ভোট ডাকাতি ও হতাশার মধ্য দিয়ে শেষ হলো দ্বিতীয় ধাপের ভোটগ্রহণ
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০১:১৬ এএম, ১৭ জানুয়ারী,রবিবার,২০২১ | আপডেট: ০৮:২৭ এএম, ১১ নভেম্বর,সোমবার,২০২৪
কেন্দ্র দখল, জাল ভোট, এজেন্ট বের করে দেয়া, জোর করে সরকার প্রার্থীর পক্ষে প্রকাশ্যে নৌকায় সিল মারতে বাধ্য করা করা, প্রার্থী নিজেই ভোট দিতে না পারায় নির্বাচন বর্জনের মধ্য দিয়ে শেষ হয়েছে দ্বিতীয় ধাপে ৬০ পৌরসভার ভোটগ্রহণ।
আজ শনিবার বিকেল ৪টায় এ ভোটগ্রহণ শেষ হয়। এর আগে সকাল ৮টায় শুরু হয় ভোটগ্রহণ।
সিরাজগঞ্জে প্রকাশ্যে নৌকায় সিল মারতে বাধ্য করা হচ্ছে : সিরাজগঞ্জ সদর, বেলকুচি, রায়গঞ্জ, উল্লাপাড়া ও কাজিপুর পৌরসভায় সকাল ৮টা থেকে ভোটগ্রহণ চলছে। ভোটের পরিবেশ বাইরে সুষ্ঠু থাকলেও ভিতরের পরিবেশ পুরোপুরি উল্টো। সিরাজগঞ্জ সদর পৌরসভার অধিকাংশ কেন্দ্রে বিএনপির কোনো এজেন্ট নেই। নৌকা প্রতীকের এজেন্টরা ভোটারদের মেয়র পদের ব্যালটে পেপারে প্রকাশ্যে সিল মারতে বাধ্য করছে। রায়গঞ্জ পৌরসভায় একই চিত্র। সকাল ১১টায় রায়গঞ্জের পূর্বলক্ষ্মীকোলা কেন্দ্রের ৫ নম্বর বুথে গিয়ে দেখা যায়, শুধু কাউন্সিলর প্রার্থীদের ব্যালট রয়েছে। মেয়র প্রার্থীর কোনো ব্যালট নেই। রায়গঞ্জ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ও ধানগড়া উপজেলা সদর মহিলা ডিগ্রী কলেজে গিয়ে দেখা যায় ভোটারদের আগে নৌকা প্রতীকে সিল মেরে পরে বুথে গিয়ে কাউন্সিলদের ব্যালটে সিল মারতে ভোটারদের বাধ্য করা হচ্ছে। সকাল নয়টায় সিরাজগঞ্জ পৌরসভার রেলওয়ে কলোনী উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে দেখা যায় একই চিত্র। ভোটারদের কাছ থেকে জোরপূর্বক নৌকা প্রতীকে প্রকাশ্যে সিল মেরে নেয়া হচ্ছে। ভোটাররা প্রতিবাদ করলেও সংশ্লিষ্ট কেন্দ্রের প্রিজাইডিং ও সহকারী প্রিজাইডিং অফিসাররা নিশ্চুপ থাকছেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক নারী ভোটার ভোট দিয়ে বের হয়ে হাউকাউ শুরু করেন।
তিনি বলেন, আমার ভোট আমাকে দিতে দেয়নি। একটা ব্যালট নিয়ে প্রকাশ্যে নৌকায় সিল মেরেছে। আরেক ভোটার জানান, আমাকে প্রকাশ্যে সিল মারার কথা বললে আমি রাজি হয়নি। পরে রাগ করে ব্যালট রেখেই চলে এসেছি। শহরের কালেক্টরেট স্কুল এন্ড কলেজ, জ্ঞানদায়িনী উচ্চ বিদ্যালয়ের চিত্র একই। আগে নৌকায় সিল মেরে নেয়া হচ্ছে পরে কাউন্সিলদের ব্যালট হাতে ধরিয়ে দিয়ে বুথে গিয়ে সিল মারতে বাধ্য করা হচ্ছে।
এদিকে সকালে কালেক্টরেট স্কুলে ভোটপ্রদান শেষে সদর পৌরসভার মেয়র প্রার্থী সৈয়দ আব্দুর রউফ মুক্তা বলেন, সুষ্ঠু পরিবেশে ভোটাররা স্বতঃস্ফূর্তভাবে ভোট দিচ্ছে। বিএনপি পরাজয় জেনে অপপ্রচার চালাচ্ছে। অন্যদিকে বিনাপানি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভোট দিয়ে সদর পৌরসভার বিএনপি প্রার্থী সাইদুর রহমান বাচ্চু জানান, প্রায় অধিকাংশ কেন্দ্রে এজেন্ট বের করে দেয়া হচ্ছে। নৌকায় প্রকাশ্যে সিল মারা হচ্ছে। জেলা রিটার্নিং অফিসার ও নির্বাচন অফিসার জানান, কোথাও অনিয়ম হচ্ছে না। সুষ্ঠুভাবে ভোট হচ্ছে। রায়গঞ্জের লক্ষ্মীকোলা ভোটকেন্দ্রে ব্যালট পেপার নেই এমন প্রশ্নে বলেন, সবকেন্দ্রেই ব্যালট পেপার রয়েছে।
