মায়ের কাছে চিঠি লিখে কিশোরীর আত্মহত্যা
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১০:৪৯ পিএম, ১১ ডিসেম্বর,শুক্রবার,২০২০ | আপডেট: ০১:৩৪ এএম, ২০ নভেম্বর,
বুধবার,২০২৪
শেরপুর সদর উপজেলায় মায়ের কাছে এক কিশোরী চিঠি লিখে আত্মহত্যা করেছে বলে খবর পাওয়া গেছে। গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে উপজেলার একটি গ্রাম থেকে ঝুলন্ত অবস্থায় ওই কিশোরীর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
এ ঘটনায় স্থানীয় মো. রাশেদ (২০) নামের এক তরুণের বিরুদ্ধে আত্মহত্যার প্ররোচনার অভিযোগ করা হয়েছে। জব্দ করা হয়েছে সুইসাইড নোট। ডায়েরির পাতায় যা চিঠি আকারে মায়ের কাছে লিখে নিজের আত্মহত্যার কারণ জানিয়েছে মেয়েটি।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, লাশ উদ্ধার হওয়া ওই কিশোরীর বয়স ১৪ বছর। সে স্থানীয় একটি বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী ছিল।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, কয়েক বছর আগে ওই কিশোরীর বাবা-মায়ের বিবাহবিচ্ছেদ ঘটে। এরপর থেকে ওই কিশোরী নানির বাড়িতে থেকে লেখাপড়া করছিল। গতকাল বিকেল থেকে মেয়েটির সন্ধান পাওয়া যাচ্ছিল না। পরে সন্ধ্যায় স্বজনেরা বাড়ির একটি ঘরের আড়ার সঙ্গে গলায় রশি দিয়ে প্যাঁচানো অবস্থায় তাকে ঝুলে থাকতে দেখেন। খবর পেরে বৃহস্পতিবার রাত আটটার দিকে সদর থানা-পুলিশ তার লাশ উদ্ধার করে এবং ডায়েরির পাতায় লেখা সুইসাইড নোট জব্দ করে।
মায়ের কাছে লেখা ওই চিঠি থেকে জানা যায়, রাশেদ নামের এক তরুণের সঙ্গে ওই কিশোরীর প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। বিয়ের কথা বলে রাশেদ মেয়েটির সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক করেন। এতে ওই কিশোরী অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ে। এরপর থেকে কিশোরীকে এড়িয়ে চলতে থাকেন রাশেদ। এই অভিমান থেকে সে আত্মহত্যা করেছে এবং আত্মহত্যার জন্য রাশেদকে দায়ী করেছে।
ওই কিশোরীর মা জানান, তার স্বামীর সঙ্গে ছাড়াছাড়ি হওয়ার পর তিনি ঢাকায় একটি তৈরি পোশাক কারখানায় কাজ করে মেয়ের লেখাপড়ার খরচ চালাতেন। আত্মহত্যার বিষয়ে তার মেয়ে সবকিছু লিখে গেছে। মেয়েটির আত্মহত্যার পেছনে রাশেদসহ যারা জড়িত, তাদের সবার বিচারও দাবি করেন তিনি।
সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, প্রেমঘটিত কারণে ওই স্কুলছাত্রী আত্মহত্যা করেছে। তার আত্মহত্যার প্ররোচনার সঙ্গে জড়িতদের আটকের চেষ্টা চলছে। লাশের সুরতহাল করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে জেলা সদর হাসপাতালের মর্গে। ঘটনাটি গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত করা হচ্ছে।’
এদিকে ঘটনার পর থেকে অভিযুক্ত রাশেদ ও তার পরিবারের লোকজন পলাতক থাকায় তাদের বক্তব্য নেওয়া যায়নি।