সরিষাবাড়ীতে যমুনা সার কারখানার বিষাক্ত বর্জ্য, গ্যাসের দূষণ বন্ধের দাবীতে মানববন্ধন
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৫:১৩ পিএম, ২৮ আগস্ট,শনিবার,২০২১ | আপডেট: ০৪:২৩ পিএম, ২১ নভেম্বর,বৃহস্পতিবার,২০২৪
জামালপুরের সরিষাবাড়ী উপজেলার তারাকান্দিতে অবস্থিত এশিয়ার দ্বিতীয় বৃহত্তম ও দেশের সর্ববৃহৎ দানাদার ইউরিয়া উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান যমুনা সার কারখানার (জেএফসিএল) নির্গত বিষাক্ত বর্জ্য ও এমোনিয়া গ্যাসের প্রভাবে পার্শ্ববর্তী গ্রাম গুলোতে পরিবেশ বিষাক্ত হয়ে উঠেছে। যমুনা সার কারখানার নির্গত অ্যামোনিয়া ও তরল বর্জ্যের দূষণ বন্ধের দাবিতে মানববন্ধন করেছে এলাকাবাসী।
গতকাল শুক্রবার (২৭ আগষ্ট) তারাকান্দি তিতাস মোড় এলাকায় প্রায় পাঁচ শতাধিক নারী পুরুষ ঘণ্টাব্যাপী এ মানববন্ধনে অংশ নেয়।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, ১৯৯১ সালে প্রতিষ্ঠিত হবার পর থেকেই যমুনা সারকারখানার ইউরিয়া উৎপাদনে কাঁচা মাল হিসেবে এমোনিয়া গ্যাস, যমুনা নদীর পানি ও অক্সিজেন ব্যবহার হচ্ছে। প্রতিদিনি ১৭০০ মেঃ টন উৎপাদন ক্ষমতা সম্পন্ন এ কারখানায় ব্যবহৃত কাঁচামালের বিষাক্ত বর্জ্য ও গ্যাস আধুনিক প্রযুক্তির শোধন প্ল্যান্ট বা পরিকল্পিত ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকায় বায়ু, মাটি ও পানির সাথে মিশে সহজেই এলাকার পরিবেশ নষ্ট করছে। মারাত্মক ক্ষতিকর প্রভাব পড়েছে কারখানার আশেপাশের এলাকায়।
আধুনিক প্রযুক্তির শোধন প্ল্যান্ট ও পরিকল্পিত ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকায় কারখানার নির্গত বিষাক্ত বর্জ্য ও গ্যাস এলাকার পানি, বাতাস ও মাটির সাথে মিশে রোগাক্রান্ত হচ্ছে মানুষ ও পশু-পাখি। মারা যাচ্ছে বিভিন্ন প্রজাতির গাছপালা। পুকুর ও নদী নালায় মাছ শূণ্য হয়ে পড়ছে। অনুর্বর হয়ে পড়ছে আবাদী জমি। এতে করে পোগলদিঘা ইউনিয়নের কান্দার পাড়া, ডুরিয়ার ভিটা, চরপাড়া, পাখিমারা, তারাকান্দি, চেচিয়াবাধা, গেন্দার পাড়া, তারাকান্দি, চরপাড়া, পলিশা ও বৈশের চর, নিখারপাড় গ্রামের শতশত নারী পুরুষ আক্রান্ত হয়ে পড়ছে।
এ ছাড়াও শরীরের খোস-পচড়া, চক্ষু ও কর্ন প্রদাহসহ নানা রোগ ব্যধীতে ভুগছে। বিষাবক্ত গ্যাসের ক্ষতিকর প্রভাবে গ্রামের গাছ-পালা মরে যাচ্ছে। ইতিমধ্যে এলাকার কয়েক শত একর জমি অনুর্বর হয়ে পড়ায় ফসল উৎপাদন চরম ব্যহত হচ্ছে। মরে যাচ্ছে যমুনার শাখা নদীসহ বিভিন্ন ডোবা, নালা ও পুকুরের মাছ।
এলাকাবাসীর অভিযোগ কারখানা কর্তৃপক্ষ আমলে নিচ্ছেনা বলে জানাগেছে। মহামারী করোনাকালীন সরকারের প্রনোদনার টাকা ক্ষতিগ্রস্থরা পায়নি বলে মানববন্ধনে অভিযোগ করা হয়। মানববন্ধন শেষে সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বীরমুক্তিযোদ্ধা ছাদেক হোসেন, এ বি এম মোশরেকুল আলম লিচু, আব্দুস ছালাম মাস্টার, সহকারী শিক্ষক বজলুর রশিদ, জয়নাল আবেদীন, ব্যবসায়ী লিটন মিয়া প্রমূখ।
বক্তারা যমুনা সারকারখানা কর্তৃপক্ষের নিকট দ্রুত সময়ের মধ্যে বিষাক্ত পানি অপসারণের দাবী জানান। অন্যথায় পরবর্তীতে কঠিন কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে বলে হুসিয়ারী উচ্চারন করেন।