সিরাজগঞ্জে নৌকাপ্রার্থীর মেয়ে রুমা ব্যালটে নিজেই সিল মারেন : সিরাজগঞ্জ জেলার পাঁচটি নির্বাচনের মধ্যে বেলকুচি পৌরসভার নির্বাচনকে ঘিরে শুরু থেকেই উত্তাপ বিরাজ করছিল। ভোট চলাকালে সকালে বেলকুচি পৌরসভার নির্বাচনি একটি কেন্দ্রে নৌকার পক্ষে ভোট কেটে নেয়ার অভিযোগ করছে প্রতিপক্ষ। গতকাল শনিবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে পৌরসভার কামারপাড়া আলহাজ লতিফা শাজাহান বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ভোটকেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায়, নৌকা প্রতীকের প্রার্থীর মেয়ে রুমা বিশ্বাস এজেন্টের দায়িত্ব পালনকালে নৌকা প্রতীকের ব্যালটে নিজ হাতে সিল মারছেন। এ পৌরসভায় সাবেক মৎস্যমন্ত্রী আলহাজ আব্দুল লতিফ বিশ্বাসের স্ত্রী সাবেক মেয়র আশানুর বিশ্বাস নৌকা প্রতীকে নির্বাচন করছেন। নৌকার পাশাপাশি বিএনপি ও স্বতন্ত্র প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। স্বতন্ত্রপ্রার্থী সাজ্জাদুল হক রেজার নির্বাচনের প্রধান এজেন্ট বেলকুচি উপজেলা চেয়ারম্যান নূরুল ইসলাম অভিযোগ করে বলেন, ভোটের শুরু থেকে এ কেন্দ্রে নৌকা সমর্থক ও এজেন্ট রুমা বিশ্বাস জোর করে নৌকা প্রতীকে ব্যলেট কেড়ে নিয়ে সিল দিচ্ছে।
তিনি আরও অভিযোগ করে বলেন, শ্যাম কিশোর, আলহাজ সিদ্দিকী, ক্ষিদ্র মাটিয়া, কামার পাড়া, শেরনগর স্কুল কেন্দ্রসহ কয়েকটি কেন্দ্রে নৌকার প্রতীকের সমর্থকেরা জোর করে ভোট কেটে নিচ্ছে। কামারপাড়া আলহাজ লতিফা শাহজাহান বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ভোট কেন্দ্রের প্রিজাইডিং অফিসার আব্দুল কাদের বলেন, অভিযোগটি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
কেন্দ্রে গিয়ে নিজের ভোট দিতে পারেননি বিএনপির প্রার্থী, নির্বাচন বর্জন : রাজশাহীর বাগমারা উপজেলার ভবানীগঞ্জ পৌরসভা নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন বিএনপি মনোনীত ধানের শীষ প্রতীকের প্রার্থী আবদুর রাজ্জাক প্রামানিক। নির্বাচন চলাকালে আজ শনিবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে পৌর এলাকায় নিজের বাড়িতে তিনি সাংবাদিকদের সামনে ভোট বর্জনের ঘোষণা দেন।
তিনি বলেন, শহীদ সেকেন্দার মেমোরিয়াল উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে আমি আমার নিজের ভোটটা দিতে গিয়েছিলাম। নৌকার সমর্থকরা আমাকে আমার ভোটটাই দিতে দেয়নি। কেন্দ্রে ঢুকতে দেয়া হয়নি। বাংলাদেশের ইতিহাসে কোথাও এমন হয়েছে যে, প্রার্থী তার নিজের ভোট দিতে পারেননি? এমন ভোটে থেকে লাভ কী? তিনি অভিযোগ করেন, কোনো কেন্দ্রে বিএনপি প্রার্থীর এজেন্ট নেই। সবাইকে বের করে দেয়া হয়েছে। আর তিনি যখন ভোট দিতে যান তখন কেন্দ্রে তাকে লাঞ্ছিতও করা হয়েছে। এর প্রতিবাদে তিনি ভোট বর্জন করেছেন।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী ও বর্তমান মেয়র আবদুল মালেক বলেন, এখন বেলা ১১টা। ভোট যা হওয়ার হয়ে গেছে। এখন ভোট বর্জন করে লাভ আছে?
তিনি বলেন, ভোট বর্জনের কথা এখনও শুনিনি। সব জায়গায় বিএনপির এজেন্ট আছে। শুনলাম ১৫-২০ জন নিয়ে গিয়ে বিএনপি প্রার্থী ভোট দিয়েছেন। এখন নিশ্চিত পরাজয় দেখে হয়ত ভোট বর্জন করছেন। ভবানীগঞ্জ পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র পদে মোট চারজন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। আওয়ামী লীগ ও বিএনপির দুই প্রার্থী ছাড়া অন্য দুইজন হলেন- স্বতন্ত্র এসএম মামুনুর রশীদ (আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী) এবং কামাল হোসেন। কামালের প্রতীক নারিকেল গাছ। আর মামুনুর রশীদের প্রতীক জগ।
বাবাকে ভোট দিতে পারলেন না ‘মৃত’ মানিক : ঢাকা থেকে বাবাকে ভোট দিতে এসেছিলেন নাটোরের নলডাঙ্গা পৌরসভার বাসিন্দা মানিক ইসলাম। কিন্তু ভোট দেয়া হলো না। স্মার্ট আইডি কার্ড থাকলেও ভোটার তালিকায় তার নাম ‘মৃত’ দেখানোয় কেন্দ্রে গিয়ে ভোট না দিয়ে ফিরতে হয়েছে তাকে।
আজ শনিবার দুপুর ১২টার দিকে নলডাঙ্গা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে এ ঘটনা ঘটে। ভুক্তভোগী মানিক ইসলাম নলডাঙ্গা পৌরসভার ৩ নং ওয়ার্ডের সাধারণ কাউন্সিলর প্রার্থী মো. বাবলু সরদারের ছেলে।
মানিক ইসলাম অভিযোগ করেন, বাবাকে ভোট দেয়ার জন্য কর্মস্থল ঢাকা থেকে শুক্রবার রাতে বাড়িতে এসেছেন। দুপুরের দিকে স্মার্ট কার্ড নিয়ে ভোট দিতে নলডাঙ্গা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে যান। এ সময় স্মার্ট আইডি কার্ড থাকলেও ভোটার তালিকায় তার নাম না থাকায় ওই কেন্দ্রের প্রিজাইডিং অফিসার তাকে ফিরিয়ে দেন। পরে উপজেলা নির্বাচন অফিসে গিয়ে স্মার্ট কার্ডটি দেখিয়ে সমস্যার কথা জানালে, তারা মেশিনে পরীক্ষার পর জানান তিনি মৃত। এই অবস্থায় তিনি তার বাবাকে ভোট দিতে না পারার আক্ষেপ করেন। নলডাঙ্গা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রের প্রিজাইডিং অফিসার মো. কিশোয়ার জানান, ওই ব্যক্তির স্মার্ট কার্ডটি থাকলেও ভোটার তালিকায় তার নাম নেই। এ জন্য তার ভোট দেয়ারও কোনো সুযোগ নেই। তাই তাকে উপজেলা নির্বাচন অফিস থেকে সংশোধন বা কাগজ নিয়ে ভোটকেন্দ্রে আসার পরামর্শ দেয়া হয়। নলডাঙ্গা উপজেলা নির্বাচন অফিসার মো. সাইফুল ইসলাম জানান, ভোটার আইডি কার্ড থাকলেও তালিকায় নাম না থাকলে তার ভোট দেয়ার কোনো সুযোগ নেই। তবে ভোটের পর কার্ডটি সংশোধন করে নেয়া যাবে।
তিনি বলেন, ভোটার তালিকা প্রকাশের পর ওই তালিকায় তার নাম আছে কিনা তা আগেই যাচাই করা উচিত ছিল। কিন্তু উনি সেটা করেননি। ভুলবশত তার নামটি মৃতের তালিকায় যেতে পারে, তা সময়মতো সংশোধন করা যাবে।
