এমপি পাপুল ও স্ত্রী-মেয়ে-শ্যালিকার ৬১৩ কোটি টাকা ফ্রিজ
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০২:১৫ এএম, ২৪ ডিসেম্বর,বৃহস্পতিবার,২০২০ | আপডেট: ১১:৩৮ এএম, ৯ নভেম্বর,শনিবার,২০২৪
অবৈধ সম্পদ অর্জন এবং অর্থপাচারের অভিযোগের মামলায় কুয়েতে গ্রেফতার লক্ষ্মীপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য কাজী শহিদ ইসলাম পাপুলের স্ত্রী সংসদ সদস্য সেলিনা ইসলাম, শ্যালিকা জেসমিন প্রধান ও মেয়ে ওয়াফা ইসলামের নামে ৬১৩টি ব্যাংক হিসাব ফ্রিজ বা অবরুদ্ধে চিঠি দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
আজ বুধবার আদালতের অনুমতি দুদকের প্রধান কার্যালয় থেকে তদন্ত কর্মকর্তা উপপরিচালক মো. সালাহউদ্দিনের সই করা চিঠি বাংলাদেশ ব্যাংক বরাবর পাঠানো হয়েছে। দুদকের জনসংযোগ দফতর থেকে এ বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে। একই দিন সকালে আদালত থেকে অনুমতি পায় দুদক।
চিঠিতে এম পি পাপুল, তার স্ত্রী, শ্যালিকা ও মেয়ের মোট ৮টি ব্যাংকের এমডিকে এ বিষয়ে নির্দেশনা দেয়া অনুরোধ করা হয়েছে। মানব পাচারের মাধ্যমে এমপি পাপুলের উপার্জন ৩৮ কোটি টাকা, লেনদেন সাড়ে ৩০০ কোটি টাকার বেশি।
সিআইডি ও দুদকের তদন্তে দেখা যায়, এই টাকার বেশির ভাগই লেনদেন হয়েছে ৫ শতাধিক ব্যাংক হিসাবের মাধ্যমে বলে। অবৈধ সম্পদ অর্জন অর্থপাচারের অভিযোগে দুদকের মামলার এক মাস পর এমপি পাপুল দম্পতির ৮টি ব্যাংকের ৬১৩ টি ব্যাংক হিসাব ও সম্পদ ফ্রিজ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দুদক। এর সিদ্ধান্তের মাধ্যমে আইনি প্রক্রিয়া শেষ না হওয়া পর্যন্ত কোনো সম্পদ ও ব্যাংক হিসাব হস্তান্তর, রূপান্তর করতে পারবে না পাপুল পরিবার। গত ১১ নভেম্বরে লক্ষ্মীপুর দুই আসনের এমপি শহিদ ইসলাম পাপুল তার স্ত্রীসহ চারজনের বিরুদ্ধে অর্থপাচার ও অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে মামলা করে দুদক। এমপি পাপুলের মেয়ে ওয়াফা ইসলাম, শ্যালিকা জেসমিন আক্তারকে ১৪৮ কোটি টাকার অবৈধ লেনদেন এবং প্রায় ২ কোটি ৩১ লাখ টাকার সম্পত্তি গোপন করার অভিযোগে আসামি করা হয়। এক মাস পর অনুসন্ধানে পাওয়া এমপি পাপুল, তার স্ত্রী, শ্যালিকা ও মেয়ের মোট ৮টি ব্যাংকের ৬১৩টি ব্যাংক হিসাব ফ্রিজ বা অবরুদ্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কমিশন। একই সঙ্গে তাদের নামের দেশের বিভিন্ন স্থানের মোট ৩০ দশমিক ২৭ একর জমি ও গুলশানের ফ্ল্যাট এটাচমেন্ট করা হবে বলে জানায় দুদক সূত্র। এ সিদ্ধান্তের মাধ্যমে এখন থেকে এসব সম্পদ ও ব্যাংক হিসাব হস্তান্তর, রূপান্তর বা ব্যবহার করতে পারবেন না পাপুল পরিবার। গত কয়েক বছরে মানব পাচারের মাধ্যমে লক্ষ্মীপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য শহিদুল ইসলাম পাপুল ৩৮ কোটি টাকা উপার্জন করেছেন। তার পরিবারের সদস্যদের ১৩টি ব্যাংকে ৫২৬টি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ও এফডিআরে সাড়ে ৩০০ কোটি টাকার বেশি লেনদেনের তথ্য পেয়েছে বলে জানিয়েছে সিআইডি। সম্প্রতি মানব পাচারের অভিযোগে কুয়েতে গ্রেফতার সংসদ সদস্য কাজী শহিদ ইসলাম পাপুল এবং তার পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে সিআইডির অর্থপাচারের অভিযোগে মামলা করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। অন্যদিকে মানবপাচার, ভিসা বাণিজ্য ও অর্থপাচার সম্পর্কিত মামলায় শহীদকে জুনে কুয়েতের কারাগারে বন্দি লক্ষ্মীপুর দুই আসনের সংসদ সদস্য শহিদ ইসলাম পাপুলের বিরুদ্ধে আগামী ২৮ জানুয়ারি কুয়েতের আদালতে রায় হওয়ার কথা রয়েছে।
এদিকে অবৈধ সম্পদ অর্জন ও গোল্ডেন মনির সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে রাজউকের পরিচালক শেখ শাহিনুল ইসলামকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন।