চসিক নির্বাচন সামনে রেখে তৎপর ছাত্রলীগের কিশোর গ্যাং
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০১:০৭ এএম, ১৭ জানুয়ারী,রবিবার,২০২১ | আপডেট: ১২:২৪ এএম, ২৩ নভেম্বর,শনিবার,২০২৪
রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় চট্টগ্রামে কিশোর গ্যাংগুলো ধীরে ধীরে নিয়ন্ত্রণহীন হয়ে পড়ছে। মাদক ব্যবসা-চাঁদাবাজিসহ এলাকার নিয়ন্ত্রণে ব্যবহার করা হচ্ছে তাদের। আর দলীয় প্রভাবের কারণে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে ব্যবস্থা নিতে বেগ পেতে হচ্ছে। নগরীতে এ ধরনের ১৫ থেকে ২৫টি কিশোর গ্রুপের আধিপত্য রয়েছে বলে পুলিশের কাছে তথ্য রয়েছে।
সিএমপি উপকমিশনার বিজয় বসাক এ প্রসঙ্গে বলেন, হত্যা, ধর্ষণ, চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন অপরাধে জড়িত এরা। এদের কোনো রাজনৈতিক পদ পদবী নেই। কিন্তু ঠিকই বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কথিত ‘ভাই’দের পক্ষ নিয়ে তারা ব্যবহৃত হচ্ছে। আমরা তাদের নিয়ন্ত্রণে আনতে কখনো মামলা দিয়ে চালান করছি, কখনো আবার অভিভাবকের জিম্মায় তাদের দিয়ে দিচ্ছি।
গত কয়েক মাসে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিশেষ অভিযানে গ্রেফতার হয়েছে শতাধিক কিশোর। তারপরও নিয়ন্ত্রণে আসছে না কিশোর অপরাধীরা। বরং সৃষ্টি হচ্ছে নতুন নতুন গ্রুপ। গত ১২ জানুয়ারি রাতে নগরীর মোগলটুলী এলাকায় সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে ২৮নং ওয়ার্ডের দুই কাউন্সিলর প্রার্থী নজরুল ইসলাম বাহাদুর ও আবদুল কাদেরের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় উভয়পক্ষে কিশোর গ্যাংয়ের উপস্থিতি চোখে পড়ে। চসিক নির্বাচনকে কেন্দ্র করে অলিগলিতে এখন বেশ তৎপর কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা। অর্থের বিনিময়ে বিভিন্ন প্রার্থীর পক্ষে প্রচারণায় অংশ নিচ্ছে তারা, শ্লোগান দিচ্ছে, মাইকিং করছে, আবার প্রয়োজনে সংঘর্ষেও জড়িয়ে পড়ছে।
বর্তমানে নগরজুড়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর মাথাব্যথার কারণ হয়ে উঠেছে চট্টগ্রামের কিশোর গ্যাং। নিত্যনতুন কৌশলে চুরি-ছিনতাই ও খুনের ঘটনায় যারা ধরা পড়ছে তাদের মধ্যে কিশোর অপরাধীর সংখ্যাই বেশি দেখা যাচ্ছে। ২০১৮ সালের ১৬ জানুয়ারি কলেজিয়েট স্কুলের নবম শ্রেণির ছাত্র আদনান খুন হওয়ার মধ্য দিয়ে কিশোর গ্যাংয়ের আধিপত্য প্রকাশ্যে আসে। ওই ঘটনার পর ১৬টি থানায় কিশোর গ্যাংয়ের তালিকা করা হয়। ওই বছর ছোট-বড় কিশোর গ্যাং-এর ৫৫০ জন কিশোর তালিকাভুক্ত হয়। এছাড়া নগরীর ৩০০টি স্পটকে এসব কিশোরের আড্ডাস্থল হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। কোচিংভিত্তিক, রাজনৈতিক, স্কুল-কলেজভিত্তিক, চাকরিজীবী এই ধরনের অন্তত ১৫টি ক্যাটাগরির তালিকা করা হয়েছিল। পুলিশ কিশোর অপরাধী চক্রের (কিশোর গ্যাং) ৪৮ জন পৃষ্ঠপোষক বা গডফাদারের তালিকা করে। যার মধ্যে ১৭ জনের সম্পৃক্ততা পাওয়া গেছে ক্ষমতাসীনদের সঙ্গে, ৫ জন সরকারবিরোধী বিভিন্ন সংগঠনের পদধারী নেতা। ১৩ জনের দলীয় পদ-পদবী না থাকলেও রাজনৈতিক অঙ্গনে তারা প্রভাবশালী। বাকি ১১ জন পৃষ্ঠপোষক স্থানীয় টপটেরর।
সিএমপির অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (গোয়েন্দা-উত্তর) শাহ মোহাম্মদ আবদুর রউফ এ প্রসঙ্গে বলেন, কিশোর অপরাধী এবং আড্ডাস্থলের যে তালিকা আগে করা হয়েছিল, সেটিকেই পরিবর্তন, পরিবর্ধন করে নতুন তালিকা করা হয়েছে। সে অনুযায়ী অভিযান চলছে, গ্যাং লিডাররা গ্রেফতার হচ্ছে।