জমে উঠছে শাহজাদপুর পৌরসভার নির্বাচন, প্রচার বাঁধার অভিযোগ বিএনপি মেয়র প্রার্থী সজলের
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১১:২২ পিএম, ২৩ ডিসেম্বর,
বুধবার,২০২০ | আপডেট: ০৯:০৫ পিএম, ১৫ নভেম্বর,শুক্রবার,২০২৪
আগামী ২৮ ডিসেম্বর শাহজাদপুর পৌরসভা নির্বাচন। নির্বাচনে অংশ গ্রহন করছেন আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী নৌকা প্রতিকে মনির আক্তার খান তরু, বিএনপির মনোনীত প্রার্থন ধানের শীষ প্রতিকে মাহমুদুল হাসান সজল, জাতীয় পার্টির মনোনীত প্রার্থর লাঙ্গল প্রতিকে মোক্তার হোসেন ও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ এর মনোনীত প্রার্থী তালপাখা প্রতিকে ইমরান হোসেন। নির্বাচন যতই ঘনিয়ে আসছে প্রার্থীদের প্রচার প্রচারনা ততই জমে উঠছে। নির্বাচন শুরু হওয়ার পর থেকে এ আসনে আওয়ামীলীগের নেতা কর্মীরা নৌকা মার্কার সমর্থনে প্রতিদিন সকাল-বিকাল মিছিল মিটিং করছেন। প্রতি নিয়ত মাইকে ভেসে আসছে নৌকা প্রতীকে ভোট চাওয়ার শব্দ। নৌকার প্রার্থী নিজেও চষে বেড়াচ্ছেন পৌর এলার প্রতিটি মহল্লা অলিগলি। তবে বিপরীত চিত্র দেখা গেছে বিএনপি প্রার্থীর। পৌরসভার ব্যস্ততম জায়গায় কোন ধানের শীষ প্রতীকের পোষ্টার চোখে পড়ছে না। ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ এর প্রার্থীর হাতপাখা প্রতিক অলিতে গলিতে শোভা পাচ্ছে। প্রচার প্রচারণায় করছে ইসলামী আন্দোলনের সমর্থক নেতাকর্মীরী। জাতীয় পার্টির মোক্তার হোসেনের লাঙ্গল প্রতিকে পোষ্টার, ব্যানার তেমন দেখা যাচ্ছে না, প্রচার প্রচারণা চোখে পড়ছে না।
আজ বুধবার সকালে পৌর এলাকার দ্বাড়িয়াপুর বাজারে নৌকার পোষ্টার লাগাচ্ছিলেন কয়েক জন এবং হ্যান্ডবিল নিয়ে ভোটারদের কাছে নৌকা মার্কায় ভোট চাচ্ছেন। প্রচার প্রচারনা কেমন চলছে, জিজ্ঞাসা করতেই সাবেক ছাত্র নেতা রাজিব শেখ জানালেন, প্রতিটি অলিগলিতে পোষ্টার লাগানো ছাড়াও মাইকিং করা হচ্ছে, পথসভা করা হচ্ছে, বাসায় বাসায় হ্যান্ডবিল পৌছে দেয়া হচ্ছে। নৌকা প্রতীকে মানুষ কেন ভোট দেবে জানতে চাইলে তিনি জানান, সরকারের উন্নয়নের ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে শাহজাদপুর পৌরসভার জনগন নৌকার প্রার্থীকে বিজয়ী করবেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় এক বিএনপি কর্মী বলেন, বিভিন্ন মামলায় গ্রেপ্তারের ভয়ে বিএনপির সমর্থকরা প্রকাশ্যে প্রচার প্রচারনায় নামছেনা। তবে গোপন প্রচার চালাচ্ছে। পোষ্টারের পরিবর্তে হ্যান্ডবিল লিফলেট দেয়া হচ্ছে বাড়িবাড়ি। কথা হয় এ আসনের বিএনপি মনোনিত প্রার্থী মাহমুদুল হাসান স্বজল সাথে।
