সিরাজগঞ্জ পৌর সভার বিজয়ী কাউন্সিলর তরিকুলের হত্যাকারী আটক
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৮:৩০ পিএম, ২২ জানুয়ারী,শুক্রবার,২০২১ | আপডেট: ০৬:৪১ এএম, ১৭ নভেম্বর,রবিবার,২০২৪
সিরাজগঞ্জে চাঞ্চল্যকর বিজয়ী কাউন্সিলর তরিকুল ইসলাম খানের হত্যাকারী জাহিদুল ইসলাম (২০) কে গ্রেফতার করেছে সদর থানা পুলিশ।
হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত ছুরিটি আজ শুক্রবার সকালে সাহেদনগর ব্যাপারীপাড়া এলাকার মোকছেদের বাড়ীর পাশে পরিত্যাক্ত ডোবায় পশ্চিম পাড়ে মাটিতে পোতা অবস্থায় উদ্ধার করা হয়।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে ঢাকা মহানগর পুলিশের সহযোগিতায় ঢাকার যাত্রাবাড়ী থানার ধলপুর এলাকা থেকে জাহিদকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃত জাহিদুল ইসলাম শহরের সাহেদনগর ব্যাপারীপাড়া এলাকার টিক্কা ব্যাপারী ছেলে। শুক্রবার সকালে সিরাজগঞ্জ সদর থানা চত্বরে এক সংবাদ সম্মেলনে একথা জানান পুলিশ সুপার হাসিবুল আলম বিপিএম।
সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার আরও জানান, গ্রেফতারের পর জিজ্ঞাসাবাদে জাহিদুল ইসলাম জানায়, সে উট পাখি প্রতীকের প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী শাহাদত হোসেন বুদ্ধিনের সমর্থক।
নির্বাচনের তিনদিন আগে নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নেয়ার জন্য জাহিদুল ইসলাম ঢাকা থেকে সাহেদনগর ব্যাপারীপাড়াস্থ নিজবাড়িতে আসে।
এরপর দুইদিন নির্বাচনী প্রচারে সে অংশ নেয়। নির্বাচনের আগের দিন রাতে এক আসামীর বাড়িতে তাঁর উপস্থিতিতে এজাহার নামীয় ও অন্যান্য আসামীরা নির্বাচনের প্রতিদ্বন্দ্বি প্রার্থী তরিকুল ইসলাম খানের উপর হামলার পরিকল্পনা করে। সেই পরিকল্পনা অনুযায়ী এজাহার নামীয় একজন আসামী তাকে হত্যায় ব্যবহ্নত ছুরিটি দেয়।
ফলাফল ঘোষণার সময় অন্যান্য আসামীদের সাথে জাহিদুলও ছুরি নিয়ে শহীদগঞ্জ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে প্রার্থী বুদ্ধিন ও তার সমর্থকদের সাথে উপস্থিত হয়।
সন্ধ্যা ৭টার কিছু আগে ফলাফল ঘোষণায় ডালিম প্রতীক ৮৫ ভোটে তরিকুল ইসলামকে বিজয়ী ঘোষণা করে। এরপরই পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী অন্যান্য আসামীদের সহযোগিতায় জাহিদুল তরিকুলের পেটে ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যায়। এরপর হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত ছুরিটি তার বাড়ির পশ্চিম পাশের পরিত্যাক্ত ডোবায় পুতে রেখে স্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে ঢাকার যাত্রাবাড়ি থানার ধলপুর এলাকার ভাড়া বাসায় চলে যায় জাহিদুল ইসলাম।
জবানবন্দিতে এজাহার নামীয় কয়েকজন আসামী ছাড়াও অজ্ঞাতনামা বেশ কয়েকজন আসামীর নাম স্বীকার করেছে জাহিদুল ইসলাম।
এ হত্যাকান্ডে জড়িত অন্যান্য আসামীদের গ্রেফতারে পুলিশের কয়েকটি টিম তৎপর রয়েছে।
প্রসঙ্গত, ১৬ জানুয়ারি সিরাজগঞ্জ পৌরসভার ৬নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পদে ভোট গণনায় ৮৫ ভোটে বিজয়ী হন তরিকুল ইসলাম। ফলাফল ঘোষণা হওয়ার পরপরই পরাজিত প্রার্থী শাহাদত হোসেন বুদ্দিনের সমর্থকগণ বিজয়ী প্রার্থীদের উপর হামলায় চালায়। এ সময় পরাজিত প্রার্থীর সমর্থকদের ধারালো অস্ত্রের আঘাতে বিজয়ী কাউন্সিলর তরিকুল গুরুতর আহত হন। ওইদিন রাত ৮টার দিকে শহরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়।
পরদিন রোববার (১৭ জানুয়ারী) রাতে নিহতের ছেলে একরামুল হক হৃদয় বাদী হয়ে পরাজিত প্রার্থী ৬নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক শাহাদত হোসেন বুদ্দিনকে প্রধান আসামী করে ৩২ জনের নাম উল্লেখ করে আজ্ঞাত আরো ৪০/৫০ জনকে আসামী করে থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। এ ঘটনায় এ মামলার ২৭নং আসামী স্বপন ব্যাপারীকে গ্রেফতারে করে জেলাহাজতে প্রেরণ করা হয়।