কলারোয়ার আলোচিত ফোর মার্ডারের রায় ২৯ আগস্ট
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৪:৪৩ পিএম, ২৩ আগস্ট,সোমবার,২০২১ | আপডেট: ০৬:০৬ পিএম, ২০ নভেম্বর,
বুধবার,২০২৪
কলারোয়ায় একই পরিবারের চানজনকে নৃশংসভাবে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় মাত্র ১৭ কার্যদিবসে বাদী এবং আসামি পক্ষের যুক্তিতর্ক শেষে আগামী ২৯ আগস্ট রায় ঘোষণার দিন ধার্য করেছেন বিজ্ঞ আদালত।
গতকাল রবিবার (২২ আগস্ট) সাতক্ষীরার সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক শেখ মফিজুর রহমান ওই আদেশ দেন।
এদিকে, চাঞ্চল্যকর এ মামলায় রাষ্ট্র পক্ষের পিপি এড. আব্দুল লতিফ যুক্তিতর্ক শেষে একমাত্র আসামি রায়হানুর রহমানকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মুত্যুদন্ড কার্যকরের দাবীর পাশাপাশি আসামি পক্ষের সিনিয়র আইনজীবী এস এম হায়দার আসামীকে বে-কসুর খালাস দাবি করেছেন বিজ্ঞ আদালতের কাছে।
ঘটনার বিবরণে জানা যায়, কলারোয়া উপজেলার হেলাতলা ইউনিয়নের খলসী গ্রামের শাহজাহান ডাক্তারের ছোট ছেলে রায়হানুর রহমান (৩৬) বেকারত্বের কারণে বড় ভাই শাহীনুরের সংসারে খাওয়া দাওয়া করতো। শারীরিক অসুস্থতার কারণে কোন কাজ না করায় গত বছরের ১০ জানুয়ারি স্ত্রী তালাক দেয় রায়হানুর রহমানকে। সংসারে টাকা দিতে না পারায় শাহীনুরের স্ত্রী দেবর রায়হানুরকে মাঝে মাঝে গালমন্দ করতো। এরই জের ধরে গত বছরের ১৪ অক্টোবর রাতে ভাই শাহীনুর রহমান (৪০), ভাবী সাবিনা খাতুন (৩০), তাদের ছেলে ব্রজবক্স সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণির ছাত্র সিয়াম হোসেন মাহী (১০) ও মেয়ে একই বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্রী তাসমিন সুলতানাকে (৮) কোমল পানীয় এর সাথে ঘুমের বাড়ি খাওয়ায়।
এরপর ভোর চারটার দিকে হাত ও পা বেঁধে তাদেরকে একে একে চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে নৃশংসভাবে হত্যা করে। এ সময় তাদের ৪ মাসের শিশু মারিয়াকে হত্যা না করে তাকে লাশের পাশে ফেলে রেখে যায়। এ ঘটনায় নিহত শাহীনুরের শ্বাশুড়ি কলারোয়া উপজেলার উফাপুর গ্রামের রাশেদ গাজীর স্ত্রী ময়না খাতুন বাদি হয়ে কারো নাম উল্লেখ না করে থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলার তদন্তে নেমে সিআইডি আসামি হিসেবে শাহীনুরের ভাই রায়হানুর রহমান, একই গ্রামের রাজ্জাক দালাল, আব্দুল মালেক ও ধানঘরা গ্রামের আসাদুল সরদারকে গ্রেপ্তার করে।
গ্রেপ্তারকৃত রায়হানুরকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে ২১ অক্টোবর জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম বিলাস মন্ডলের কাছে একাই হত্যার দায় স্বীকার করে ফৌজদারী কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেয়। নিহত পরিবারে বেঁচে থাকা একমাত্র শিশু মারিয়া বর্তমানে হেলাতলা ইউপি সদস্য নাছিমা খাতুনের কাছে বড় হচ্ছে। গত ২৪ নভেম্বর মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা সিআইডি'র পুলিশ পরিদর্শক শফিকুল ইসলাম আসামি রায়হানুর রহমানের নামে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।
এ মামলায় গত ১৪ জানুয়ারি অভিযোগ গঠনের মধ্য দিয়ে বিচার কার্যক্রম শুরু হয়। এ মামলার রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ও জজ কোর্টের পিপি অ্যাড. আব্দুল লতিফ জানান, এ পর্যন্ত মামলার বাদি ময়না খাতুন, কলারোয়া থানার উপ-পরিদর্শক ইসরাফিল হোসেন, তানিয়া খাতুন, আয়েশা খাতুন, আনিছুর রহমান, আব্দুল কাদের, হাফিজুল ইসলাম, হেলাতলা ইউপি চেয়ারম্যান মোয়াজ্জেম হোসেন, কনস্টেবল সোনিয়া আক্তার, কনস্টেবল মো: বখতিয়ার হোসেন, কনস্টেবল সিরাজুম মনীর, জব্দ তালিকার সাক্ষী সিআইডি'র সাতক্ষীরার পুলিশ পরিদর্শক শফিকুল ইসলাম, ইউপি সদস্য আব্দুস সাত্তার, আলমগীর হোসেন, সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালের চিকিৎসক ডাঃ নাসিরউদ্দিন, বিচারিক হাকিম বিলাস কুমার মন্ডল, বিচারিক হাকিম রাকিবুল ইসলাম ও তদন্তকারি কর্মকর্তা শফিকুল ইসলাম সহ মোট ১৭ জন আদালতে সাক্ষ্য দিয়েছেন।
আসামি পক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন, এড. মো: ফরহাদ হোসেন ও এড. মোস্তাফিজুর রহমান জগলু এবং তাঁদেরকে সহায়তা করেন, সিনিয়র আইনজীবী এসএম হায়দার।