শেরপুরে ঐতিহ্যবাহী পৌষ মেলা অনুষ্ঠিত
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৭:০৭ পিএম, ১ জানুয়ারী,শনিবার,২০২২ | আপডেট: ১১:১৭ পিএম, ২৩ নভেম্বর,শনিবার,২০২৪
শেরপুরে ২০০ বছরের পুরোনা ঐতিহ্যবাহী পৌষ মেলা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
গতকাল শুক্রবার (৩১ ডিসেম্বর) বিকেলে শেরপুর পৌর এলাকার ১ নং ওয়ার্ডের নবীনগর মহল্লার ফসলি জমির মাঠে বসে এ মেলা। স্থানীয় নবীনগর এলাকাবাসী প্রায় শত বছর যাবত এ মেলার আয়োজন করে আসছে।
মেলায় বিভিন্ন পিঠা, মিষ্টি, সাজ, মুখরোচক খাবারসহ বাংলার ঐতিহ্যবাহী বিভিন্ন মজাদার খাবার বসে। এছাড়া শিশুদের বিভিন্ন ধরনের খেলনা, মাটির তৈরি বিভিন্ন আসবাবপত্র, মেয়েদের প্রসাধনী ও চুড়ি-মালার দোকান বসে। বেচা বিক্রিও চলে বেশ। মেলায় গ্রামের সাধারণ মানুষের পাশাপাশি শহরের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার হাজার হাজার নারী-পুরুষ ভিড় জমায়।
মেলায় প্রতি বছর অন্যতম আকর্ষণ ঘোর দৌড়ের পাশাপাশি গাঙ্গি খেলা ও সাইকেল রেস হলেও এবার র্যাফেল ড্র ও মিউজিক্যাল চেয়ার খেলা বৃদ্ধি করা হয়েছে। দিন দিন এ মেলার আকর্ষণ ও লোক সমাগমও বাড়ছে বলে আয়োজকরা জানায়।
এদিকে স্থানীয় গ্রামবাসীর ঘরে ঘরে চলে পিঠা-পায়েস খাওয়ার উৎসব। এ উৎসবকে ঘিরে প্রতি বাড়িতেই দূর-দূরান্তের আত্মীয়রা ছুটে আসে পিঠা খেতে এবং মেলা দেখতে। এক সময় বাঙ্গালির ঐতিহ্য ধরে রাখতে পূর্ব পুরুষদের রেওয়াজ অনুযায়ী গ্রামের মানুষ ভোরে উঠে হলুদ ও সর্ষেবাটা দিয়ে গোসল করতেন। বাড়ির মেয়েরা ব্যস্ত থাকতেন পিঠা-পায়েস তৈরিতে। দিন ব্যাপী চলতো অতিথি আপ্যায়ন। বিকেলে ছুটে যায় গ্রামের মেলার মাঠে।
খেলা শেষে বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করেন, শেরপুর পৌরসভার মেয়র গোলাম কিবরিয়া লিটন ও প্যানেল মেয়র মো. নজরুল ইসলাম।
শহরের অদূরে এবং পৌর এলাকার মধ্যে এ মেলার আয়োজন করা হওয়ায় শহরবাসীর উপচে পড়া ভিড় পড়ে মেলায়। কত বছর পূর্বে এ মেলার প্রচলন হয়েছিল তা কেউ সঠিক করে বলতে না পারলেও প্রায় এক শত বছর ধরে চলে আসছে বলে স্থানীয় বয়োবৃদ্ধ ও গ্রামবাসী মনে করেন।
এ মেলা মূলত ৩০ পৌষ সংক্রান্তির মেলা হলেও কয়েক বছর ধরে মেলার স্থানে বোরো আবাদের জন্য সংক্রান্তির আগেই মেলা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। তাই এ মেলা এখন 'পৌষ সংক্রান্তি' মেলা থেকে কেবল 'পৌষ মেলায়' রূপ নিয়েছে।