ভোটকেন্দ্রের বাইরে ভিড়, ভেতরে ফাঁকা : দিনাজপুর পৌরসভা নির্বাচনে সকাল থেকে ভোটগ্রহণ চলছে। তবে ভোট কেন্দ্রগুলোতে ভোটার উপস্থিতি তুলনামূলকভাবে কম। কেন্দ্রের বাইরে দেখা গেছে ভোটারদের উপচেপড়া ভিড়। বিভিন্ন কেন্দ্র ঘুরে বাইরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য ও আওয়ামী লীগের কর্মী-সমর্থকদের ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। কিন্তু ভেতরে ভোটারদের তেমন উপস্থিতি নেই। আজ শনিবার বেলা ১১টায় দিনাজপুর পৌরসভার শাঁখারীপট্টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায় ভোট কেন্দ্রের বাইরে শত শত ভোটার ও প্রার্থীদের সমর্থক। যেনো উপচেপড়া ভিড়। কিন্তু ভোট কেন্দ্রের ভেতরে একদম ফাঁকা। ভেতরে নেই তেমন ভোটার।
ওই কেন্দ্রের প্রিজাইডিং অফিসার সবুজ আহম্মেদ জানান, ওই কেন্দ্রে মোট ভোটার এক হাজার ৯৩০ জন। কিন্তু বেলা ১১টা পর্যন্ত ভোট পড়েছে প্রায় ৩০০। তিনি জানান, বাইরে ব্যাপক মানুষের উপস্থিতি লক্ষ্য করা গেলেও তারা ভোট দিতে আসছেন দু/একজন করে। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ভোটকেন্দ্রের ভেতরে ভোটারের উপস্থিতি হয়ত বাড়বে, এমন আশা প্রকাশ করেন তিনি।
মোংলা পোর্ট পৌরসভা নির্বাচনে বিএনপির মেয়র প্রার্থীসহ মোট ১২ জন কাউন্সিলর প্রার্থী অনিয়ম ও ভোট কারচুপির অভিযোগ এনে ভোট বর্জনের ঘোষণা দেন। ভোট বর্জনকারী কাউন্সিলর প্রার্থীদের মধ্যে জামায়াত সমর্থিত দুজনসহ মোট ৯ জন রয়েছেন। এছাড়া তিনজন সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর প্রার্থীও ভোট বর্জনের ঘোষণা দেন। রাজশাহীর বাগমারার ভবানীগঞ্জ পৌরসভা নির্বাচনে বিএনপি প্রার্থী আব্দুর রাজ্জাক ভোট বর্জনের ঘোষণা দেন। ‘আওয়ামী লীগ প্রার্থীর সমর্থকরা তাকে ভোট দিতে দেয়নি’ এ অভিযোগ করে তিনি ভোট বর্জন করেন। মেহেরপুরের গাংনী পৌরসভায় অনিয়মের অভিযোগ এনে স্বতন্ত্র প্রার্থী ও বহিস্কৃত যুবলীগ নেতা, বর্তমান মেয়র আশরাফুল ইসলাম নির্বাচন বর্জন করেন। মৌলভীবাজারের কুলাউড়া পৌরসভা নির্বাচনে উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রুমেল আহমদের নেতৃত্বে ভোটকেন্দ্র দখল করায় দু পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এতে ভোটগ্রহণ বন্ধ করে দেয় কর্তৃপক্ষ। ঝিনাইদহের শৈলকুপা পৌরসভা নির্বাচনে দুই মেয়র প্রার্থীর সমর্থকদের মাঝে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ায় দুজন আহত হন। এছাড়া ঝাউদিয়া ভোটকেন্দ্র এলাকায় স্বতন্ত্র (আওয়ামী লীগ বিদ্রোহী) মেয়র প্রার্থীর গাড়ি ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। দেশের সবচেয়ে আলোচিত নোয়াখালীর বসুরহাট পৌরসভা নির্বাচন নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেন নৌকা প্রতীকের প্রার্থী ও আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের ভাই আবদুল কাদের মির্জা। এর আগে নির্বাচন নিয়ে বেশ কিছুদিন ধরে উত্তেজনাপূর্ণ মন্তব্য করেন তিনি। এছাড়া ফেনীর দাগনভূঞা পৌরসভা নির্বাচনে গনিপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে পরপর দুটি কককেট বিস্ফোরণ হয়। এ সময় কেন্দ্রে দায়িত্বে থাকা আরিফুল নামের এক আনসার সদস্য