতের মধ্য দিয়ে শেষ হলো চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক) নির্বাচনের ভোটগ্রহণ। শুরুতেই বিভিন্ন কেন্দ্রে অপ্রীতিকর ঘটনার ঘটে। ঝরেছে প্রাণ। সকালে তাই অনেক কেন্দ্রই ছিল ফাঁকা। অধিকাংশ কেন্দ্রে দেখা মিলেছে লাঠি হাতে ঘুরছে কিশোররা। তাদের বেশিরভাগই বহিরাগত বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
অথচ ভোটের দিন বহিরাগত ঠেকাতে জাতীয় পরিচয়পত্র ছাড়া কাউকেই অবস্থান ও প্রবেশ করতে না দেয়ার ঘোষণা দিয়েছিল নগর পুলিশ (সিএমপি)। কেন্দ্রে কেন্দ্রে বহিরাগতরা নিবির্ঘ্নে ঘুরে বেড়িয়ে সংঘাতে জড়ালেও পুলিশ যেন নির্বিকার।
নগরীর খুলশী থানার আমবাগানে বুধবার সকাল ১০টার দিকে নির্বাচনী সহিংসতায় একজন নিহতের ঘটনার পর পুলিশ অবশ্য কিছুটা কঠোর অবস্থানে গেছে। তবে যেসব এলাকায় সংঘাতের ঘটনা ঘটেনি সেগুলোতে কেন্দ্রের বাইরে সরকার দলীয় কর্মীদের জটলা। কেন্দ্রে ভোটারদের ঢুকতে না দেয়াই ছিল তাদের কাজ । অভিযোগ রয়েছে, বিএনপি প্রার্থীর এজেন্টদের সব কেন্দ্র থেকে বের করে দেয়া হয়েছে।
এর আগে নগরীর লালখান বাজারে ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের দুই কাউন্সিলর প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, আওয়ামী লীগ সমর্থিত কাউন্সিলর প্রার্থী আবুল হাসনাত বেলাল ও দলটির বিদ্রোহী কাউন্সিলর প্রার্থী এফআই কবির মানিকের সমর্থকদের মধ্যে এ ঘটনা ঘটে।
যদিও লালখান বাজারে ভোটকেন্দ্র পরিদর্শন করতে গিয়ে সিএমপি কমিশনার সালেহ মোহাম্মদ তানভীর বলেছেন, আমরা শুরু থেকে কঠোর অবস্থানে ছিলাম। এরপরও কয়েকটি বিছিন্ন ঘটনা ঘটেছে। আমাদের স্ট্রাইকিং ফোর্সের পাশাপাশি রিজার্ভ ফোর্সও মাঠে নামিয়ে দিয়েছি। হত্যাসহ নির্বাচনী সহিংসতায় যারাই জড়িত থাকবে তাদের বিন্দুমাত্র ছাড় দেয়া হবে না।
এর আগে মঙ্গলবার দুপুর ৩টার দিকে দামপাড়া পুলিশ লাইন্সে আয়োজিত ব্রিফিংয়ে সিএমপি কমিশনার বলেছিলেন, নির্বাচনের দিন সরকারি কর্মদিবস রয়েছে। অনেকে কর্মস্থলে যাবেন। তাদেরও জাতীয় পরিচয়পত্র সঙ্গে রাখার জন্য বলা হচ্ছে। ভোটকেন্দ্রে যারা আসবেন তারাও জাতীয় পরিচয়পত্র সঙ্গে নিয়ে আসবেন। আমরা বহিরাগত ঠেকাতে চাই। জানিয়ে দিতে চাই যাদের কাছে জাতীয় পরিচয়পত্র থাকবে, তাদের জন্য উৎসবমুখর হবে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচন। কিন্তু যাদের কাছে জাতীয় পরিচয়পত্র থাকবে না তাদের জন্য মানে বহিরাগতদের জন্য দ্বার বন্ধ। কোনো বহিরাগত এসে নির্বাচনে প্রভাব বিস্তার করতে পারবে না।
সিএমপির এই সিদ্ধান্তে ভোটার উপস্থিতি কম হওয়ার আশঙ্কা আছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, বহিরাগত ঠেকানোর একটা পথ হচ্ছে এনআইডি কার্ড। একজন ভোটারকে শনাক্ত করা যাবে তার এনআইডি কার্ডের মাধ্যমে। এই কার্ড যার কাছে থাকবে তিনি এখানকার সম্মানিত ভোটার। তবে বয়স্ক নারী কিংবা বৃদ্ধ লোককে আমরা এ জন্য আটকাবো না। আপনারা জানেন নির্বাচনে সাধারণত কারা শক্তি প্রদর্শন করে থাকে, তাদের জন্য এ বার্তা।
কিন্তু ভোটের দিন দেখা গেল না এসব বক্তব্যের সত্যতা। বহিরাগতদের আগমন নিয়ে মঙ্গলবার দৈনিক দিনকালে রিপোর্ট প্রকাশিতও হয়। ভোটের দিন দেখা যায় প্রতিকেন্দ্রে ২ থেকে ৩ শত কিশোর, যুবক। কিন্তু ভোট কেন্দ্রের ভিতর ছিল না কোন ভোটার। এখানে সব আইন ছিল শুধু বিএনপির জন্য।