আহমদ শফীর মৃত্যু স্বাভাবিক মামলা প্রত্যাহার না হলে কঠোর পদক্ষেপ নিতে বাধ্য হবো-বাবুনগরী
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০১:০২ এএম, ২৪ ডিসেম্বর,বৃহস্পতিবার,২০২০ | আপডেট: ১১:১৭ পিএম, ১৫ নভেম্বর,শুক্রবার,২০২৪
আল্লামা শাহ আহমদ শফীর মৃত্যু নিয়ে একটি মহল রাজনৈতিকভাবে তাদের সাহায্য করার জন্য ও সরকার থেকে সুযোগ সুবিধা নেওয়ার জন্য অপপ্রচার চালাচ্ছে। আল্লামা শফীর মৃত্যু নিয়ে তারা যে মামলাটি করেছে সেটি সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন ও বানোয়াট। আমরা এর তীব্র নিন্দা জানাই। সময় হলে এর জবাব দিব। আপনারা সাংবাদিকরা সমাজের দর্পণ, আপনারা বাস্তবটা লিখবেন। আমার বিরুদ্ধে হলেও বাস্তব কথাটা লিখবেন।
আজ বুধবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে হাটহাজারী মাদ্রাসা মিলনায়তনে আল্লামা শাহ আহমদ শফীর স্বাভাবিক মৃত্যু নিয়ে মিথ্যাচার, হাটহাজারী মাদ্রাসার ছাত্র-শিক্ষকদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র ও হেফাজত নেতৃবৃন্দকে জড়িয়ে দায়েরকৃত মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলন এসব কথা বলেন হেফাজতের আমির আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করার আগে দারুল উলুম হাটহাজারী মাদ্রাসার মহাপরিচালক ও হেফাজতে ইসলামের প্রতিষ্ঠাতা আমির আল্লামা শাহ আহমদ শফীর মৃত্যু নিয়ে হেফাজতের নতুন আমির আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরীর পাশাপাশি আল্লামা শাহ আহমদ শফীর দীর্ঘদিনের খাদেম মোহাম্মদ শফি কথা বলেন। তখন আল্লামা শফীর খাদেম শফী বলেন, হুজুরের স্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছিল। ওনার অক্সিজেন খোলা হয়নি। হুজুরকে মাদ্রাসা থেকে অক্সিজেন লাগানো অবস্থায় বের করা হয়েছিল।
এরপর সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন হেফাজতের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক ডক্টর নুরুল আবছার আজহারী।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, শায়খুল ইসলাম আল্লামা শাহ আহমদ শফী আল-জামিয়াতুল আহলিয় দারুল উলুম মুঈনুল ইসলাম হাটহাজারীর দীর্ঘ সময়ের মহাপরিচালক এবং বাংলাদেশের অরাজনৈতিক ধর্মীয় সংগঠন হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের আমির ছিলেন। তিনি হাটহাজারী মাদরাসাসহ বাংলাদেশের সর্বস্তরের কওমি মাদরাসাসমূহের মুরুব্বি ও অভিভাবক ছিলেন। তার ইন্তিকালে মাদরাসার সকল শিক্ষক, ছাত্র ও কর্মকর্তাবৃন্দ গভীর শোকাহত। আমরা হযরতের দারাজাত বুলন্দির জন্য দেশবাসীর কাছে দুআ কামনা করছি। আল্লাহ তায়ালা হযরতকে জান্নাতের সুউচ্চ মাকাম দান করুন।