আহত হন। এদিকে পৌরসভাগুলোর মধ্যে ২৯টিতে ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) এবং ৩১টিতে ব্যালটের মাধ্যমে ভোটগ্রহণ করা হয়। প্রথমবারের মতো ইভিএমে ভোট দিতে গিয়ে বিপাকে পড়েন অনেক ভোটার। কুমিল্লার চান্দিনা পৌরসভা নির্বাচনে ইভিএম পদ্ধতিতে ভোট প্রদানে ভোটারদের ভোগান্তির মুখে পড়তে হয়। প্রতিটি ভোটের জন্য গড়ে ৫ মিনিট থেকে ২০ মিনিট সময় ব্যয় হয়। মাঠ পর্যায়ে ইভিএম নিয়ে ব্যাপক প্রচারণা না থাকায় ভোটগ্রহণে দায়িত্বরতদের অনেকটা ত্যক্ত-বিরক্তও হতে হয় এ সময়। দ্বিতীয় ধাপের পৌর নির্বাচন সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্নের জন্য কেন্দ্রগুলোতে পুলিশ ও র্যাব মোতায়েন ছিল। তাদের সহায়তার জন্য ছিলেন আনসার সদস্যরা। দ্বিতীয় ধাপে ৬১টি পৌরসভার তফসিল ঘোষণা করলেও নীলফামারীর সৈয়দপুরের ভোটগ্রহণ স্থগিত করা হয়। মেয়র পদের স্বতন্ত্র প্রার্থী (নারিকেল গাছ প্রতীক) মো. আমজাদ হোসেন সরকারের মৃত্যুতে ওই পৌরসভার ভোটগ্রহণ স্থগিত করা হয়।
গোপন ব্যালট কক্ষে বসে আছেন নৌকার এজেন্ট : বিক্ষিপ্ত কয়েকটি ঘটনার মধ্য দিয়ে ফেনীর দাগনভূঞা পৌরসভার ভোটগ্রহণ শেষ হয়। তবে কিছু কেন্দ্রে দেখা যায়, নৌকার এজেন্টরা ভোট কক্ষের গোপন ব্যালট রুমে অবস্থান নিয়েছেন। এছাড়া প্রথমবারে ইভিএম মেশিনে ভোট দিতে এসে ব্যাপক বিড়ম্বনায় শিকার হচ্ছেন ভোটাররা। এ নিয়ে অস্বস্তিতে আছেন ভোটগ্রহণ কর্মকর্তারাও। উত্তর করিমপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ভোটার লাইনে দাঁড়ানো খোদেজা আক্তার জানান, তিনিসহ মহিলারা প্রায় ১ ঘণ্টা ধরে লাইনে দাঁড়িয়ে আছেন। খুব ধীর গতিতে ভোটগ্রহণ হচ্ছে। গনিপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের মহিলা ভোটার হারাধন বিয়া জানান, ইভিএম মেশিনে কিভাবে ভোট দিতে হয় তা জানি না। ভোটের আগে ইভিএম প্র্যাকটিস জরুরি ছিল বলে দাবি করেন তিনি। রামানন্দপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায়, নৌকার এজেন্টরা ভোট কক্ষের গোপন ব্যালট রুমে অবস্থান নিয়েছেন। নৌকার এজেন্ট খালেদা আক্তার ও জাকির হোসেন জানান, ভোটারদের সহযোগিতার জন্যে বারবার গোপন কক্ষে আসতে হচ্ছে। ভোটাররা ফিঙ্গার প্রিন্ট দেয়ার পর সহযোগিতার জন্যে আমরা এ কক্ষে রয়েছি। আবদুল কাদের নামের এক ভোটার জানান, তিনি ডালিম মার্কায় ভোট দিতে চাইলে ভেতরে থাকা এজেন্টের লোকটি আমাকে সহযোগিতার কথা বলে উটপাখি মার্কায় ভোট দিয়ে দেন।
দাগনভূঞা উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. কামাল হোসেন বলেন, ইভিএমে ভোট দেয়ার বিষয়ে নানাভাবে প্রচারণা চালানো হয়েছে। তারপরও কোনো ভোটার কিছু না বুঝলে সহকারী প্রিজাইডিং ও পোলিং অফিসারের সহায়তা নিতে পারেন। কোনো প্রার্থীর এজেন্ট গোপন কক্ষে প্রবেশ করতে পারবে না।
