চট্টগ্রামে গার্মেন্টস খাতে কমেছে অর্ডার
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১২:৪৮ এএম, ৭ জানুয়ারী,বৃহস্পতিবার,২০২১ | আপডেট: ০৩:৩২ পিএম, ৮ নভেম্বর,শুক্রবার,২০২৪
করোনার প্রথম ধাক্কা কাটিয়ে সুদিন ফিরতে শুরু করার মাত্র মাস দুয়েকের মধ্যে সেকেন্ড ওয়েভের মুখে পড়েছে দেশের গার্মেন্টস খাত। করোনার সেকেন্ড ওয়েভে ইউরোপ আমেরিকার ক্রেতারা শত শত কোটি টাকার অর্ডার বাতিল করছে। চট্টগ্রামের তিন শতাধিক গার্মেন্টস কারখানার অধিকাংশই সীমিত পরিসরে উৎপাদন করছে। পুরোদমে উৎপাদন করার মতো অর্ডার কোনো গার্মেন্টসেরই নেই। এ অবস্থায় আসন্ন মৌসুমের পুরো ব্যবসা হাত ছাড়া হওয়ার আশংকা প্রকাশ করা হয়েছে।
বিজিএমইএ সূত্র জানায়, চীনের উহানে করোনা সংক্রমণের জের ধরে দেশের তৈরি পোশাক খাত ভয়াবহ রকমের বিপর্যয়ে পড়ে। চীন থেকে কাঁচামাল আমদানি বন্ধ হওয়ায় করোনার শুরু থেকে বাংলাদেশের গার্মেন্টস সেক্টর সংকট মোকাবিলা করতে থাকে। পরবর্তীতে করোনার ধাক্কায় পুরো বিশ্ব থমকে যায়। এতে গার্মেন্টস খাতে বড় ধরনের ধস দেখা দেয়। চীন থেকে এক্সেসরিজ আমদানি বন্ধ ও ইউরোপ আমেরিকার অর্ডার স্থগিত হওয়ায় তৈরি পোশাক খাতের রফতানি তলানিতে এসে ঠেকে। একের পর এক অর্ডার হারিয়ে গার্মেন্টস কারখানাগুলো দিশেহারা হয়ে যায়। ওই সময় বিশ্বের প্রায় তিন শতাধিক ক্রেতা প্রতিষ্ঠান দেশের গার্মেন্টসগুলোর প্রায় ৩১৫ কোটি ডলারের (প্রায় ২৭ হাজার কোটি টাকা) রফতানি আদেশ স্থগিত বা বাতিল করে। ২০১৯-২০ অর্থবছরে তৈরি পোশাক খাতের রফতানি নেমে আসে ২৭৯৫ কোটি ডলারে, যা আগের বছরের চেয়ে ৬১৮ কোটি ডলার বা প্রায় ৫৮ হাজার কোটি টাকা কম।
এর আগে তৈরি পোশাক খাতে আর কখনো রফতানি আয়ে এত বড় ধস নামেনি। চীনে করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসার পর ব্যাপক হারে পণ্য আমদানি শুরু হয়। ইউরোপ আমেরিকার দেশগুলো করোনা পরিস্থিতির প্রথম ধাক্কা সামলে উঠে বিভিন্ন ক্রেতা প্রতিষ্ঠান অর্ডার দিতে শুরু করে। বাংলাদেশের গার্মেন্টস সেক্টর কোটি কোটি ডলারের অর্ডার নিয়ে দর কষাকষি করে। করে দফারফা। অর্ডার দেয়ার ব্যাপারে ক্রেতা প্রতিষ্ঠানগুলো সিদ্ধান্ত নেয়ার আগেই করোনার দ্বিতীয় ধাক্কা শুরু হয় ইউরোপ, আমেরিকায়। এতে ক্রেতা প্রতিষ্ঠানগুলো আবারো পিছিয়ে পড়ে। ইউরোপ আমেরিকার ক্রেতা প্রতিষ্ঠানগুলোও ‘নিউ নরম্যালে’ অভ্যস্ত হওয়ার আগেই দ্বিতীয় ধাক্কায় আবারো সবকিছু লন্ডভন্ড করে দিচ্ছে। হাজার হাজার মানুষ মারা যাওয়া ছাড়াও লাখ লাখ মানুষ আক্রান্ত হওয়ার ঘটনায় দিশেহারা ক্রেতারা অর্ডার না দিয়ে পিছু হটে। কোনো কোনো ক্রেতা প্রতিষ্ঠান ৩০ থেকে ৩৫ শতাংশ কমিয়ে অর্ডার দেয়।
এ অবস্থায় চট্টগ্রামের প্রায় তিন শ গার্মেন্টস কারখানার প্রতিটিই অর্ডার সংকটে ভুগছে। করোনার দ্বিতীয় ধাক্কায় বিপাকে পড়েছে দেশের গার্মেন্টস খাত।
বিজিএমইএর সাবেক প্রথম সহ-সভাপতি এস এম আবু তৈয়ব গতকাল বলেন, ইউরোপ, আমেরিকার দেশগুলো অর্ডার কমিয়ে দিয়েছে। করোনা পরিস্থিতির অবনতিতে পণ্য বিক্রি নিয়ে সংকটে পড়েছেন ক্রেতারা। এ অবস্থায় তারা অর্ডার কমিয়ে দিয়েছে। বিভিন্ন আনুষ্ঠানিকতা শেষ করা হলেও শেষ মুহূর্তে অর্ডার কমিয়ে দেয়ায় দেশের প্রতিটি গার্মেন্টস কমবেশি ক্ষতির মুখে পড়েছে।