‘পুলিশের মারধরে স্কুলছাত্রীকে হত্যার স্বীকারোক্তি দিয়েছিল আসামিরা’
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৭:৩৮ পিএম, ৫ জানুয়ারী,মঙ্গলবার,২০২১ | আপডেট: ১২:৪৩ এএম, ২৪ নভেম্বর,রবিবার,২০২৪
নারায়ণগঞ্জে স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণের পর হত্যার অভিযোগে করা মামলায় আসামিদের স্বীকারোক্তি আদায় সংক্রান্ত সদর থানার কার্যক্রমের বিষয়ে বিচারিক তদন্ত প্রতিবেদন হাইকোর্টে জমা দেওয়া হয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পুলিশ তিন আসামিকে মারধর ও ভয় দেখিয়ে জবানবন্দি আদায় করেছিল আর এই কাজটি করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানার এসআই শামীম আল মামুন। হাইকোর্টে দাখিল করা বিচারিক অনুসন্ধান প্রতিবেদনে এই সত্যতা বেরিয়ে এসেছে। ঐ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তিন আসামির ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি রেকর্ডের ক্ষেত্রে জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের কোন অনিয়ম পাওয়া যায় নাই।
মামলার এজাহার, সাক্ষীদের জবানবন্দি, আসামিদের জবানবন্দি ও ভিকটিমের জবানবন্দি পর্যালোচনা করে এই রিপোর্ট দিয়েছেন নারায়ণগঞ্জের চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ফারহানা ফেরদৌস। রিপোর্টে নির্যাতন করে জবানবন্দি আদায়ের বিষয়ে তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের ডিভিশন বেঞ্চে এ রিপোর্টের উপর আজ শুনানি হবে।
জীবিত থাকার পরও নারায়ণগঞ্জের স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণের পর হত্যার অভিযোগে দায়ের করা মামলায় আসামিদের স্বীকারোক্তি আদায় সংক্রান্ত সদর থানার কার্যক্রমের বিষয়ে বিচারিক তদন্ত প্রতিবেদন গতকাল হাইকোর্টে জমা দেওয়া হয়।
এর আগে জীবিত থাকার পরও নারায়ণগঞ্জের স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণের পর হত্যার অভিযোগে দায়ের করা মামলায় আসামিদের স্বীকারোক্তি আদায় সংক্রান্ত সদর থানার কার্যক্রমের বিষয়ে বিচারিক অনুসন্ধানের নির্দেশ দেয় হাইকোর্ট। একইসঙ্গে নারায়ণগঞ্জের চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটকে এই প্রতিবেদন হাইকোর্টে দাখিল করতে নির্দেশ দেওয়া হয়। ২০২০ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম এবং বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের নেতৃত্বাধীন হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
প্রসঙ্গত, গত ৪ জুলাই পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রী দিসা নিখোঁজ হয়। ৬ আগস্ট নিখোঁজ স্কুলছাত্রীর বাবা জাহাঙ্গীর হোসেন নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানায় অপহরণ মামলা দায়ের করেন। মামলার পর পুলিশ আব্দুল্লাহ, রকিব এবং খলিল নামে তিন জনকে গ্রেফতার করেন। তারা আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়। স্বীকারোক্তিতে তারা বলে যে, তারা দিসাকে ধর্ষণের পর হত্যা করে লাশ শীতলক্ষ্যা নদীতে ভাসিয়ে দেয়। জবানবন্দি গ্রহণের পর আসামিদের জেলে পাঠানো হয়। কিন্তু ২৩ আগস্ট দিসাকে খুঁজে পাওয়া যায়। সে বর্তমানে নারায়ণগঞ্জ সদর থানা পুলিশের হেফাজতে রয়েছে। কিন্তু ওই ঘটনায় প্রশ্ন উঠেছে, দিসা জীবিত থাকা সত্ত্বেও আসামিরা কীভাবে ধর্ষণ ও হত্যা সম্পর্কিত স্বীকারোক্তি দিলো।