ইভটিজিংকে কেন্দ্র করে ইউপি চেয়ারম্যানের ওপর কিশোর গ্যাংয়ের হামলা
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৫:১৩ পিএম, ১১ মে,
বুধবার,২০২২ | আপডেট: ০৮:৫৩ এএম, ২১ নভেম্বর,বৃহস্পতিবার,২০২৪
নোয়াখালীর সেনবাগ উপজেলায় ইভটিজিংকে কেন্দ্র করে ৯নং নবীপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো.বেলায়েত হোসেন সোহেলের ওপর হামলা চালিয়েছে কিশোর গ্যাং। এ ঘটনায় স্থানীয়রা কয়েকটি দেশীয় অস্ত্রসহ কিশোর গ্যাংয়ের চার সদস্যকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করে।
গতকাল মঙ্গলবার (১০ মে) সন্ধ্যা ৬টার দিকে ওই ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের গোপালপুর গ্রামের নূরানী মাদ্রাসা সংলগ্ন কালামিয়ার টেক এলাকায় এ হামলার ঘটনা ঘটে।
আটককৃত কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা হলো, নবীপুর ইউনিয়নের গোপালপুর গ্রামের অন্তর (১৯) ও বেগমগঞ্জ উপজেলার রফিকপুর গ্রামের টিপু (২৪) আবদুল গনি পারভেজ (২৫) ইমরান হোসেন ওরফে শান্ত (২০)।
নবীপুর ইউনিয়নের ২নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য (মেম্বার) আবদুল ছোবহান জানান, গতকাল মঙ্গলবার দুপুরের দিকে নবীপুর ইউনিয়নের ২নম্বর ওয়ার্ডের গোপালপুর গ্রামের জসিমের নতুন বাড়িতে কিশোরী মেয়েরা বাড়ির পুকুরে গোসল করতে গেলে ইভটিজিং করে একই গ্রামের হারিস মোল্লার বাড়ির বাশারের ছেলে ইভটিজার রবি (২৩) ও তার সাঙ্গপাঙ্গরা। সে দীর্ঘদিন থেকে ওই মেয়েদের উক্ত্যক্ত করে আসছে। পরে ভুক্তভোগী কিশোরীদের পরিবার বিষয়টি স্থানীয় ইউপি সদস্য ও চেয়ারম্যানকে জানায়। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের অবহিত করার অভিযোগে বিকেলের দিকে রবি ও কিশোর গ্যাংয়ের বহিরাগত সদস্যরা ইভটিজিংয়ের শিকার কিশোরীদের বসতঘরে হামলা চালায় এবং তাদেরকে শারীরিক ভাবে লাঞ্ছিত করে।
ইউপি সদস্য আরো জানায়, খবর পেয়ে চেয়ারম্যান আমাকে ঘটনাস্থলে পাঠালে বহিরাগত কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা চলে যায়। একপর্যায়ে কিশোর গ্যাং বাহিনীর প্রধান রবির মা ও ইভটিজিংয়ের শিকার কিশোরীদের মায়ের মধ্যে তুমুল বাকবিতন্ডা বেধে যায়। তখন আমি বিষয়টি চেয়ারম্যান কে জানাই। যে এ সমস্যা আমার পক্ষে সমাধান করা সম্ভব নয়। তখন চেয়ারম্যান আমাকে জানায় আপনি ঘটনাস্থলে থাকেন আমি আসছি।
ইউপি সদস্য জানায়,চেয়ারম্যান এসে দুই পক্ষকে নিবৃত করে। অভিযুক্ত রবিকে চেয়ারম্যানের প্রাইভেট কারে তুলে নেয়। একপর্যায়ে আসস্মিক রবির কিশোর গ্যাংয়ের ৩০-৩৫জন সদস্য চেয়ারম্যান ও তাঁর ভাগনে নজরুল ইসলামের (৩৫) ওপর হকিস্টিক, রড দিয়ে হামলা চালায়। এতে চেয়ারম্যান বাম চোখে ও কপালে গুরুত্বর আঘাত পায়। হামলাকারীরা চেয়ারম্যানের ব্যবহৃত প্রাইভেটকারও ভাংচুর করে।
খবর পেয়ে এলাকাবাসী এগিয়ে এলে হামলাকারীরা পালিয়ে যাওয়ার সময় চারজনকে আটক করে স্থানীয়রা। পরে চেয়ারম্যানকে উদ্ধার করে সেনবাগ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়। সেখান থেকে রাত পৌনে ১টার দিকে তাদেরকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ৯নং নবীপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো.বেলায়েত হোসেন সোহেল বলেন, ইভটিজিং নিয়ে বিরোধের জের ধরে ইভটিজার কিশোর গ্যাং বাহিনীর সদস্যরা এ হামলা চালায়। এ ঘটনায় থানায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করেন সেনবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইকবাল হোসেন পাটোয়ারী। তিনি বলেন, ইভটিজিংকে কেন্দ্র করে উদ্ভুত পরিস্থিতিতে চেয়ারম্যান সমস্যা সমাধানে গেলে তাঁর ওপর হামলার এ ঘটনা ঘটে। পরে স্থানীয় লোকজন চারজনকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করে। আটককৃতদের থানায় এনে রাখা হয়েছে। ভুক্তভোগীদের লিখিত এজহার পেলে আটকৃতদের ওই মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে নোয়াখালী চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে সোপর্দ করা হবে।