কুমিল্লা দক্ষিনাঞ্চলে খোলা রাস্তায় জমে উঠেছে ওয়েলডিং ব্যবসা
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৯:৫৪ পিএম, ১৭ জানুয়ারী,রবিবার,২০২১ | আপডেট: ০৬:০২ পিএম, ১৫ নভেম্বর,শুক্রবার,২০২৪
কুমিল্লা দক্ষিণাঞ্চলের লাকসাম, বরুড়া, লালমাই, নাঙ্গলকোট ও মনোহরগঞ্জ উপজেলার হাট-বাজার জুড়ে সরকারী নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করে যত্রতত্র ভাবে গড়ে উঠেছে কয়েক হাজার ওয়েলডিং কারখানা। বিশেষ করে স্থানীয় সার্বিক প্রশাসনের আন্তরিকতার অভাবে জেলার ৫টি উপজেলার হাটবাজার গুলোতে প্রধান প্রধান সড়কের উপর প্রকাশ্যে খোলা রাস্তায় ওয়েলডিং কারখানার মালিকদের নিবন্ধন বিহীন অবৈধ ব্যবসাটি সীমাহীন দূর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে পথচারীদের। ফলে প্রতিনিয়ত এ অঞ্চলের মানুষের স্বাস্থ্য ঝুঁকিও বাড়ছে অথচ রাজস্ব বিভাগসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা এ ব্যাপারে নিরব দর্শকের ভূমিকায়।
স্থানীয় পথচারীদের একাধিক সূত্র জানায়, এ অঞ্চলে বিভিন্ন স্থানে গড়ে উঠা বিভিন্ন ধরনের ওয়েলডিং কারখানার শ্রমিকরা প্রকাশ্যে রাস্তার উপর তাদের যাবতীয় ওয়েলডিং কাজকর্ম করে যাচ্ছে। ফলে বেগুনী আলোক রশ্মি পথচারীসহ আশে পাশে ব্যবসায়ীদের অর্বননীয় ক্ষতির সন্মুখিন হচ্ছে। আবার সড়ক গুলোর অধিকাংশ জায়গায়ই ওয়েলর্ডিং কারখানা মালিকদের জবর দখলে চলে গেছে। এসব কলকারখানায় সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত ওয়েলডিং এর কাজ করার জন্য জনচলাচলে মারাত্মক সমস্যা সৃষ্টির পাশাপাশি অনেক কৌতহুলী স্কুলে পড়ুয়া শিশু-কিশোর, ছাত্র-ছাত্রীরা এ ওয়েলডিং চিত্র দেখার জন্য আশে পাশে ভিড় জমাচ্ছে ফলে ওইসব আলোক রশ্মি চোখের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। ফলে এ অঞ্চলে শিশু থেকে বৃদ্ধ পর্যন্ত চক্ষু রোগীর সংখ্যা দিন দিন বেড়েই চলেছে বলে স্থানীয় চশমা বিক্রেতা ও ডাক্তারগণের দাবী।
সূত্রগুলো আরো জানায়, বর্তমান সরকার পরিবেশ ও স্বাস্থ্যের উন্নয়নে ব্যাপক উদ্যোগ নিলেও জেলা দক্ষিনাঞ্চলের ৫টি উপজেলার সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের এ ব্যাপারে তেমন কোন আন্তরিকতা দেখা যায়নি। অথচ এ অঞ্চলের হাট-বাজার গুলোতে এসব সৃষ্ট অব্যবস্থা সম্পর্কে ভুক্ত ভোগী লোকজন ওইসব অবৈধ ওয়েলডিং কারখানা মালিকদের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে বহু অভিযোগ দায়ের করলেও এ ব্যাপারে টনক নড়েনি তাদের। বরং অভিযোগ দায়ের করার পর থেকে ঐ সব কারখানা মালিকদের অপতৎপরতা দিন দিন আরো বৃদ্ধি পেয়েছে।
স্থানীয় ব্যবসায়ীদের একাধিক সূত্র জানায়, এ অঞ্চলের পরিবেশ নষ্টকারী প্রতিষ্ঠানগুলো বিভিন্ন পুরাতন মালামাল ক্রয় করে ওয়েলডিং মেশিনের মাধ্যমে জোড়াতালি দিয়ে নতুন ভাবে বিভিন্ন সরঞ্জাম তৈরী করে মোটা অংকের টাকা প্রতারনার মাধ্যমে হাতিয়ে নিচ্ছে। ওইসব অবৈধ কারখানা মালিকদের রাজস্ব বিভাগ, ফায়ার ব্রিগেড, পরিবেশ, শ্রম ও স্বাস্থ্য বিভাগসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরের কোন বৈধ কাগজপত্র নেই। এ ব্যাপারে উপজেলা ৫টির স্থানীয় হাট-বাজার কমিটিসহ প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন ব্যবসায়ী মহল।
এ দিকে লাকসাম, নাঙ্গলকোট ও বরুড়া পৌরএলাকা উন্নয়নে বর্তমান সরকার কয়েকশত কোটি টাকার অবকাঠামোগত উন্নয়ন কাজ করে যাচ্ছে। অথচ কোটি কোটি টাকা বরাদ্দে সড়ক, কালভার্ট ও ড্রেনগুলো এবং পথচারীদের চলাচলে ফুটপাত ওইসব অবৈধ ওয়েলডিং কারখানা মালিকরা তা জবর দখল করে তাদের তাদের অবৈধ ব্যবসা চালাচ্ছে। এছাড়া ফুটপাতগুলো যানজটের কবলে পড়ে পথচারী যানচলাচলে মারাত্মক অর্বননীয় দূভোর্গ পোহাতে হচ্ছে। অথচ পৌর কর্তৃপক্ষ এসবের দিকে নজর নেই।
এ ব্যাপারে পৌর ও জেলা-উপজেলাগুলোর প্রশাসন কিংবা সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করেও কোন বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি। তবে এ ব্যাপারে ভ্রাম্যমান আদালত কিংবা আইনী ব্যবস্থায় রাজনৈতিক ও স্থানীয় প্রভাবশালীদের চাপ রয়েছে বলে জানা যায়।