রংপুর নগরীতে উচ্ছেদ অভিযানে গিয়ে যুবলীগের হাতে ম্যাজিস্ট্রেট অবরুদ্ধ-লাঞ্ছিত
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০২:২৩ এএম, ২৮ জানুয়ারী,বৃহস্পতিবার,২০২১ | আপডেট: ০৫:২৪ পিএম, ১৯ নভেম্বর,মঙ্গলবার,২০২৪
রংপুর মহানগরীর রবার্টসন্স গঞ্জে অবৈধ পাথর ও বালুর স্থাপনা উচ্ছেদ করতে গিয়ে সিটি করপোরেশনের ম্যাজিস্ট্রেটসহ পুলিশ ও কয়েক কর্মকর্তা অবরুদ্ধ ও লাঞ্ছিত হয়েছেন। এক ঘন্টা অবরুদ্ধ থাকার পর অতিরিক্ত পুলিশ গিয়ে তাদের উদ্ধার করে। এ ঘটনায় জেলা যুবলীগের যুগ্ম আহবায়কসহ তার বাহিনীকে অভিযুক্ত করে মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার, বিভাগীয় কমিশনারকে লিখিতভাবে জানিয়েছে সিটি করপোরেশন। চলছে মামলার প্রস্তুতি।
হামলার শিকার রংপুর সিটি করপোরেশনের ম্যাজিস্ট্রেট ফিরুজুল ইসলাম জানান, মঙ্গলবার বিকেল ৩টায় পুলিশ, সিটি করপোরেশনের সার্ভেয়ারসহ নগরীর ২৬ নং ওয়ার্ডের রবার্টসন্সগঞ্জ এলাকায় মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করি। এ সময় রাস্তার ওপর একটি বড় ট্রাকে করে নির্মাণ সামগ্রী পাথর বালু ফেলতে দেখতে পাই। এ সময় সিটি করপোরেশনের আইন ২০০৯ অনুযায়ী জরিমানা করার সময় অতর্কিতভাবে রংপুর জেলা যুবলীগের যুগ্ম সম্পাদক কামরুজ্জামান শাহীন, শেখ শাহজাহান আলম সঞ্জু ও মো: ফিরোজ ৪০/৫০ জন লোক এসে আমার মোবাইল কোর্ট কার্যক্রমকে চ্যালেঞ্জ করে।
এ সময় তারা আমাকেসহ আমার টিমে থাকা সকল সদস্যকে অকথ্য ভাষায় গালিগালজ করে এবং সার্ভেয়ারকে লাথি মারে ও মেরে ফেলার হুমকি দেয়। এক পর্যায়ে শাহীন ও সঞ্জু তার সন্ত্রাসী বাহিনীদের মোবাইল কোর্টের গাড়ি ভাঙচুরের নির্দেশ দেয়। এছাড়াও তারা আমার এবং আমার সাথে থাকা ফোর্সের ওপর চড়াও হয়ে একটি মাইক্রোবাস দিয়ে আমাদের অবরুদ্ধ করে রাখে। তারা সিটি মেয়র, প্যানেল মেয়র মাহমুদুর রহমান এবং সম্পত্তি কর্মকর্তা মাসুদ কবির বকশির নাম উল্লেখ করে গালিগালাজ করতে থাকে।
এ সময় শাহজাহান আলম সঞ্জু আমাকে তার ডিজিএফআইয়ে কর্মরত আত্মীয়কে দিয়ে স্ট্যান্ড রিলিজ করার হুমকি দেয়। বিষয়টি আমি সাথে সাথে সিটি মেয়র, জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাকে অবহিত করি। এ সময় শাহীন ও সঞ্জু সরকারি কাজে বাধা প্রদান করতেই থাকে। পরে অতিরিক্ত পুলিশ ফোর্স আসলে পরিস্থিতি শান্ত হয় এবং মোবাইল টিম ঘটনাস্থল ত্যাগ করে।
এ বিষয়ে রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মোহাঃ আব্দুল আলীম মাহমুদ জানান, এ বিষয়ে সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এদিকে এ ঘটনায় সিটি করপোরশনে তোলপাড় চলছে। বিষয়টি জানিয়ে ডিসি, বিভাগীয় কমিশনার, মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনারসহ বিভিন্ন দফতরে লিখিতভাবে অবহিত করেছে সিটি কর্তৃপক্ষ।
প্যানেল ‘ল’ ইয়ার অ্যাডভোকেট সৈয়দ ফারুক আলম জানান, বিষয়টি মেয়র মহোদয় মেট্রোপলিটন কমিশনারকে লিখিতভাবে অবহিত করেছেন। এ ঘটনায় মামলা দায়েরের প্রস্তুত চলছে।
সিটি মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা জানান, দলীয় পরিচয়ধারী সন্ত্রাসীরা সিটি করপোরেশনের আইনানুগ কাজে বাধা দেয়ার ঘটনায় আমরা বিস্মিত হতবাক হয়েছি। বিষয়টি আমরা বিভাগীয় এবং মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনারকে জানিয়েছি। মামলার প্রস্তুতি চলছে। দ্রুত সন্ত্রাসীদের গ্রেফতারের দাবি জানাচ্ছি আমরা। উচ্ছেদ অভিযানে আর কেউ বাধা তৈরি করলে সিটি করপোরেশন কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে বাধ্য হবে।