সিলেটে টিপ নিয়ে আপত্তিকর পোস্ট, পুলিশ কর্মকর্তা প্রত্যাহার
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৪:২৬ পিএম, ৫ এপ্রিল,মঙ্গলবার,২০২২ | আপডেট: ০১:২৪ পিএম, ২০ নভেম্বর,
বুধবার,২০২৪
টিপ নিয়ে ফেসবুকে আপত্তিকর পোস্ট দেওয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে সিলেটে লিয়াকত আলী নামে এক পুলিশ কর্মকর্তাকে প্রত্যাহার করা হয়েছে।
গতকাল সোমবার (৪ এপ্রিল) রাত সাড়ে ১০টার দিকে তাঁকে পুলিশ লাইনসে প্রত্যাহার করা হয়। তিনি সিলেট জেলার কোর্ট পরিদর্শক।
টিপ পরায় ঢাকার এক কলেজ শিক্ষিকাকে হেনস্তা করার প্রতিবাদে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে অনেক পুরুষ নিজেদের কপালে টিপ পরে প্রতীকী প্রতিবাদ জানান। এটিকে কটাক্ষ করে গতকাল সোমবার দুপুরে ফেসবুকে একটি পোস্ট দেন লিয়াকত আলী। পুলিশ কর্মকর্তার পোস্টটিকে ‘আপত্তিকর’ উল্লেখ করে ফেসবুকে সমালোচনা শুরু হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে রাতেই তাঁকে প্রত্যাহার করা হয়। ঘটনা তদন্তে তিন সদস্যের একটি কমিটি করা হয়েছে। আগামী তিন কার্যদিবসের মধ্যে কমিটিকে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গতকাল দুপুরে লিয়াকত আলী তাঁর ব্যক্তিগত ফেসবুক আইডিতে একটা পোস্ট দেন। সিলেটের নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ পোস্টে বলা আপত্তিকর কথাবার্তার ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানান।
এ বিষয়ে জানতে গতকাল রাত ১১টার দিকে যোগাযোগ করা হলে পরিদর্শক লিয়াকত আলী বলেন, ‘নারী আমার কাছে সম্মানের ও শ্রদ্ধার। তাঁদের হেয় করে কোনো কথা আমি পোস্টে লিখিনি। ঢাকায় এক শিক্ষিকাকে হেনস্তার ঘটনায় যেভাবে পুরুষেরা কপালে টিপ দিয়ে প্রতিবাদ জানাচ্ছেন, এর জের ধরে আমি নিজের প্রতিক্রিয়া জানিয়েছি। পরে বিরূপ প্রতিক্রিয়া তৈরি হওয়ায় পোস্ট ডিলিট করে দিয়েছি।’
সিলেটের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. লুৎফর রহমান বলেন, সিলেটের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ ফরিদ উদ্দিন ঘটনাটি জানতে পেরে তাৎক্ষণিক লিয়াকত আলীকে পুলিশ লাইনসে প্রত্যাহার করে নিয়েছেন। এ ঘটনা তদন্তে তাঁকে (মো. লুৎফর রহমান) প্রধান করে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির সদস্য হিসেবে এএসপি শেখ মুক্তাজুল ইসলাম ও পরিদর্শক আসাবুর রহমান আছেন। আগামী তিন কার্যদিবসের মধ্যে কমিটি প্রতিবেদন দেবে।
মো. লুৎফুর রহমান বলেন, ‘পুলিশ কর্মকর্তা লিয়াকত অশালীন ভাষায় ফেসবুকে পোস্ট দিয়েছেন। পুলিশ বাহিনীর কোনো সদস্যের ব্যক্তিগত দায় কখনোই পুরো বাহিনী নেবে না। আজই পুলিশ সদর দপ্তরে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানিয়ে চিঠি পাঠানো হবে। পুরো ঘটনা তদন্তে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
এর আগে টিপ পরায় গত শনিবার পুলিশের হেনস্তার শিকার হওয়ার কথা জানিয়ে ঢাকার তেজগাঁও কলেজের থিয়েটার অ্যান্ড মিডিয়া স্টাডিজ বিভাগের প্রভাষক লতা সমাদ্দার শেরেবাংলা নগর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। পুলিশের পোশাক পরা একজনের বিরুদ্ধে ইভটিজিং ও প্রাণনাশের চেষ্টার অভিযোগ করা হয় ওই জিডিতে। ওই খবর প্রকাশিত হলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শুরু হয় তীব্র সমালোচনা।
এর প্রতিবাদে অনেক পুরুষ কপালে টিপ লাগিয়ে ফেসবুকে সে ছবি পোস্ট দিয়ে প্রতিবাদ জানান। পরে আজ সোমবার এ ঘটনায় নাজমুল তারেক নামে পুলিশের এক কনস্টেবলকে চিহ্নিত করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর পুলিশের তেজগাঁও বিভাগের উপকমিশনার বিপ্লব কুমার সরকার।