ওবায়দুল কাদের সাহেব কীভাবে নিজের আত্মসম্মান বিকিয়ে দিলেন-কাদের মির্জার
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৯:৪৩ পিএম, ২৮ জানুয়ারী,বৃহস্পতিবার,২০২১ | আপডেট: ০২:২৭ এএম, ৩ নভেম্বর,রবিবার,২০২৪
নোয়াখালীর বসুরহাট পৌরসভার নবনির্বাচিত মেয়র আবদুল কাদের মির্জা তার ভাই সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের উদ্দেশে বলেছেন, আমরা কি রাজাকার পরিবার? ওবায়দুল কাদের সাহেব, আপনি কিভাবে সারেন্ডার করলেন? কিভাবে নিজের আত্মসম্মানকে বিকিয়ে দিলেন? আমি দেবো না। আমার আব্বা কি রাজাকার? ওবায়দুল কাদের সাহেব কিভাবে মানলেন? বলেন? এখন যদি আমরা বলি, কিভাবে বলি? বললে বলবে সংগঠন বিরোধী কার্যকলাপে লিপ্ত! ওবায়দুল কাদের বলেন, আমার পদ কি খাবি তুই? আপনি পদের জন্য আত্মসমর্পণ করেছেন।
গতকাল বুধবার রাতে কোম্পানীগঞ্জের বসুরহাট সরকারি মুজিব কলেজ মাঠে উপজেলা নাগরিক কমিটি আয়োজিত নাগরিক সংবর্ধনার অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
এসময় কাদের মির্জা দলের ঘোষণাপত্রের একটি ধারার বরাত দিয়ে বলেন, ঘোষণাপত্রে আমার বাক-ব্যাক্তি চিন্তা ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতা থাকবে। আমার ঘোষণাপত্র আমাকে অধিকার দিয়েছে উল্লেখ করে বলেন ‘বলতে পারবো না কেন?
তিনি বলেন, আপনারা ঢাকায় বসে বসে সেখানে তেল মালিশ করবেন? আর গ্রামের নেতারা সারাজীবন কষ্ট করবে। কিছু কিছু সুবিধাবাদী যারা তেল মারতে পারে, তারা আজকে সুবিধা আদায় করছে।
আবদুল কাদের মির্জা নোয়াখালী ৪ আসনের এমপি একরামুল করিম চৌধুরী প্রসঙ্গে বলেন, লাইভে এসে একরামুল করিম চৌধুরী কী বললেন? ওবায়দুল কাদেরের পরিবারে রাজাকার। আমার নানা এমএলএ ছিলেন। ৬৩ সালে তিনি মারা যান। তাহলে তিনি কিভাবে শান্তি কমিটির সদস্য হলেন? আমার বাবা নীতিনৈতিকতা নিয়ে শিক্ষকতা করেছেন। অনেক কষ্টে আমাদের একটি বড় পরিবার চালাতেন। আপনি (ওবায়দুল কাদের) বরদাস্ত করলেও আমি বরদাস্ত করতে পারবো না।
এক দফা এক দাবি, একরাম তুই কবে যাবি? আগামী রোববারের হরতালে একটা পাখিও উড়তে দেয়া হবে না। এসময় তিনি সবাইকে ঘর থেকে বেরিয়ে এই অপশাসন ও দুঃশাসনের বিরুদ্ধে, অপরাজনীতির বিরুদ্ধে কথা বলার আহবান জানান।
তিনি বলেন ‘আমার প্রয়োজন নেই, কোন ব্যক্তির কে আসলো কে আসলো না, ভার্চুয়াল প্রোগ্রাম দিয়ে যারা আসেনি, তারা তারা অপরাজনীতির কাছে আজকে মাথা নত করেছে। আমি তাদের ঘৃণা করি, ঘৃণা করি, ঘৃণা করি। অপরাজনীতির কাছে তারা আত্মসমর্পণ করেছে। আমার প্রয়োজন নেই কোনো নেতার। দল থেকে বহিস্কার করবেন? করে দেন। আমরা বঙ্গবন্ধুর কথা বলবো। আমরা শেখ হাসিনার উন্নয়নের কথা বলবো।’
আবদুল কাদের মির্জা বলেন, আজকে কষ্ট লাগে, আমি অপরাধী। আমি অপরাজনীতির বিরদ্ধে কথা বলেছি। আমি টেন্ডারবাজীর বিরুদ্ধে কথা বলেছি। আমি চাকরি বাণিজ্যের বিরুদ্ধে কথা বলেছি। আমি প্রশাসনের উপর প্রভাব খাটিয়ে অনিয়মের কথা বলেছি। আমি বলেছি অস্ত্রবাজীর বিরুদ্ধে, ভোট ডাকাতির বিরুদ্ধে। আমি বলেছি আমার ভোট আমি দেবো যাকে ইচ্ছা তাকে দেবো। এই কথাগুলোর জন্য আমাকে কেউ কেউ অপরাধী মনে করে। কিন্তু কি অপরাধ করেছে আমার ভোটারেরা? আজকে আমাদের নেতা দায়সারাগোছের মত আমাকে অভিনন্দন জানিয়েছে। ধন্যবাদ জানিয়েছে।
তিনি বলেন, পাঁচ শতাংশ ভোটও বিগত নির্বাচনগুলোতে সংগৃহিত হয়নি। আমি সেই ভোটবিমূখ ভোটারদেরকে কেন্দ্রে আনার জন্য অনেক কথা বলেছি, সর্বশেষ আমি বলেছি, ভোটের দিন যদি আমি অনিয়মের ভোটের সাথে থাকি তাহলে আল্লাহ যেন সেদিন আমার মৃত্যু দেয়। এই কথা বলার পর আমার ভোটাররা, ভোটের লাইনে দাঁড়িয়েছে। ৪টার পরও অনেক মহিলা ছিলো কেন্দ্রে। স্বত:স্ফুর্ত নির্বাচন, আমার মনে হয় বাংলাদেশের ইতিহাসে এটাই প্রথম, এটা আমার কথা নয়। এটা আমাদের মিডিয়া কর্মীদের কথা। তারাই বলেছে।
আবদুল কাদের মির্জা বলেন, আমাদের দল থেকে অভিনন্দন জানালেন না। কী অপরাধ করেছে আমার ভোটারেরা, তাদেরকে একটা অভিনন্দন জানালেন না! কোম্পানীগঞ্জ ৫০০ ও কবিরহাটের ৫০০ বেকারদের চাকরি না দেয়া হলে আন্দোলন গড়ে তোলা হবে। আমার গ্যাস আমাকে না দিয়ে অন্য এলাকায় দেয়া হচ্ছে। আমরা পাইনি। প্রতিশ্রুতির পরও। আগামী তিন মাসের মধ্যে যদি আমাদের গ্যাস দেয়া না হয় তাহলে জাতীয় গ্রীডে আর গ্যাস যাবে না।
নাগরিক সংবর্ধনা কমিটির সভাপতি ও কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ সাহাব উদ্দিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন, উপজেলা আওয়ামী লীগ খিজির হায়াত খান, সাধারণ সম্পাদক নুরনবী চৌধুরী, সিনিয়র সহসভাপতি ইস্কান্দার বাবুল যুবলীগ, ছাত্রলীগ, স্বেচ্ছাসেবকলীগ, কৃষকলীগ, শ্রমিকলীগের নেতৃবৃন্দ।