আমতলীতে মিথ্যা যৌতুক মামলার স্বীকার হয়ে পথে বসেছে ৩টি পরিবার
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১২:৫৮ এএম, ২০ জানুয়ারী,
বুধবার,২০২১ | আপডেট: ০৭:৪৯ পিএম, ২২ নভেম্বর,শুক্রবার,২০২৪
বরগুনার আমতলীতে মিথ্যা যৌতুক মামলার স্বীকার হয়ে ৩টি পরিবার পথে বসেছে। মিথ্যা মামলার স্বীকার আমতলী উপজেলার কালিবাড়ী গ্রামের আঃ খালেক এর পুত্র নান্নু মিয়া (৩৮)।
তিনি জানান’ তার সাথে একই গ্রামের আবু তালেব মাতুব্বরের কন্যা নাজিরা আক্তার (৩৩) এর সাথে ২০০২ সালে বিবাহ হয়। তারা উভয় মামাতো ফুফাতো ভাই-বোন। বিবাহের ১২ বছর পর তাদের একটি ছেলে আরিয়ান ইসলাম আহাত জন্ম নেয়। বিবাহের পর থেকেই নান্নু মিয়ার স্ত্রী নাজিরা তার নিজ বাড়ী ছেড়ে স্বামীর বাড়িতে থাকেন নি। নান্নু মিয়া ডাচ বাংলা ব্যাংকে কর্মরত থাকায় তিনি মানিকগঞ্জ জেলার সিংগাইর থানায় বসবাস করেন।
নান্নু মিয়া চাকুরী জীবনে যত টাকা আয় করেছেন তার স্ত্রীর কাছেই গচ্ছিত রাখত। প্রেম করে বিয়ে করায় স্ত্রী নাজিরাকে নান্নুর বাবা-মা মেনে নিতে পারেনি। জমি নিয়েও উভয় পরিবারের মাঝে দীর্ঘদিন যাবৎ বিরোধ চলে আসছিল।
জমা-জমি নিয়ে বিরোধের জের হিসেবে সম্প্রতি নান্নুর সৎ চাচা সাইদুল হক সাত্তার আকন মহিষকাটা বাজারে অবস্থিত নান্নু মিয়ার দোকান ঘরে নান্নুকে না জানিয়ে মালামাল রাখে। নান্নু তার চাচাকে দোকানের মাল সরিয়ে নিতে বললে, সে জোড় করে দোকান ঘর দখলের উদ্দেশ্যে মালামাল সরিয়ে নেয় নি। নান্নু তার দোকান এর দখল ঠিক রাখার জন্য দোকানে তালা লাগিয়ে দেয়।
এ নিয়ে দ্বন্দ্ব শুরু হলে গত ২৫/০৫/২০২০ ইং তারিখে নান্নুর সৎ চাচা আঃ ছত্তার আকন ও নুরুল হক আকন তাদের ছেলেদের নিয়ে নান্নুদের বাড়িতে ঢুকে রামদা,ছেনা, লোহার রড, লাঠি সোটা নিয়ে নান্নু, নান্নুর বাবা আঃ খালেক আকন, নান্নুর মা পরিভানুসহ বাড়ির অন্যান্য লোকদের মারধর করে গুরুতর আহত করে। গুরুতর আহত অবস্থায় তাদের কে পটুয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। নান্নুর বাবা মা ,নান্নু চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে থাকাকালীন বাড়ি ফাকা পেয়ে পুকুরের মাছ, একটি টমটম , ১টি গরু, ঘরে থাকা টাকা নিয়ে যায় বলে জানায় নান্নু।
এ ব্যাপারে নান্নুর মা পরিভানু বাদী হয়ে আমতলী সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে মামলা দায়ের করেন। নান্নুর শ্বশুর ক্ষিপ্ত হয়ে নান্নুকে ঘায়েল করার জন্য নান্নুর স্ত্রী আয়েশা আক্তার নাজিরাকে দিয়ে নান্নু, নান্নুর বাবা ও নান্নুর মা-কে আসামী করে যৌতুক মামলা দায়ের করে। উক্ত মামলায় নান্নু ও তার বাবাকে গ্রেফতার করে আমতলী থানা পুলিশ তাদেরকে আদালতের মাধ্যমে বরগুনা জেলা হাজতে পাঠানো হয়। নান্নু জেল হাজতে যাওয়ায় তাকে ডাচ বাংলা ব্যাংক থেকে চাকুরীচ্যুত করা হয়।
নান্নুর দাবী ঘটনার দিন তিনি বাড়িতে ছিলেন না। স্ত্রীর দায়েরকরা যৌতুক মামলাটি সম্পূর্ণ বানোয়াট বলেও দাবী করেন নান্নু। নান্নুর মায়ের দায়ের করা মামলাটি তদন্তকারী কর্মকর্তা মিথ্যা বলে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন।
মামলার বাদী পরিভানু চার্জশিটের বিরুদ্ধে নারাজির আবেদন করলে বিজ্ঞ আদালত ২৫জানুয়ারী ২০২১ ইং তারিখ শুনানীর জন্য রাখেন। নান্নু চাকুরি হারিয়ে পাগল প্রায়, তিনি এর শুষ্ঠু বিচার দাবি করছে।