লাকসাম পৌরসভা নির্বাচন, আতঙ্কে নেতাকর্মী ও সম্ভাব্য প্রার্থীরা
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৮:৩৭ পিএম, ২২ ডিসেম্বর,মঙ্গলবার,২০২০ | আপডেট: ০৩:৫৭ পিএম, ২৪ নভেম্বর,রবিবার,২০২৪
আগামী ৩০ জানুয়ারী-২০২১ নির্বাচন কমিশনের ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী কুমিল্লা জেলার গুরুত্বপুর্ন প্রথম শ্রেনীর লাকসাম পৌরসভা নির্বাচনের ভোট গ্রহন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। ব্যালট পদ্ধতিতে আনুষ্ঠাব্য নির্বাচনে মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ দিন ৩১ ডিসেম্বর নির্ধারন করা হয়। মনোনয়নপত্র দাখিলের আর মাত্র ৭দিন বাকী থাকলেও এই নির্বাচনে রাজনীতিতে পরিকল্পিত ভাবে কোনঠাসা থাকা লাকসামের বিএনপি সমর্থিত মেয়র কাউন্সিলর প্রার্থীরা ঘরোয়া ভাবেও নিজেদের মধ্যে নির্বাচন নিয়ে কোন আলোচনায় বসতে পারছে না।
গত ১৭ ডিসেম্বর বৃহস্পতিবার লাকসাম পৌরসভা নির্বাচনে সম্ভাব্য কয়েকজন মেয়র কাউন্সিলর প্রার্থীদের উপর স্থানীয় ছাত্রলীগ, যুবলীগের সশস্ত্র ক্যাডাররা অতর্কিত হামলা করে। এর পরই সশস্ত্র ক্যাডাররা প্রকাশ্যে ঘোষনা দেয় বিএনপির কাউকে লাকসামের রাস্তাঘাটে পাওয়া গেলেও তারা এ্যাকশনে যাবে। যার ফলে আতঙ্কে বিএনপি থেকে মনোনয়ন প্রত্যাশী সম্ভাব্য মেয়র কাউন্সিলর প্রার্থীরা অনেকেই ঘর ছাড়া। আবার অনেকে বাড়ীতে থাকলেও তাদের স্বাভাবিক জীবনযাপন মারাত্বক ভাবে ব্যাহত হচ্ছে। নিজেদের অনেক গুরুত্বপুর্ন প্রয়োজনেও ঘর থেকে বের হচ্ছেনা। শুধু সম্ভ্যাব্য প্রার্থী নয়, গত ১৭ ডিসেম্বর ছাত্রলীগ যুবলীগের সশস্ত্র হামলার পর বিএনপি সমর্থিত সাধারন কর্মীসমর্থক, ব্যাবসায়ী, কর্মজীবিরা পর্যন্ত আতঙ্কে ঘর থেকে বের হতে পারছে না।
এ ব্যাপারে লাকসাম উপজেলা বিএনপির বর্তমান আহবায়ক কমিটির সিনিয়র যুগ্ন-আহবায়ক আব্দুর রহমান বাদল দিনকালকে বলেন, "আমরা প্রার্থী নির্ধারন নিয়ে ঘরোয়া ভাবেও কোথাও বসতে পারছিনা, স্থানীয় ছাত্রলীগ যুবলীগের সশস্ত্র ক্যাডাররা আমাদেরকে সার্বক্ষণিক নজরে রাখছে। প্রার্থী নির্ধারনে ঘরোয়া আলোচনা সভাতো দুরের কথা, গত ১৭ ডিসেম্বর সহিংস ঘটনায় আহত নেতাকর্মীদের খোঁজখবর নিতে তাদের বাড়ীতে গেলেও আমাদের উপর চড়াও হচ্ছে ছাত্রলীগ যুবলীগের সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা। এ অবস্থায় একদলীয় কর্তৃত্ববাদী অপশাসনের এই ভয়াল সময়ে আমরা প্রহসনের এই নির্বাচনে অংশগ্রহন করবো কিনা তা আমাদের ঊধর্তন নেতৃবৃন্দের সাথে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নিতে হবে"।
তবে সম্ভাব্য মেয়র কাউন্সিলর একাধিক প্রার্থীদের সাথে যোগাযোগ করলে তারা প্রতিবেদককে বলেন, "আমরা কৌশলে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছি, ফাঁকা মাঠে এবার কোন ভাবেই ওদেরকে গোল দেওয়ার সুযোগ দেয়া যাবে না" আবার অনেক প্রার্থী নির্বাচন নামের এসব প্রহসনে না যাওয়ার পক্ষেও তাদের মতামত দিয়েছেন।
উল্লেখ্য লাকসাম পৌরসভা নির্বাচনে বিএনপি থেকে মেয়র পদে নির্বাচন করার জন্য এপর্যন্ত তিনজনের নাম আলোচনায় এসেছে।
তারা হলেন, লাকসাম পৌরসভা বিএনপির সাবেক সভাপতি আবুল হাসেম মানু, পৌর বিএনপির দুই যুগ্ন-আহবায়ক মনিরুজ্জামান মনির ও বেলাল রহমান মজুমদার।
গনমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তাদেরকে নিয়ে প্রচার প্রচারনাও হয়েছে। তবে গত ১৭ ডিসেম্বর সহিংস ঘটনার পর অনেকটা আচমকাই নিজের ফেসবুক বার্তায় লাকসাম পৌরসভা বিএনপির যুগ্ন-আহবায়ক সাংবাদিক মনির আহমেদ লাকসাম পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র পদে নির্বাচন করার আগ্রহ প্রকাশ করেন। তার সাথে কথা বলে জানা যায়, "যদি সর্বশেষ মুহুর্ত পর্যন্ত দল থেকে কেউ নির্বাচনে অংশগ্রহন করতে আগ্রহী না হন, কেবলমাত্র তাহলেই তিনি নির্বাচন করবেন।" তার মতে আন্দোলনের অংশ হিসাবে দল যেহেতু প্রতিটি নির্বাচনেই অংশ নিচ্ছে তাহলে ফাঁকা মাঠে প্রতিপক্ষকে গোল করার সুযোগ দেয়া ঠিক হবেনা। মনির আহমেদ লাকসামের নির্বাচন সংশ্লিষ্ট প্রশাসনকে অবাধ ও গ্রহনযোগ্য নির্বাচনের স্বার্থে দ্রুততম সময়ের মধ্যে অহিংস, সুন্দর, সুষ্ঠ এবং সবার জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরী ও সর্বোপরি নির্বাচনের জন্য একটি উৎসবমুখর পরিবেশ নিশ্চিত করারও আহবান জানান।