আল্লামা আহমদ শফীর মৃত্যু স্বাভাবিক ছিলো। কিন্তু আমরা লক্ষ্য করছি যে, আল্লামা শাহ আহমদ শফীর স্বাভাবিক মৃত্যু নিয়ে একটি কুচক্রি মহল ষড়যন্ত্রমূলকভাবে নির্জলা মিথ্যাচার করে যাচ্ছে। হযরতের ইন্তিকালের তিন মাস পর ঐ কুচক্রি মহল তার মৃত্যুক অস্বাভাবিক আখ্যা দিয়ে একটি মিথ্যা মামলাও দায়ের করে। দায়েরকৃত মামলাটি রাজনৈতিক চক্রান্ত এবং দেশের স্থিতিশীল অবস্থা বিনষ্ট করার দুরভিসন্ধি বলে আমরা মনে করছি। একটি চিহ্নিত দালালগোষ্ঠী আল্লামা শাহ আহমদ শফীকে জিম্মি করে হাটহাজারী মাদরাসায় ব্যক্তিতন্ত্র কায়েম করে রেখেছিল।
আল্লামা শাহ আহমদ শফীর স্বাভাবিক মৃত্যুর বিষয়টি তার পরিবার ও মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ সুস্পষ্টভাবে দেশবাসীকে জানিয়েছিলেন। অনেক আগে থেকে আল্লামা শফীর শারীরিক অবস্থা এতই নাজুক ছিল যে, বেশ কয়েকবারই তার মৃত্যুর গুজব ছড়িয়ে পড়েছিল। আল্লামা আহমদ শফীকে হত্যার অভিযোগ তুলে যারা মামলা করেছে, তারা একটি চিহ্নিত দালালগোষ্ঠী। তারা দেশের আলেম সমাজ ও সচেতন তৌহিদী জনতার কাছে প্রত্যাখ্যাত। মামলায় তথাকথিত হত্যার যেসব কারণ উল্লেখ করা হয়েছে, সেগুলো অতিরঞ্জিত ও মিথ্যাচারে পরিপূর্ণ এবং রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণােদিত বলে আমরা মনে করি।
সম্পূর্ণ আল্লাহর ইচ্ছায় ওনার স্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছিল। তাকে হত্যা করা হয়েছিল এমন কোনো মেডিকেল রিপোর্টও দালালগোষ্ঠীরা জাতির সামনে উপস্থাপন করতে পারেনি। কিছুদিন আগে ঐ চিহ্নিত গোষ্ঠী আয়োজিত একটি সাংবাদিক সম্মেলনে উপস্থিত সাংবাদিকদেরকে আল্লামা আহমদ শফী হত্যা বিষয়ক প্রশ্নগুলোরও তারা কোনো সদুত্তর দিতে পারেনি। দায়েরকৃত মামলায় যাদের আসামি করা হয়েছে এবং বিবরণে যাদেরকে অভিযুক্ত করা হয়েছে, তারা কেউ এর সাথে সম্পৃক্ত নয়। সুতরাং তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা সম্পূর্ণ মিথ্যা যড়যন্ত্র ও উদ্দেশ্যমূলক।
এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন হেফাজতের সিনিয়র নায়েবে আমির আল্লামা মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী, হেফাজতের আমির আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী, দারুল উলুম হাটহাজারী মাদ্রাসার শূরা সদস্য আল্লামা মোহাম্মদ ইয়াহইয়া, আল্লামা নোমান ফয়জী, হেফাজত নেতা আল্লামা তাজুল ইসলাম, আল্লামা মোহাম্মদ শোয়াইব, আল্লামা মুফতী কেফায়েতুল্লাহ, আল্লামা মুফতী জসিম উদ্দীন, আল্লামা লোকমান হাকিম, আল্লামা কবির আহমদ, আল্লামা হাবিবুল্লাহ আজাদি, আল্লামা দিদার কাসেমী, আল্লামা আশরাফ আলী নেজামপুরী, আল্লামা ফোরকান আহমদ, আল্লামা ওমর কাসেমী, আল্লামা মাহমুদুল হাসান ফতেপুরি, আল্লামা আতাউল্লাহ কৈয়গ্রাম, মাওলানা মীর ইদরিস নদভী, মাওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদি, মাওলানা জাকারিয়া নোমান ফয়জী, মোহাম্মদ আহসানুল্লাহ, মাওলানা শফিউল আলম, মাও. আনোয়ার শাহ আজহারী, মাও. হারুন আজিজ নদভী, মাওলানা মুফতী আবু সাইদ, মাওলানা মুফতী রাশেদ, মাও. মুফতী আব্দুল্লাহ নাজিব প্রমুখ।