আগ্রহ নেই ভোটারদের : নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার তারাবো পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হওয়ার ভোটারদের মধ্যে উৎসাহ উদ্দীপনা দেখা যাচ্ছে না। তবে মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা না থাকলও ৬টি সাধারণ কাউন্সিলর এবং ৩টি সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে ৩৬ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তাদের মধ্যে সাধারণ কাউন্সিলর প্রার্থী ২৬ জন এবং সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর প্রার্থী ছিলেন ১০ জন। এদিকে নির্বাচন সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন করতে প্রতিটি কেন্দ্রে আইনশৃংখলা বাহিনীর পাশাপাশি ম্যাজিস্ট্রেটসহ স্ট্রাইকিং ফোর্স র্যাব মোতায়েন করা হয়েছে। ১২ জানুয়ারি ৭ নম্বর ওয়ার্ডে নির্বাচনি প্রচারণার সময় দুই কাউন্সলির প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষের পর থেকে প্রতিটি ওয়ার্ডকেই অধিক গুরুত্ব দিয়ে দেখছে উপজেলা নির্বাচন কমিশন ও স্থানীয় প্রশাসন।
এদিকে তারাবো পৌরসভায় মেয়র পদে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী ও বর্তমান মেয়র হাছিনা গাজী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় বিজয়ী হয়েছেন। এছাড়া তিনজন সাধারণ কাউন্সিলর বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় বিজয়ী হয়েছেন। বিজয়ী প্রার্থীরা হলেন- ১ নম্বর ওয়ার্ডের রফিকুল ইসলাম মনির, ৪ নম্বর ওয়ার্ডের আক্তার হোসেন এবং ৬ নম্বর ওয়ার্ডের মাহাবুবুর রহমান জাকারিয়া। জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও তারাবো পৌরসভা নির্বাচনের রিটার্নিং অফিসার মতিউর রহমান বলেন, ভোট শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন করতে সব ধরনের প্রস্তুতি রয়েছে। প্রত্যেকটি কেন্দ্রে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য মোতায়েন রয়েছে। এছাড়াও ম্যাজিস্ট্রেটসহ স্ট্রাইকিং ফোর্স, র্যাব, বিজিবি ও সাদা পোশাকে পুলিশ সদস্যরা প্রতিটি কেন্দ্রে দায়িত্ব পালন করছেন। সকাল থেকে কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনার সংবাদ পাওয়া যায়নি।
ইভিএম গোপন কক্ষের বাইরে, ভোটারের সঙ্গে ঢুকছে এজেন্ট : স্বর্ণকলি আদর্শ বিদ্যালয় কেন্দ্রে গোপন কক্ষের বাইরে ইভিএম এবং রেডিও কলোনি মডেল স্কুল কেন্দ্রে কর্মকর্তাদের সামনেই আওয়ামী লীগ প্রার্থীর এজেন্টকে ভোটারের সঙ্গে গোপন কক্ষে ঢুকতে দেখা গেছে। সাভার পৌরসভা নির্বাচনে গোপন কক্ষের বাইরে ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) রেখে ভোট নিতে দেখা গেছে। আজ শনিবার সকালে আড়াপাড়া এলাকায় স্বর্ণকলি আদর্শ বিদ্যালয় কেন্দ্রে এ ঘটনা ঘটে। ইভিএম গোপন কক্ষের বাইরে কেন? জানতে চাইলে কেন্দ্রের সহকারী প্রিসাইডিং অফিসার মাহফুজুর রহমান গালি দিয়ে তেড়ে আসেন, সাংবাদিকদের মারতে উদ্যত হন। এ দৃশ্য দেখে কেন্দ্রে দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যরা সাংবাদিকদের সেখান থেকে বের করে নিয়ে আসেন। পরে বিষয়টি প্রিসাইডিং অফিসার গৌতম কুমারকে জানানো হলে তিনি ইভিএম মেশিন গোপন কক্ষে রেখে দেন। এ ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘সহকারী প্রিসাইডিং অফিসার মাহফুজুর রহমান একটু অসুস্থ। এমনিতে ভোটাদের চাপ। তার ওপর একজন ভোটার দুর্ব্যবহার করায় তার মাথা ঠিক ছিল না। কাজটা ঠিক হয়নি। সাভার সরকারি কলেজ, সাভার ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসা, সাভার মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, স্বর্ণকলি আদর্শ বিদ্যালয়, শহীদ মজনু একাডেমি, রেডিও কলোনি মডেল স্কুল, জিনিয়াস মডেল স্কুল ও টাঙ্গাইল ক্যাডেট একাডেমি ভোটকেন্দ্র। প্রায় সবগুলো কেন্দ্রেই ভোটকক্ষে একাধিক ব্যক্তি ঘোরাফেরা করছিলেন। এমনকি, রেডিও কলোনি মডেল স্কুল কেন্দ্রে কর্মকর্তাদের সামনেই আওয়ামী লীগ প্রার্থীর এজেন্টকে ভোটারের সঙ্গে গোপন কক্ষে ঢুকতে দেখা গেছে।
কুমারখালীতে জাল ভোট দিতে এসে কিশোরসহ আটক ২ : কুষ্টিয়ার কুমারখালী পৌরসভা নির্বাচনে জাল ভোট দিতে আসা দুই জনকে আটক করেছে পুলিশ। আজ শনিবার দুপুরে কুমারখালী ৮ নম্বর ওয়ার্ডের তেবাড়ীয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্র থেকে তাদের আটক করা হয়। এদের মধ্যে একজন হলেন সজল (১৮) ও ১৪ বছর বয়সী আরেক কিশোর। তেবাড়ীয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের প্রিসাইডিং অফিসার আলফাজ উদ্দিন তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ‘ভোটগ্রহণ শেষে তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
শৈলকুপা পৌর নির্বাচনে গোপন কক্ষে গিয়ে ভোট দিচ্ছেন নৌকার এজেন্ট! দুপুর দুইটা। বাইরে নারী ভোটারদের লাইন। ভোটকক্ষে চলছে ভোটগ্রহণ। কেন্দ্রের কক্ষে গিয়ে চোখে পড়ল, এক এজেন্ট গোপন কক্ষে ভোটারের সঙ্গে অবস্থান করছেন।
ঘটনাটি ঝিনাইদহের শৈলকুপা পৌরসভার ছয় নম্বর কেন্দ্র শৈলকুপা পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের। সেখানে আজ শনিবার শৈলকুপা পৌর নির্বাচনের ভোটগ্রহণ চলছে। প্রায় ২০ মিনিট ওই কক্ষে নজর রেখে দেখা যায় ওই এজেন্ট নিজের নাম বলেন পুতুল খাতুন। তিনি নিজেকে নৌকার এজেন্ট বলে পরিচয় দেন। দেখা গেছে, তিনি এজেন্টদের নির্দিষ্ট স্থান থেকে উঠে কক্ষের বিভিন্ন স্থানে গিয়ে ভোটারদের সঙ্গে কথা বলছেন। কখনো কখনো গোপন কক্ষেও প্রবেশ করছেন। এ বিষয়ে ওই কেন্দ্রের প্রিসাইডিং অফিসার মাসুদ আহমদ বলেন, ভোটকক্ষে কোনো প্রার্থীর এজেন্ট স্থান ছেড়ে অন্য কোথাও যেতে পারেন না। আপনি বললেন, আমি বিষয়টি দেখছি।
