কপোতাক্ষ নদে টিআরএম প্রকল্প চালুর দাবি এলাকাবাসীর
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১১:০২ পিএম, ১১ মার্চ,শুক্রবার,২০২২ | আপডেট: ০৮:৫৮ এএম, ২১ নভেম্বর,বৃহস্পতিবার,২০২৪
কপোতাক্ষ নদে দ্বিতীয় মেয়াদী টিআরএম চালু না হওয়ায় আবারো পলি জমে নদ ভরাট হতে শুরু করেছে। এতে সরকারের কোটি কোটি টাকার প্রকল্প ভেস্তে যাওয়ার উপক্রম। স্থানীয় এলাকাবাসী জমি অধিগ্রহণের টাকাসহ পুনরায় টিআরএম (পলি ব্যবস্থাপনা) চালুর জোর দাবি জানিয়েছেন।
সূত্রে জানা যায়, কপোতাক্ষ নদের জলাবদ্ধতা দূরীকরণ প্রকল্পের প্রথম পর্যায়ের কার্যক্রম ২০১৭ সালের জুন মাসে সমাপ্ত হয়। ফলে তালা উপজেলার পাখিমারা বিলে টিআরএম বাস্তবায়ন হয়। এতে বিশাল কপোতাক্ষ অববাহিকার প্রায় ২০ লক্ষ অধিবাসী সরাসরি উপকৃত হয়। দীর্ঘদিনের জলাবদ্ধতা দূরীভূত হওয়ায় মানুষের জীবন জীবিকায় ফিরে আসে স্বস্তির নিঃশ্বাস।
এদিকে কপোতাক্ষ নদের জলাবদ্ধতা দূরীকরণ প্রকল্প (২য় পর্যায়) অনুমোদন দিয়েছে সরকার। এতে প্রকল্প বাস্তবায়নে খরচ হবে ৫৩১ কোটি ৭ লাখ টাকা। তবে দ্বিতীয় পর্যায়ে এই কার্যক্রম বাস্তবায়নে আবারো দেখা দিয়েছে জটিলতা। জমি মালিকদের অধিগ্রহণের টাকাসহ (হারি) নানা জটিলতায় প্রকল্পের পেরিফেরিয়াল বাঁধে কাজ করা সম্ভব হয়ে উঠেনি। সব সমস্যা কাটিয়ে স্বচ্ছতার সাথে এ প্রকল্প বাস্তবায়নের দাবী জানান এলাকাবাসী।
স্থানীয় দোহার গ্রামের সোহরাফ হোসেন জানান, এই প্রকল্পের আওতায় থাকা তার পরিবারের ৫ বিঘা জমির হারির টাকা আজও পায়নি। পুনরায় টিআরএম চালু হলেও প্রথম কিংবা দ্বিতীয় পর্যায়ের কোন হারির টাকাই তিনি এখনও পাননি।
তালা উপজেলা পানি কমিটির সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা ময়নুল ইসলাম বলেন, জনগণের কাছে পূর্বের দেয়া প্রতিশ্রুতি ও প্রকল্পের সফলতা রক্ষায় সরকার ‘কপোতাক্ষ নদের জলাবদ্ধতা দূরীকরণ দ্বিতীয় পর্যায়ে প্রকল্প অনুমোদন দেয়। অনুমোদিত প্রকল্পটিতে কপোতাক্ষ অববাহিকার জলাবদ্ধতা নিরসন কল্পে টিআরএমকে যুক্ত করে কপোতাক্ষ নদ উজান অংশে যশোর জেলার চৌগাছা উপজেলার তাহেরপুর হতে মনিরামপুর উপজেলার চাকলা ব্রীজ পর্যন্ত ৭৫ কিমি. এবং নিম্নাংশে খুলনা জেলার পাইকগাছা উপজেলার বোয়ালিয়া হতে কয়রা উপজেলার আমাদী পর্যন্ত ৩০ কিমি. নদী খনন, তীর প্রতিরক্ষা কাজ বাস্তবায়ন, নিষ্কাশন অবকাঠামো নির্মাণ ও মেরামত করা, কপোতাক্ষ নদের দুই তীরে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ মেরামত করাসহ নদের সাথে সংযুক্ত খাল খনন করা কার্যক্রম অন্তর্ভূক্ত রয়েছে।
তালা উপজেলা পানি কমিটির সাধারণ সম্পাদক মীর জিল্লুর রহমান জানান, টিআরএম চালুর কাজ শুরু হয়েছে। কিন্তু বিলের পেরিফেরিয়াল বাঁধ নড়বড়ে ও দুর্বল হয়ে পড়েছে। ক্ষতিপূরণ প্রাপ্তিসহ বিল ব্যবস্থাপনায় দেখা দিয়েছে বিভিন্ন ধরণের চরম বিশৃঙ্খলা। তাই প্রকল্পের ডিজাইন অনুযায়ী নদী খনন জরুরী হয়ে পড়েছে। কারণ নদী দ্রুত পলি ভরাট হয়ে পুনরায় মৃত্যুমুখে পতিত হচ্ছে। সে কারণে সংস্কার পূর্বক অতিদ্রুত টিআরএম চালু এবং গুরুত্ব দিয়ে সরকারের “অশগ্রহণমূলক পানি ব্যবস্থাপনা নীতিমালা” এর আলোকে উক্ত প্রকল্পের আওতায় দাবীদার ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণ প্রদান করা হোক এটাই জনগণের দাবী।
যশোর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. তহিদুল ইসলাম বলেন, ‘অনেকের জমির কাগজপত্র ঠিক না থাকায় তাদের হারি পেতে বিলম্ব হচ্ছে।’