তিনি বলেন, নির্বাচনে কোথাও লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নেই। ক্ষমতাসীন দলের লোকজন আমাদের প্রচারণায় বাধা সৃষ্টি করছে। আমরা দিনে পোষ্টার লাগালে রাতেই আওয়ামীলীগের লোকজন ছিড়ে নিয়ে যাচ্ছে। আমাকে সহ আমাদের কর্মীদের মারধর করা হচ্ছে। গত ১৪ ডিসেম্বর সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে ২নং ওয়ার্ড রুপপুর আমাকে ও আমার কর্মীসমর্থকদের আটকে রেখে মারধর করা হয়েছে। থানায় অভিযোগের পরও কোন সাড়া পাওয়া যায়নি। তারা চায় আমরা যেন মাঠ থেকে বিদায় হয়ে যাই। আর তারা ফাঁকা মাঠে গোল দিবে। নির্বাচন সুষ্ঠভাবে অনুষ্ঠিত হলে আমি অবশ্যই নির্বাচিত হবো। কারণ শাহজাদপুরের জনগন এই সরকারে নীল নকশা থেকে বের হয়ে বিএনপিকেই পৌর মেয়র হিসেবে দেখতে চায়।
তিনি প্রতিবেদককে আরো জানান, সুষ্ঠু, অবাধ নিরপেক্ষ নির্বাচনে হলে বিএনপি প্রার্থী জয়ী হয়ে শাহজাদপুর পৌরসভাকে ব্যাপক উন্নয়ন করে আধুনিক পৌর সভায় রুপদান করা হবে।
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ থেকে মনোনিত প্রার্থী ইমরান হোসেন বলেন, তিনি নির্বাচিত হলে পৌরসভার বৃহৎ কাপড়ের হাটসহ পুরো শাহজাদপুর সিসি ক্যামেরার আওতায় আনা হবে। ড্রেনেজ ব্যবস্থাসহ শাহজাদপুরকে ডিজিটাল পৌরসভায় পরিনত করা হবে।
আওয়ামীলীগের প্রার্থী মোঃ মনির আক্তার খান তরু লোদী বলেন, শাহজাদপুরের মাটি আওয়ামীলীগের ঘাটি। আমি আমাদের নেতাকর্মীদের সাথে নিয়ে ভোটারদের বাড়ি বাড়ি যাচ্ছি। তাদের বলছি, বর্তমান সরকার এলাকার উন্নয়ন যদি করে থাকে তবে আমাকে আপনার মুল্যবান ভোটটি দিবেন। এলাকায় পথসভা করছি, পোষ্টার ব্যানার লিফলেট বিতরন করছি।
তিনি আরো জানান আমি যদি নির্বাচিত হই তাহলে পৌর এলাকার সকল রাস্তা পাকাকরণ, সুপেয় পানির ব্যবস্থা, পর্যাপ্ত পরিমাণ সড়ক বাতি, ড্রেনেজ ও পয়নিষ্কাশন ব্যবস্থা, সন্ত্রাস চাদাবাজি ও মাদক মুক্ত সহ শাহজাদপুর পৌর সভাকে আধুনিক ও ডিজিটাল পৌরসভায় রুপদান করব ইনশাহআল্লাহ।
শাহজাদপুর উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর হোসেন জানান, ২৮ডিসেম্বর সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত ইভিএম (ইলেকট্রনিক ভোটার মেশিন) এর মাধ্যমে বিরতিহীনভাবে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। প্রথম শ্রেণির শাহজাদপুর পৌরসভাটিতে মোট ভোটার সংখ্যা ৫১ হাজার ৮৬। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ২৫ হাজার ৩৭১ এবং মহিলা ভোটার ২৫ হাজার ৭১৫ জন। ২৫টি কেন্দ্রের ১৪৭টি ভোটকক্ষে অনুষ্ঠিত হবে ভোট।