আসামির স্বজনের সঙ্গে ফোনালাপ ফাঁস, ওসি প্রত্যাহার
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৬:২৫ পিএম, ১৬ মার্চ,
বুধবার,২০২২ | আপডেট: ০৮:৫৮ এএম, ২১ নভেম্বর,বৃহস্পতিবার,২০২৪
গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. তৌহিদুজ্জামানকে প্রত্যাহার করা হয়েছে।
গতকাল মঙ্গলবার (১৫ মার্চ) রাতে তাঁকে গাইবান্ধা পুলিশ লাইনসে প্রত্যাহার করা হয়।
গাইবান্ধার ব্যবসায়ী হাসান আলী হত্যা মামলার দুই আসামির স্বজনের সঙ্গে ঘুষ লেনদেনের ফোনালাপ ফাঁসের ঘটনায় তাঁর বিরুদ্ধে এ ব্যবস্থা নেওয়া হয়।
আজ বুধবার সকালে গাইবান্ধার পুলিশ সুপার মুহাম্মদ তৌহিদুল ইসলাম এ খবরের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ওসি মো. তৌহিদুজ্জামানের বিরুদ্ধে খবর প্রকাশিত হয়েছে, অভিযোগ তদন্ত করার জন্য তাঁকে প্রত্যাহার করা হয়েছে।
গত বছরের ১০ এপ্রিল গাইবান্ধায় আওয়ামী লীগ নেতা মাসুদ রানার বাসা থেকে ব্যবসায়ী হাসান আলীর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় মাসুদসহ তিনজনকে আসামি করে হত্যা মামলা হয়। অপর দুই আসামি হচ্ছেন রুমেল হক ও খলিলুর রহমান। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা গাইবান্ধা পুলিশের গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) তৎকালীন ওসি মো. তৌহিদুজ্জামানের সঙ্গে মামলার এই দুই আসামির স্বজনের ঘুষ লেনদেনের ফোনালাপ ফাঁস হয়। মামলার অভিযোগপত্র থেকে দুই আসামির নাম বাদ দেওয়া ও আইনের ধারা কমিয়ে দিতে টাকা লেনদেনের কথাবার্তা হয়। কথামতো কাজ না হওয়ায় টাকা ফেরত দেওয়ার বিষয়ও ফোনালাপে ছিল। পাঁচ দফায় তাঁদের মধ্যে প্রায় ১৭ মিনিট ফোনালাপ হয়। ফোনালাপটি গণমাধ্যমে প্রচারিত হলে সেটি বেশ আলোচনার জন্ম দেয়।
গত বছরের ১০ এপ্রিল গাইবান্ধা জেলা আওয়ামী লীগের বহিষ্কৃত উপদপ্তর সম্পাদক মাসুদ রানার (৪২) বাসা থেকে ব্যবসায়ী হাসান আলীর (৪৫) লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। গাইবান্ধা শহরের নারায়ণপুর এলাকায় মাসুদের বাসা। মাসুদ রানা দাদন ব্যবসা করতেন। প্রায় দুই বছর আগে রানার কাছ থেকে পাঁচ লাখ টাকা ঋণ নেন শহরের স্টেশন রোডের জুতা ব্যবসায়ী হাসান আলী। এই টাকা সুদাসলে ১৯ লাখে দাঁড়ায়। সুদের টাকা দিতে না পারায় গত বছরের ৬ মার্চ লালমনিরহাট থেকে হাসানকে মোটরসাইকেলে তুলে আনেন মাসুদ। তিনি হাসানকে নিজ বাসায় এক মাসের বেশি আটকে রেখেছিলেন।
লাশ উদ্ধারের ঘটনায় হাসান আলীর স্ত্রী বীথি বেগম সদর থানায় মাসুদ রানাসহ তিনজনকে আসামি করে হত্যা মামলা করেন। তদন্তকারী কর্মকর্তা হিসেবে মো. তৌহিদুজ্জামান দুজনকে অভিযুক্ত করে চলতি বছরের ১৬ জানুয়ারি আদালতে অভিযোগপত্র দেন। ১৮ জানুয়ারি তিনি সুন্দরগঞ্জের ওসি হিসেবে বদলি হন। পরে ৭ মার্চ আদালতের নির্দেশে তিনজনকে অভিযুক্ত করে সংশোধিত অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়।