বগুড়ায় গ্রাম্য পুলিশে চাকরি দেওয়ার নামে টাকা আত্মসাৎ, ভুক্তভোগীর সংবাদ সম্মেলন
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৯:০০ পিএম, ২৬ জানুয়ারী,মঙ্গলবার,২০২১ | আপডেট: ০৭:৫২ এএম, ২৪ নভেম্বর,রবিবার,২০২৪
বগুড়ার শেরপুরে গ্রাম পুলিশে চাকরি দেওয়ার নামে টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে উপজেলার গাড়ীদহ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান দবির উদ্দীনের বিরুদ্ধে। একই ইউনিয়নে কর্মরত গ্রাম পুলিশ জহুরুল ইসলামের স্ত্রী মরিয়ম বেগমকে এই চাকরি দেওয়ার কথা বলে দেড় লাখ টাকা আত্মসাত করেন তিনি।
এছাড়া চেয়াম্যানের নির্দেশে জন্মসনদ তৈরী ও জাতীয় পরিচয়পত্রে বয়স কমানোর জন্য উদ্যোক্তা মিজানুর রহমান ও সরকারি দপ্তর ম্যানেজ করতে শেরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ের অফিস সহকারি সেকেন্দার আলীকেও টাকা দিয়েছেন ওই নারী। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয়নি। শুধু নানা অজুহাত দেখিয়ে সময়ক্ষেপন করা হয়। একপর্যায়ে চেয়ারম্যানসহ ওই চক্রটির প্রতারণার বিষয়টি বুঝতে পারেন ভুক্তভোগী।
তাই ঘটনাটি জানিয়ে প্রতারণার শিকার ভুক্তভোগী ওই নারী গতকাল সোমবার (২৫জানুয়ারি) দুপুরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নিকট একটি লিখিত অভিযোগ দেন। সেইসঙ্গে শেরপুর প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে ন্যায় বিচার প্রার্থনাও করেন তিনি।
অভিযোগে জানা যায়, উপজেলার গাড়ীদহ ইউনিয়নের চন্ডিজান গ্রামের বাসিন্দা জহুরুল ইসলাম। একই ইউনিয়নে গ্রাম পুলিশ পদে চাকরি করেন। সেই সুবাদে চেয়ারম্যান দবির উদ্দীন তাকে নানা প্রলোভন দেখান। বিশেষ করে তার স্ত্রী মরিয়ম বেগমকে পরিষদে চাকরি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন। তবে চাকরি পেতে প্রয়োজন মাফিক খরচের টাকা সংগ্রহ করতে তাকে বলা হয়। এরইমধ্যে গাড়ীদহ ইউনিয়নে আয়া পদে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়। সে অনুযায়ী বেশ কয়েকজন চাকরি প্রার্থীর মধ্যে মরিয়ম বেগমকে আয়া পদে নিয়োগপত্র দেওয়া হয়। কিন্তু পরবর্তীতে সেটি ভুয়া হিসেবে প্রমাণিত হয়। এরপর তাকে গ্রাম পুলিশে চাকরি দেওয়ার কথা বলে টাকা নেন ওই চেয়ারম্যান।
ভুক্তভোগী মরিয়ম বেগম অভিযোগ করে বলেন, বিগত ২০১৯ সালের জুনে প্রথমে আয়া পদে ভুয়া নিয়োগ দেওয়া হয়। কিন্তু অল্প সময়ের মধ্যেই বিষয়টি ধরা পড়ে। তবে গাড়ীদহ ইউনিয়নে গ্রাম পুলিশে চাকরি দেওয়ার কথা বলেন চেয়ারম্যান দবির উদ্দীন। এজন্য তিনি নিজে দেড় লাখ টাকা নেন। আর তার নির্দেশে জন্মসনদ ও জাতীয় পরিচয়পত্রে জালিয়াতির মাধ্যমে বয়স কমাতে হবে এজন্য উদ্যোক্তা মিজানুর রহমানকে বিশ হাজার টাকা ও সরকারি দপ্তর ম্যানেজ করতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে অফিস সহকারি সেকেন্দার আলীকে দশ হাজার টাকা দেন।
এরপর দীর্ঘসময় পার হলেও তাকে চাকরি না দিয়ে শুধু তালবাহানা করা হচ্ছে। এমনকি বিষয়টি সম্পর্কে জানতে চাইলেও কোনো সদুত্তর দিচ্ছেন না। সেইসঙ্গে টাকাও ফেরত দিচ্ছেন না। এ অবস্থায় দিশেহারা হয়ে পড়েছেন বলে জানান তিনি।
উপজেলার গাড়ীদহ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান দবির উদ্দীনের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি অস্বীকার করে বলেন, চাকরি দেওয়ার কথা বলে তিনি কোনো টাকা নেননি। এছাড়া বেশকিছুদিন ধরেই ওই মহিলা এসব অভিযোগ করে আসছেন। কিন্তু তিনি কোনো প্রমাণ দেখাতে পারেননি। এদিকে উদ্যোক্তা মিজানুর রহমানের ফোন বন্ধ থাকায় তার বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ের অফিস সহকারি সেকেন্দার আলীর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি এসব অভিযোগ সম্পুর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন বলে উঁড়িয়ে দেন।
জানতে চাইলে শেরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা লিয়াকত আলী সেখ অভিযোগ পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, অভিযোগটি গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত করে দেখা হবে। তদন্তে দোষী প্রমাণিত হলে আইন অনুযায়ী অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।