শেখ হাসিনার গাড়িবহরে হামলার রায় ৪ ফেব্রুয়ারি, বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা হাবিবসহ ৩৪ জনের জামিন বাতিল
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৩:০২ এএম, ২৮ জানুয়ারী,বৃহস্পতিবার,২০২১ | আপডেট: ০৮:০৫ এএম, ২০ নভেম্বর,
বুধবার,২০২৪
সাতক্ষীরার কলারোয়ায় ২০০২ সালের ৩০ আগস্ট তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেতা বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গাড়িবহরে হামলার মামলায় তালা-কলারোয়া আসনের সাবেক দুইবারের সংসদ সদস্য বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা হাবিবুল ইসলাম হাবিবসহ ৩৪ জনের জামিন বাতিল করেছেন আদালত।
আজ বুধবার সাতক্ষীরার চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট হুমায়ুন কবিরের আদালত তাদের জামিন বাতিল করে জেলহাজতে পাঠাবার নির্দেশ দেন। আগামী ৪ ফেব্রুয়ারি এ মামলার রায় ঘোষণা করা হবে বলে আদালত সূত্রে জানা গেছে।
মামলা সূত্রে জানা যায়, জামিন বাতিল হওয়া অন্যদের মধ্যে রয়েছেন কলারোয়ার দুইবারের সাবেক মেয়র বিএনপি নেতা আক্তারুল ইসলাম, সাতক্ষীরা আইনজীবী সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. আব্দুস সাত্তার, সুপ্রিম কোর্টের অ্যাড. আব্দুস সামাদ, তিনজন সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আশরাফ হোসেন, রকিবুল ইসলাম ও রবিউল ইসলাম এবং বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনসমূহের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মী।
এ মামলায় অভিযুক্ত ৫০ জন আসামির একজন টাইগার খোকন অন্য মামলায় জেলহাজতে আটক রয়েছে। পলাতক রয়েছে সাবেক কাউন্সিলর আব্দুল কাদের বাচ্চুসহ ১৫ জন। এর আগে ষষ্ঠ দিনের মতো রাষ্ট্রপক্ষ ও আসামিপক্ষে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করা হয়। এতে রাষ্ট্রপক্ষে অংশ নেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল এসএম মুনীর, সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল শাহীন মৃধা এবং সাতক্ষীরার পিপি অ্যাড. আব্দুল লতিফ। অপরদিকে আসামিপক্ষে অংশ নেন অ্যাড. শাহানারা আক্তার বকুল, অ্যাড. আব্দুল মজিদ, অ্যাড. মিজানুর রহমান পিন্টু, অ্যাড. আব্দুস সেলিম, অ্যাড. তোজাম্মেল হোসেন প্রমুখ।
সরকার পক্ষের আইনজীবী এস এম মুনীর আদালতে ২০ জন সাক্ষীর জবানবন্দি তুলে ধরে বলেন, সাক্ষীদের বক্তব্যে সকল আসামি দোষী প্রমাণিত হয়েছে। তিনি আরো বলেন, ন্যায়বিচার হলে সকল আসামি সর্বোচ্চ শাস্তি পাবেন। অপরদিকে বিবাদীপক্ষের আইনজীবী অ্যাড. শাহানারা আক্তার বকুল ও অ্যাড. আব্দুল মজিদ বলেন, মামলার এজাহার, পুলিশের অভিযোগপত্র এবং সাক্ষীদের জবানবন্দির মধ্যে তথ্যগত ব্যাপক গরমিল ও অসংলগ্নতা রয়েছে। সাক্ষীরা কোনোভাবেই আসামিদের দোষী প্রমাণ করতে পারেননি।
তারা আরও বলেন, ঘটনার দিন সাবেক দুইবারের সংসদ সদস্য হাবিবুল ইসলাম হাবিব কলারোয়ায় উপস্থিত ছিলেন এমন কোনো প্রমাণও তারা খাড়া করতে পারেননি। সাক্ষীরা বলেছেন হাবিবুল ইসলামের পরামর্শ ও নির্দেশে তার অনুসারীরা এই হামলা চালায়। তারা আরও বলেন, ন্যায়বিচার হলে সকল আসামি খালাস পাবেন।
উল্লেখ্য, তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেতা বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কলারোয়ায় পৌঁছালে তার গাড়িবহরে কথিত হামলার ঘটনা ঘটে। এতে তিনি প্রাণে রক্ষা পেলেও তার সফরসঙ্গী জেলা আওয়ামী লীগের আহবায়ক ইঞ্জিনিয়ার শেখ মুজিবুর রহমান, কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ নেতা ফাতেমা জামান সাথী, আব্দুল মতিন, জোবায়দুল হক রাসেল এবং শহীদুল হক জীবনসহ অনেকেই আহত হন।
এ ঘটনায় কলারোয়া মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মোঃ মোসলেমউদ্দিন ২৭ জনকে আসামি করে একটি মামলা করেন। এ মামলা থানায় রেকর্ড না হওয়ায় তিনি নালিশী আদালত সাতক্ষীরায় মামলাটি করেন। পরবর্তীতে এ মামলা খারিজ হয়ে গেলে ২০১৪ সালের ১৫ অক্টোবর ফের মামলাটি পুনরুজ্জীবিত হয়। এসময় তদন্তকারী কর্মকর্তা সাবেক সংসদ সদস্য হাবিবুল ইসলাম হাবিবসহ ৫০ জনের বিরুদ্ধে চাজর্শিট দেন।