শ্রীনগরে খাহ্রায় ঘুরে বেড়াচ্ছে বানরের দল
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৪:৪৮ পিএম, ২২ সেপ্টেম্বর,
বুধবার,২০২১ | আপডেট: ০৩:১৭ এএম, ১৯ নভেম্বর,মঙ্গলবার,২০২৪
উন্মুক্ত পরিবেশে বিভিন্ন গাছের ডালপালায়, বাসাবাড়ি ও দালান-কোঠার ছাঁদে এমনকি রাস্তায় রাস্তায় বানরের দল ঘুরে বেড়ানোর দৃশ্য সচরাচর এখন আর চোখে পড়ে না। এক সময় গ্রামগঞ্জের প্রায় স্থানেই বানরের দেখা মিলত। নতুন প্রজন্মের কাছে তা এখন শুধু অতীতের গল্প। তবে মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগর উপজেলার বাড়ৈখালী এলাকার খাহ্রায় এখনও বানরের দলের ঘুরে বেড়াতে দেখা যাচ্ছে। নানা প্রতিকূলতার মধ্যেও খাহ্রায় প্রায় দুই শতাধিক বানরের বসবাস রয়েছে এখানে।
সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, আড়িয়াল বিল এলাকার শ্রীনগর উপজেলার বাড়ৈখালী ইউনিয়নের শেষ সীমানায় খাহ্রা নামক গ্রামটির অবস্থান। তারপরেই পার্শ্ববর্তী ঢাকা জেলার নবাবগঞ্জ উপজেলার সীমানা। মাঝখানে খালের ওপর নির্মিত সেতুর পূর্ব দিকে শ্রীনগর খাহ্রা ও পশ্চিম দিকে নবাবগঞ্জের ঐতিহ্যবাহী চুড়াইন বাজার। খাহ্রা সেতু এলাকাটি যেন দুই জেলার মানুষের মিলনকেন্দ্র। আর এখানেই বানরের আদি বসবাসের নিরাপদ স্থান।
বিভিন্ন বাসাবাড়ি, দোকানপাট, গাছের ডালে ও রাস্তায় বাননের উপস্থিতি। খাবারের সন্ধানে এসব বন্যপ্রাণি ঘুরে বেড়াচ্ছে যত্রতত্র। মা বানরকে দেখা যায় শাবক বানরকে পিঠে ও বুকে নিয়ে হাঁটাহাঁটি করতে। খাবারের দেখা পেলেই হাঁকডাক দিয়ে বানররা জড়ো হচ্ছে।
এ সময় খাহ্রা ব্রিজের সামনে এক পথচারী নিজ হাতে বানরকে খাবার দিতে দেখা যায়। পথচারী মো. অমিত খাঁন বলেন, এখান দিয়ে যাচ্ছিলাম। বানর দেখা রাস্তায় কিছুক্ষণ দাড়াই। একটি বানর নির্ভয়ে আমার হাত থেকে খাবার নিচ্ছে। মুহুর্তের মধ্যেই বেশকিছু বানর চলে আসে এখানে।
স্থানীয়রা জানায়, সুযোগ পেলেই বসতবাড়ি, রান্নাঘর ও দোকান থেকে খাবার ছিনিয়ে নিচ্ছে ক্ষুধার্ত বানররা। এ সময় বাড়ৈখালী ৬নং ওয়ার্ডের খাহ্রার বাসিন্দা দোকানী বৃদ্ধ সুধির সাহা (৭০) বলেন, এখানে বানররা অনেক উৎপাত করে। তাই দোকানের চারপাশে নেট দিয়ে ব্যবসা করতে হয়। সুযোগ পেলেই বানররা দোকান থেকে বিভিন্ন জিনিসপত্র নিয়ে যায়। এখানে প্রায় ২ শতাধিক বানর থাকার কথা জানান তিনি।
রুবেল, বিশ্বজিত, কমল পালসহ অনেকেই বলেন, দিনের বেলায় বানররা বাড়ৈখালীর খাহ্রা, ভাঙ্গাপোল, মদনখালী ও পার্শ্ববর্তী উপজেলা নবাবগঞ্জের চুড়াইন বাজার এলাকায় খাবারের সন্ধান করে বেড়ায়। রাত হলে খাহ্রা গ্রামের বিভিন্ন গাছে ও বাসা বাড়ির ছাদে রাত কাটায়। অনাহারে এসব বানরের সংখ্যা দিন দিন কমেছে।
তারা জানান, বানর সুরক্ষার জন্য সরকারিভাবে কোন প্রদক্ষেপ চোখে পড়েনি। বন্যপ্রাণি এসব বানর টিকিয়ে রাখতে হলে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের এখনি সঠিক প্রদক্ষেপ নেওয়া উচিত বলে মনে করেন এলাকাবাসী। তা না হলে সময়ের ব্যবধানে এসব বানর বিলুপ্তির পথে যাবে।