সাভারে আ. লীগ মেয়র প্রার্থীর ছেলের হাতে সাংবাদিক লাঞ্ছিত : ‘তোরা (সাংবাদিক) এসেছিস কেন এখানে। ২০ কোটি টাকা খরচ করছি নির্বাচনে। এখান থেকে চলে যা। মেরে ফাটিয়ে দেব’, প্রকাশ্যে সাংবাদিকদের এমন হুমকি দিয়েছেন সাভার পৌর নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থীর ছেলে। এর কিছুক্ষণ আগেই নির্বাচনের তথ্য সংগ্রহকারী বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম’র সাভার প্রতিনিধি সাগর ফরাজীকে লাঞ্ছিত করেন বর্তমান মেয়র হাজি আব্দুল গনির ছেলে কামরুল হাসান শাহিন। গতকাল শনিবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে টাঙ্গাইল ক্যাডেট একাডেমির নারী ভোটকেন্দ্রে এ ঘটনা ঘটে।
সাগর ফরাজী বলেন, সকালে সাভারের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের সেই কেন্দ্রে নারী ভোটারের অভিজ্ঞতা সম্পর্কে জানতে ভিডিও ধারণ করার সময় মেয়র প্রার্থী আব্দুল গণির মেঝ ছেলে শাহিন এসে আমাকে লাঞ্ছিত করেন। তিনি আমার ফোন কেড়ে নেন এবং অকথ্য ভাষায় গালাগাল করেন। সে সময় আরেক সাংবাদিক শুভ্র ভাই আমার সঙ্গে ছিলেন। পরে ধামরাই থানার ওসি দীপক চন্দ্র সাহা ফোনটি ফিরিয়ে দেয়ার ব্যবস্থা করেন, বলেন তিনি।
সাংবাদিক শুভ্র বলেন, মেয়রের ছেলে হুট করে এসে সাগরের ফোন কেড়ে নেয়। শুরু করেন গালাগাল। এ সময় একজন পুলিশ কর্মকর্তা এসে শাহিনকে নিয়ে যান এবং পরে তার ফোন ফেরত দিয়ে দেন। শাহিনের ব্যবহারে স্থানীয় সাংবাদিকরা বিব্রতবোধ করছেন বলেও জানান তিনি। কেন্দ্রের প্রিসাইডিং অফিসার আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘আসলে তেমন কিছু হয়নি। একটু কথা কাটাকাটি হয়েছে।’
ওসি দীপক চন্দ্র সাহা বলেন, শাহিন যার সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করেছেন, তিনি যে সাংবাদিক ছিলেন তা আমি জানতাম না। পরে জেনেছি। এ বিষয়ে ঢাকা জেলা সিনিয়র নির্বাচন কর্মকর্তা ও রিটার্নিং অফিসার মুনীর হোসেন খান বলেন, আমার কাছে লিখিত অভিযোগ দিলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেব।
চান্দিনা পৌর নির্বাচন : ২ কাউন্সিলর প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ, আহত ১ : কুমিল্লার চান্দিনা পৌরসভায় দুই কাউন্সিলর প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। পৌরসভার তিন নম্বর ওয়ার্ডের হারং সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের পাশে সকাল সাড়ে ৯টায় এই সংঘর্ষ হয়। চান্দিনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সামছুদ্দিন মো. ইলিয়াস জানান, ভোটকেন্দ্রে যাওয়া নিয়ে কাউন্সিলর প্রার্থী বিল্লাল হোসেন ও নাজমুল হাসানের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এতে একজন আহত হয়েছেন। তবে কাউন্সিলর প্রার্থী বিল্লাল হোসেনের ভাই ইব্রাহিম খলিল জানান, অপর প্রার্থী নাজমুলের সমর্থকরা তাদের তিন সমর্থককে কুপিয়ে আহত করেছেন। এর মধ্যে মহসিন নামের একজনকে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসাপাতালে পাঠানো হয়েছে। তবে ওই ভোটকেন্দ্রের প্রাঙ্গণে ভোটগ্রহণ নির্বিঘ্নে চলছে বলে দাবি করেন ওসি সামছুদ্দিন।