গুরুদাসপুরে নৌকা ভ্রমণের জমে উঠেছে অশ্লীল নৃত্য ও অসামাজিক কার্যকলাপ
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৭:৩৫ পিএম, ৮ সেপ্টেম্বর,
বুধবার,২০২১ | আপডেট: ০৫:৫০ পিএম, ১৮ নভেম্বর,সোমবার,২০২৪
নাটোরের গুরুদাসপুরসহ চলনবিল এলাকায় নৌভ্রমণের আড়ালে নৌকায় জমে উঠেছে অশ্লীল নৃত্য, মাদক ও জুয়ার আসর। প্রতি বছর বর্ষা মৌসুমে একশ্রেণির অসাধু লোকজন পিকনিক ও নৌকা ভ্রমণের নামে নর্তকিদের ভাড়া করে আনে এবং অশ্লীল কার্যকলাপে মত্ত হয়ে উঠেছেন।
এতে হত্যা ছিনতাইসহ ঘটছে অসামাজিক কার্যকলাপ। প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে তিন জেলার জিরো পয়েন্টে প্রতি নিয়ত বসছে জুয়ার আসর। নৌকার মধ্যেই বসানো হয় জুয়া ও মাদকের আসর।
চলন্ত পানির মধ্যে নৌকায় চেপে এসব অপকর্ম হলেও প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনো পদক্ষেপ না নেয়ায় বেপরোয়া ভাবে চলছে এসব কার্যক্রম। এতে বিলপাড়ের মানুষের মধ্যে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে।
অনুসন্ধান ও সরেজমিন ঘুরে জানা গেছে, নাটেরের গুরুদাসপুর, সিংড়া, ভাংগুড়া, ফরিদপুর, বড়াইগ্রাম ও তাড়াশ থানার বিভিন্ন এলাকার একশ্রেণির অসাধু লোকজন সকাল থেকেই বেড়িয়ে পড়েন নৌকা ভ্রমণে। সকাল, দুপুর ও রাতের খাবার রান্না হয় নৌকাতেই। স্থানীয় কিছু অসাধু ব্যাক্তিদের মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে নর্তকি ও অখ্যাত কণ্ঠশিল্পীদের ভাড়া করে নিয়ে আসা হয়। এরপর উচ্চস্বরে গান-বাজনার তালে তালে নৌকার মধ্যেই চলে অশ্লীল নৃত্য। পাশাপাশি তিন জেলার সিমান্ত এলাকা (জিরো পয়েন্টে) বসে জুয়া ও মাদকের আসর। যাতে করে কোন থানার পুলিশ তাদের ধরতে না পারে।
এ ধরনের নৌকাগুলোর বেশিরভাগ কৌশলে কিছু অংশ পর্দা দিয়ে ঢেকে রাখেন নৌকার মালিকেরা। শুধু নৌকার মালিকই নয় এসব অপকর্মের হোতাদের সঙ্গে যুক্ত থাকেন স্থানীয় প্রভাবশালী কিছু লোকজন। এতে করে ছুটির দিনে বা অন্য কোনো দিনে চলনবিল এলাকায় ভ্রমণে আসা পর্যটক বা পরিবার ও স্বজনদের নিয়ে ঘুরতে আসা লোকজনকে নানাভাবে বিড়াম্বনার শিকার হতে হয়।
স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনো পদক্ষেপ না নেয়ায় বেড়েই চলছে নানা ধরনের অপরাধসহ খুন ও হত্যার মতো লোম হর্ষক সব ঘটনা। নৌকা ডুবি, শ্লিলতাহানী, খুন ও গুমের মতো ঘটনা ঘটছে অহরহ।
ঢাকা থেকে চলনবিলে ঘুরতে আসা আঃ রশিদ নামের এক চাকুরিজীবি জানান, গতকাল দুপুরে বাড়ি থেকে পরিবারের লোকজন নিয়ে চলনবিল দেখতে এসেছিলাম। কিন্তু অধিকাংশ নৌকায় যেভাবে অশ্লীলতা চলছিল তাতে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে বিব্রতকর অবস্থার মধ্যে পড়তে হয়েছে। শুধু আঃ রশিদই নয়, এমন অভিযোগ চলনবিলে ভ্রমন করতে আসা অনেকেরই।
এ ব্যাপারে গুরুদাসপুর থানার ওসি (তদন্ত) মোঃ মনোয়ারুজ্জান বলেন, চলনবিল একটা বিশাল এলাকা। সব এলাকার খবর রাখা কষ্টকর। তবে শুনেছি চলনবিলে নৌকা ডুবির ঘটনায় মাঝে মধ্যেই দু একজন করে মারা যায়। সম্প্রতি নৌকার মাঝি আরজু হত্যার ঘটনার ঘটেছে। হত্যাকান্ডের মুল আসামীকে গ্রেফতার করেছি। আর জুয়া এবং মাদকের ব্যাপারে তিনি বলেন ইতিমধ্যেই ২০ থেকে ৩০ জনকে আর্থিক দন্ড ও মামলা করা হয়েছে। ঘটনাস্থল নজরদারীতে রাখা হয়েছে,অপরাধী যেই হোক তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
গুরুদাসপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ তমাল হোসেন বলেন, গত আইনশৃঙ্খলা মিটিংয়ে বিষয়টি উঠেছিল। সেখানে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। আমি স্ব স্ব বিভাগকে এ ধরনের কার্যক্রমের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বলেছি।