অব্যাহত নাব্যতা হ্রাসে অস্তিত্ব সংকটে ঐতিহ্যবাহী শিবসা নদী
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৬:০৪ পিএম, ১৮ জানুয়ারী,মঙ্গলবার,২০২২ | আপডেট: ০৯:০৩ এএম, ২১ নভেম্বর,বৃহস্পতিবার,২০২৪
অব্যাহত নাব্যতা হ্রাসে খুলনার পাইকগাছা উপজেলার ঐতিহ্যবাহী শিবসা নদী ভরাট হয়ে রীতিমত এখন গোচরণ ভুমিতে পরিনত হয়েছে। দ্রুত নদী খননের উদ্যোগ না থাকায় চরম দুর্ভোগে আতংকে রয়েছেন নদী তীরবর্তী বাসিন্দারা।
এদিকে বিভিন্ন সময় নানা অবৈধ উপায়ে প্রভাবশালীরা শিবসার চরভরাটি জমি দখলে নিলেও কার্যত তাদের কারো বিরুদ্ধে এখন পর্যন্ত কোন প্রকার ব্যবস্থা গ্রহন কিংবা দখল হয়ে যাওয়া সরকারী সম্পত্তি পুনরুদ্ধারে পদক্ষেপ গ্রহন না করায় ফের পৌরসভার শিববাড়ি এলাকার শিবসা নদীর চরভরাটি প্রায় ১০ বিঘা জমি অবৈধভাবে বাঁধ দিয়ে দখলে নিচ্ছে কয়েকজন প্রভাবশালী ভূমিদস্যুরা।
স্থানীয়রা জানায়, পৌরসভার ৯নং ওয়ার্ডের শিববাড়ি এলাকার শিবসা নদীর চরভরাটি অঞ্চলের প্রায় ১০ বিঘা জমি স্কেভেটর দিয়ে অবৈধভাবে বাঁধ দিয়ে উপজেলার গদাইপুর ইউনিয়নের গোপালপুর গ্রামের বাবর আলী গাজীর ছেলে ভূমি দস্যু আঃ মজিদ জাহাঙ্গীর ও সাইফুল ইসলাম নিজেদের দখলে নিচ্ছে। এ ব্যাপারে অভিযুক্ত দখলদাররা জানায়,তারা নদীর চরভরাটি জায়গা দখল করছে না, এমনকি কে দখল করছে তাও তারা বলতে পারেনা ।
এব্যাপারে পৌরসভার প্যানেল মেয়র মাহবুবুর রহমান রঞ্জু জানান, তিনি স্থানীয় কয়েকজনের মাধ্যমে কিছুক্ষণ আগে দখলের খবরটি শুনেছেন। তাৎক্ষণিক তিনি ঘটনাস্থল পরিদর্শণপূর্বক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন বলেও আশ্বস্ত করেন।
প্রসঙ্গত, উপজেলার পৌরসভার প্রাণ কেন্দ্র ঘেঁষে বয়ে চলা এক সময়ের খরস্রােতা শিবসা নদীতে কিছু দিন আগেও নিয়মিত চলতো নৌকা, লঞ্চ, স্টিমারসহ বিভিন্ন নৌযান। খুলনার কয়রা-পাইকগাছা ও বড়দলসহ বিস্তির্ণ অঞ্চলের মানুষ সহজে নৌ পথেই যাতায়াত করতো। জেলা সদর খুলনা থেকে সরাসরি পাইকারী মালামাল আনা-নেয়া হতো নৌ-পথেই। অথচ মাত্র কয়েক বছরের ব্যবধানেই প্রমত্তা শিবসা পলিভরাট হয়ে পরিণত হয়েছে সমতল ভূমিতে। বিস্তির্ণ অঞ্চল জুড়ে জেগে ওঠা চরে নতুন ঘাস জন্মে পরিণত হয়েছে গোচারণ ভূমিতে। স্থানীয়রা চরভরাটি জমিতে গবাদি পশু চারণের পাশাপাশি ক্রমশ দখলে নিচ্ছে জেগে ওঠা চরের বিস্তির্ণ এলাকা।
পাইকগাছা পানি উন্নয়ন বোর্ডের এসও রাজু আহম্মেদ জানান, অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদ পূর্বব নদী খনন না হওয়া পর্যন্ত এ সমস্যা সমাধানের কোন বিকল্প নেই। নদীটি খননের জন্য সরকারের সংশ্লিষ্ট কৃর্তপক্ষকে লিখিতভাবে অবহিত করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।
এদিকে শিবসার অব্যাহত নাব্যতা হ্রাস ও ধারাবাহিক দখল প্রক্রিয়ায় দূর্ভোগের পাশাপাশি বিভিন্ন আশংকায় রয়েছেন নদী তীরবর্তী বাসিন্দারা। তারা অচিরেই নদী খননের পাশাপাশি দখলদারদের ঠেকাতে প্রশাসনকে সোচ্চার হওয়ার দাবি জানান।