লোহাগড়ায় সাজাপ্রাপ্ত আসামিকে আটক করা নিয়ে তুলকালাম কান্ড
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০১:৫৯ এএম, ৫ জানুয়ারী,মঙ্গলবার,২০২১ | আপডেট: ১২:১৬ পিএম, ১১ নভেম্বর,সোমবার,২০২৪
নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার জয়পুর ইউনিয়নের চাচই গ্রামে একজন সাজাপ্রাপ্ত আসামিকে গ্রেফতারের ঘটনাকে কেন্দ্র করে তুলকালাম কান্ড ঘটেছে।
পুলিশ হামলা চালিয়ে ১ জন প্রতিবন্ধীকে গরম পানি দিয়ে ঝলসে দিয়েছে। এ সময় পুলিশের তান্ডবে আরও ৮/৯ জন আহত হয়েছে। আহত ঝলসে যাওয়া প্রতিবন্ধীকে লোহাগড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে বর্তমানে ওই এলাকার মানুষের মাঝে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার চাচই গ্রামের পশ্চিম পাড়ার বীর মুক্তিযোদ্ধা সৈয়দ সায়েম আলীর ছেলে সৈয়দ রিজাউলের বিরুদ্ধে পার্শ্ববর্তী গ্রাম মরিচপাশা গ্রামের রানা সরদার ওরফে পাখি বিগত ২০১৮ সালে আদালতে একটি চেক ডিজ অনার মামলা দায়ের করেন এবং গত ২০১৯ সালের ২৭ নভেম্বর উক্ত মামলায় আদালত রিজাউলকে ৬ মাসের জেল ও ৫ লাখ টাকা জরিমানা করে। রায়ের পর থেকেই রিজাউল পলাতক ছিলেন।
এদিকে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে লোহাগড়া থানার এএসআই কামরুজ্জামানসহ সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে সাজাপ্রাপ্ত আসামি উক্ত রিজাউলকে গ্রেফতার করার জন্য শনিবার (২ জানুয়ারি) সন্ধ্যা ৭টার দিকে চাচই গ্রামের রিজাউলের বাড়িতে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করে থানার উদ্দেশ্যে রওনা দিলে ওই বাড়ির লোকজন পুলিশকে উদ্দেশ্য করে ‘চোর’ ‘চোর’ বলে চিৎকার করে। এএসআই কামরুজ্জামান আটক আসামিকে নিয়ে থানায় আসেন এবং থানার অফিসার ইনচার্জকে (ওসি) সৃষ্ট ঘটনা সম্পর্কে অবগত করেন।
ওইদিন রাত ৮টার দিকে লোহাগড়া থানায় কর্মরত ৮/১০ জন পুলিশ কর্মকর্তাসহ সঙ্গীয় কনস্টেবল ঘটনাস্থল চাচই গ্রামের ডাক্তার বাড়ি মোড়ে উপস্থিত হয়ে স্থানীয় মানুষজনদের ওপর লাঠি ও হকিস্টিক দিয়ে বেধড়ক লাঠিপেটা করে। এ সময় পুলিশ শারীরিক প্রতিবন্ধী মাখম শেখ (৫৪) ওপর চায়ের দোকানের কেটলির গরম পানি ঢেলে দেয়। এতে মাখমের শরীরের নিম্নাংশ ঝলসে যায়। রাতেই তাকে লোহাগড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। পুলিশের হামলায় ওই গ্রামের ফটিক খান (৭৫), আইয়ুব শিকদার (৬৬), তুহিন শিকদার (৩০), শাহজাহান (৪৫), লিটু জমাদ্দার (৪৫), ফারুক ফকির (২০), মাকসুদ মোল্যা (৪০), হাসান সরদার (৫১) কমবেশি আহত হয়।
শুধু তাই নয়, পুলিশ ক্ষুদ্র দোকানি আশরাফ, ইকবাল, মোস্তাইন, আলামিন, মাহাবুল ফকির, সিরাজ খান, মাকসুদ মোল্যা, হাসিব কাজী, আইয়ুব শিকদারের দোকানঘর ভাঙচুর করে। এ ব্যাপারে অভিযুক্ত এএসআই কামরুজ্জামানের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি সৃষ্ট ঘটনার ব্যাপারে কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি।
লোহাগড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সৈয়দ আশিকুর রহমান রবিবার দুপুরে আহত প্রতিবন্ধী মাখমকে দেখতে লোহাগড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যান এবং তার চিকিৎসার বিষয়ে খোঁজ-খবর নেন। এ ব্যপারে তিনি বলেন, পুলিশ বাড়াবাড়ি করেছে। তবে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সহযোগিতায় সৃষ্ট ঘটনা মীমাংসার জন্য চেষ্টা চলছে।