কারাগারে বন্দির সংখ্যা ৮২ হাজার ৬৫৪ জন
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০১:২৩ এএম, ২২ জানুয়ারী,শুক্রবার,২০২১ | আপডেট: ১২:১২ এএম, ২১ নভেম্বর,বৃহস্পতিবার,২০২৪
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, বর্তমানে দেশের বিভিন্ন কারাগারে ৮২ হাজার ৬৫৪ জন বন্দি আটক আছে। তাদের মধ্যে পুরুষ ৭৯ হাজার ৪৫৪ ও নারী তিন হাজার ২০০ জন।
আজ বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে নোয়াখালী-৩ আসনের মামুনুর রশীদ কিরনের প্রশ্নের জবাবে এতথ্য জানান তিনি।
তিনি জানান, বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) হাতে বাংলাদেশি নাগরিকদের হত্যা/আহত/আটক ইত্যাদি বিষয়ে প্রতিনিয়ত বিজিবি ও বিএসএফ-এর বিভিন্ন পর্যায়ে পতাকা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এসব পতাকা বৈঠকে সীমান্তের বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে আলোচনা ও সমাধানের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়ে থাকে। পাশাপাশি কূটনৈতিক পর্যায়েও ব্যবস্থা নেয়া হয়। এসব কারণে সীমান্ত অপরাধসহ চোরাচালান আশাতীতভাবে হ্রাস করা সম্ভব হয়েছে। সীমান্তে শান্তি-শৃঙ্খলা বিরাজ করছে। গতকাল বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদের একাদশ অধিবেশনে সংসদ সদস্য মশিউর রহমান রাঙার প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন মন্ত্রী।
মানবাধিকার সংস্থার মতে, ২০০০-২০১৯ সালের মধ্যে বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে কমপক্ষে ১ হাজার ১৮৫ জন বাংলাদেশিকে গুলি বা নির্যাতন করে হত্যা করেছে বিএসএফ। গত ১০ বছরের তুলনায় ২০২০ সালে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) হাতে সর্বাধিক বাংলাদেশি নাগরিক হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটেছে। যদিও দিল্লি প্রতিবার আশ্বাস দিয়ে এসেছে, এই হত্যাকান্ড শূন্যে নামানো হবে। কিন্তু ২০০১ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ১ ডিসেম্বরের মধ্যে সীমান্তবর্তী অঞ্চলে কমপক্ষে ৪৫ জন বাংলাদেশি নাগরিককে গুলি বা নির্যাতন করে হত্যা করে বিএসএফ। ২০১০ সালের পর সীমান্ত হত্যা কমতে শুরু করেছিল। পরে সেটি আবার বেড়ে যায়। ২০১৯ সালে বিএসএফের গুলি বা নির্যাতনে সর্বাধিক ৪৩ জনের মৃত্যু হয় বলে মানবাধিকার সংস্থার প্রতিবেদনে উঠে আসে।
সংসদে এ সংক্রান্ত প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, সাম্প্রতিককালে সীমান্ত এলাকার জনগণের মধ্যে ও দুই দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর সদস্যদের মধ্যে কনফিডেন্স বিল্ডিংয়ের নানা উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে যা সীমান্ত উত্তেজনা প্রশমনে সহায়ক। টহল কার্যক্রমের পাশাপাশি অবৈধভাবে যাতে কেউ শূন্য লাইন অতিক্রম না করতে পারে সে ব্যাপারে সীমান্তবর্তী এলাকায় চেয়ারম্যান, মেম্বার ও গণ্যমান্য ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে সীমান্তে বসবাসরত জনসাধারণের মাঝে বিজিবি নিয়মিতভাবে প্রেষণা প্রদান করছে। তবে জনসচেতনতা বৃদ্ধির পাশাপাশি সীমান্ত এলাকায় আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের যথেষ্ট অবকাশ রয়েছে বলে প্রতীয়মান। সীমান্তে বিএসএফ বা ভারতীয় নাগরিকের দ্বারা বাংলাদেশি নাগরিক হত্যা বন্ধের বিষয়ে বিজিবি সর্বাত্মক প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে এবং সরকার এ ব্যাপারে কূটনৈতিক পর্যায়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করছে।
তিনি বলেন, ২০১০ সালের গত ২২ থেকে ২৬ ডিসেম্বর ভারতে অনুষ্ঠিত বিজিবি-বিএসএফ মহাপরিচালক পর্যায়ে সীমান্ত সম্মেলনে সীমান্ত হত্যাকে শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনার ব্যাপারে বিএসএফ একমত পোষণ করেছিল। সীমান্ত হত্যাসহ অন্যান্য আন্তঃসীমান্ত অপরাধ শূন্যের কোঠায় আনার নিমিত্তে চলতি বছরের ১ জানুয়ারি হতে বিজিবি-বিএসএফ রাত্রিকালীন যৌথ টহল পরিচালনা করছে। এছাড়াও সীমান্ত এলাকা নজরদারিতে রাখার জন্য বিজিবি ইউনিটগুলো সার্বক্ষণিক টহল পরিচালনা করছে।
সীমান্ত এলাকায় বিজিবি ও বিএসএফ-এর মধ্যে ঝুঁকিপূর্ণ সীমান্ত এলাকা চিহ্নিত করে সেসব স্থানগুলো সমন্বিত টহল কার্যক্রমের মাধ্যমে সার্বক্ষণিক নজরদারিতে রাখা হচ্ছে। এক বিওপি থেকে পার্শ্ববর্তী বিওপির মধ্যবর্তী দূরত্ব কমানোর জন্য ১২৮টি বর্ডার সেন্ট্রি পোস্ট (বিএসপি) নির্মাণ করা হয়েছে। এছাড়া বিজিবির দ্বারা সীমান্ত এলাকায় সার্ভেলেন্স সিস্টেম স্থাপনের জন্য ৩২৮ কি.মি. স্পর্শকাতর এলাকা চিহ্নিত করা হয়েছে।