‘শহীদ রবের সমাধিস্থল সিআরবিতে কোনো হাসপাতাল চাই না’

চাকসুর প্রথম জিএস বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ আবদুর রবের সমাধিস্থল সিআরবিতে কোনো হাসপাতাল চাই না। এখানে যদি হাসপাতাল করতে হয়, তবে আমাদের লাশের ওপর হাসপাতাল করতে হবে। চট্টগ্রামবাসীর প্রাণের দাবিকে অগ্রাহ্য করে যদি এখানে ইউনাইটেড গ্রুপ হাসপাতাল করে, তবে আমরা চট্টগ্রামবাসী ঢাকা ইউনাইটেড হাসপাতালে চিকিৎসা নেয়া আজ থেকে বন্ধ করে দিলাম। আমার ভাইয়ের সমাধির ওপর হাসপাতালের নামে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান নির্মিত হলে আমাদের বেঁচে থাকার কোনো মূল্যই রইবে না। তাই চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় অ্যালামনাই এসোসিয়েশন নাগরিক সমাজ চট্টগ্রামের আন্দোলনের সাথে একাত্মতা ঘোষণা করে বলতে চায়, চবির সাবেক ও বর্তমান শিক্ষার্থীরা সিআরবির প্রাণ-প্রকৃতি ধ্বংস করে, শহীদ রবের সমাধির ওপর হাসপাতাল নির্মাণ চক্রান্ত রুখে দিতে যথেষ্ট। এখানে হাসপাতাল হলে মুক্তিযুদ্ধ অপমানিত হবে। চট্টগ্রামে নয়, এ প্রতিবাদ সারা দেশেই ছড়িয়ে দিতে হবে।

গত শনিবার সিআরবি রক্ষা আন্দোলনে নাগরিক সমাজ চট্টগ্রাম এবং চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় অ্যালামনাই এসোসিয়েশন আয়োজিত অবস্থান কর্মসূচি ও প্রতিবাদ সমাবেশে নেতৃবৃন্দ এ অভিমত ব্যক্ত করেন। চাকসুর সাবেক ভিপি ও সাবেক এমপি মজহারুল হক শাহ চৌধুরীর সভাপতিত্বে এবং চবির সাবেক ছাত্রনেতা গিয়াস উদ্দিনের সঞ্চালনায় সমাবেশে প্রধান অতিথি ছিলেন সমাজবিজ্ঞানী প্রফেসর ড. অনুপম সেন।

তিনি বলেন, সভ্যতার অগ্রগতি এবং মানুষের লোভের আঘাতে আজ প্রকৃতির অপরূপ দান তিরোহিত। কেবলমাত্র অবশিষ্ট রয়েছে মহানগরীর কেন্দ্রস্থলে অবস্থিত চট্টগ্রামের ফুসফুস খ্যাত সিআরবি। শতবর্ষী বৃক্ষরাজি, পাহাড়, টিলা ও উপত্যকায় ঘেরা বাংলাদেশের ইতিহাস ও ঐতিহ্যমন্ডিত একটি অনন্য প্রাকৃতিক স্থান এই সিআরবি। বর্তমানে প্রকৃতির অসীম দানে ঋদ্ধ এ রকম বড় উন্মুক্ত স্থান চট্টগ্রামে আর নেই। হাসপাতালের নামে এ জায়গাটিও কেড়ে নেয়ার ষড়যন্ত্র আমরা রুখে দিতে পারব। আজকে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের সমাবেশ সেই কথাটিই প্রমাণ করে। প্রয়োজন হলে আমরা জীবন উৎসর্গ করব। আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর প্রকৃতি প্রেম, প্রকৃতি বান্ধবতা বিশ্ববিদিত। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় দীর্ঘকাল ধরে তিনি নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। তার নেতৃত্বে আজ যেখানে বাংলাদেশ জুড়ে বিপুলভাবে বৃক্ষরোপণের বিরাট উদ্যোগ শুরু হয়েছে, সেখানে চট্টগ্রামের ফুসফুস খ্যাত সিআরবি এলাকায় বিত্তবানদের স্বাস্থ্যসেবা প্রদানের জন্য একটি মুনাফাভিত্তিক বেসরকারি হাসপাতাল নির্মিত হতে পারে না।

সমাবেশে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট ইব্রাহীম হোসেন চৌধুরী বাবুল, খোরশেদ আলম সুজন, আলতাফ হোসেন বাচ্চু, দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান, মুক্তিযোদ্ধা মো. ইউনুচ, মহানগর আওয়ামী লীগের আইন বিষয়ক সম্পাদক ইফতেখার সাইমুল চৌধুরী, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ডিন প্রফেসর ড. সিকান্দর, সাবেক ডিন প্রফেসর ড. ফরিদ উদ্দিন, চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক চৌধুরী ফরিদ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী মুক্তিযোদ্ধা শাহ আলম নিপু, কমরেড অশোক সাহা, মো. শাহজাহান চৌধুরী, দাউদ আবদুল্লাহ, মোফাজ্জল হক, মো. জাকারিয়া, মো. সাহাবুদ্দিন, মো. মুছা, অ্যাডভোকেট শামীম, ছগির আহমেদ, এনামুল হক মিলন, মোফাজ্জল হক, শাহেদুল হক চৌধুরী, সাহেদুল করিম, দিলরুবা খানম, মামুনুর রশিদ, আমানুল্লাহ চৌধুরী, রাজু আহমেদ, সাইফুল ইসলাম রাশেদ, আল হাসান খান, মো. মাহবুব, রিপায়ন বড়ুয়া, মো. শাহরিয়ার, নূরুন্নবী চৌধুরী, আবু তৈয়ব সুমন, হানিফা নাজির হেনা ও মো. ইউছুফ।