সাঘাটায় বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ সংস্কার হয়নি দীর্ঘদিনেও
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৩:৩৮ পিএম, ৮ সেপ্টেম্বর,
বুধবার,২০২১ | আপডেট: ০৮:৫৫ এএম, ২৫ নভেম্বর,সোমবার,২০২৪
দীর্ঘ ৪০ বছরেও সংস্কার হয়নি বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধটির। কোথাও মাটি ধসে গেছে। কোথাও ভেঙেচুরে বিশাল উচু নিচু হয়ে আছে। দুপাশে এমন ভাবে জনবসতি গড়ে উঠেছে-এখন আর দেখে বোঝার কোন উপায়ই নেই যে, এটি বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ। এমনই অবস্থা গাইবান্ধার সাঘাটা উপজেলার যমুনা ও ব্রহ্মপুত্র নদীর ডানতীর রক্ষা বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধটির।
দীর্ঘদিন ধরে সংস্কার, রক্ষানাবেক্ষণ ও তদারকির অভাবে এখন বিলীন হওয়ার পথে বন্যা নিয়ন্ত্রন বাঁধটি। দিনদিন বাঁধের ওপর অবৈধ জনবসতি এবং বিভিন্ন স্থাপনা গড়ে উঠলেও যেন এসব দেখার কেউ নেই। প্রতিবছর বন্যার সময় মারাত্মক ভাবে ভাঙনের হুমকিতে পড়ে এ বাঁধটি। যমুনা ও ব্রহ্মপুত্র নদীর ডানতীর রক্ষা কল্পের অধীনে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড বিগত ১৯৬৮ সালে এ বাঁধ নির্মাণ করে।
প্রথম দিকে গাইবান্ধা পানি উন্নয়ন বোর্ড বাঁধটি রক্ষনাবেক্ষণ করলেও আশির দশকের পর থেকে রক্ষনাবেক্ষণ, সংস্কার ও তদারকি করা হয়নি। দিন দিন বাঁধটি দখল করে গড়ে ওঠেছে জনবসতিসহ অসংখ্য স্থাপনা। বাঁধ কেটে ঘর-বাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান নির্মাণ করায় এখন সরু হয়ে গেছে।
অনেকেই আবার মাটি তুলে ঘরের স্থান উচু করতে বাঁধের কিছু কিছু স্থান খঁড়ে গর্ত করেছে। কেউ আবার ঘরের পাশে খড় স্তুপ করে রাখায় ইঁদুর অসংখ্য গর্ত করে বাঁধ দুর্বল করেছে। এসব অবৈধ জনবসতি ও স্থাপনা সরিয়ে ফেলার জন্য কোন তাগিদ এবং বাঁধ রক্ষাবেক্ষণ ও সংস্কার ব্যাপারে গাইবান্ধা পানি উন্নয়ন বোর্ডের কোন উদ্যোগ নেই। এতে গুরুত্বপূর্ণ বাঁধটি এখন বিলিনের পথে। প্রতিবছর বন্যা এলেই হুমকির মুখে পড়ে বাঁধটি।
শুধু বন্যার সময়ে সংকট দেখা দিলেই বাঁধ রক্ষার জন্য গাইবান্ধা পানি উন্নয়ন বোর্ড এর কর্মকর্তাদের পাশাপাশি, জেলা প্রশাসন, উপজেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনের কর্মকর্তাদের দৌড়-ঝাঁপ শুরু হয়ে যায়। উপজেলার জুমারবাড়ী ইউনিয়নের বসন্তের পাড়া গ্রাম হতে শুরু করে সাঘাটা ইউনিয়নের বাঁধের কোথাও দু’পাশের ঢালু খাড়া করে কেটে সমতল করে সেখানে বাঁধের উপর যার যেমন মন চায় নিজেদের ইচ্ছামত ঘর-বাড়ি তুলে লোকজন বসবাস করছে।
বিশেষ করে ঘুড়িদহ ইউনিয়নের ডাকবাংলা বাজার এলাকা হতে সাঘাটা ইইনিয়নের বাশহাটা অংশে বাঁধের অবস্থা বেশী দুর্বল। সাঘাটা ইউপি চেয়ারম্যান মোশারফ হোসেন সুইট জানান, বাঁধে বসবাসরত এসব পরিবারের স্থায়ী ভাবে আশ্রয়ের ব্যবস্থা করে বাঁধটি মুক্ত করে সংস্কার জরুরী।
গাইবান্ধা পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী রেজাউল করিম রেজার সাথে কথা হলে তিনি বলেন, জনবসতি সড়িয়ে নেয়ার ব্যাপারে শক্ত কোনো নির্দেশনা আসেনি। সংস্কার করার জন্য এই মুহুর্তে কোনো বরাদ্দ নেই। জনবল না থাকায় তদারকি এবং রক্ষণাবেক্ষণ করা সম্ভব হয়নি। তবে বরাদ্দ এলে বাঁধটি সংস্কার করা হবে বলেও জানান তিনি।