বেলকুচিতে ত্রিভুজ পরকীয়া প্রেমের রহস্য উদঘাটন : সাড়ে ৪ বছর পর
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১১:২৪ পিএম, ৫ আগস্ট,বৃহস্পতিবার,২০২১ | আপডেট: ০৯:১১ এএম, ২১ সেপ্টেম্বর,শনিবার,২০২৪
সিরাজগঞ্জের বেলকুচি উপজেলার চর বেলকুচি গ্রামের বেকারি দোকানের কর্মচারি মোঃ শাহ আলম (৩৫) কে ত্রিভূজ পরকিয়া প্রেমের জেড়ে বালিশ চাপা দিয়ে হত্যা করা হয়। এরপর লাশ গুমের উদ্দেশ্যে দূর্গম যমুনা নদীর চরের ছোনের ভিতরে ফেলে দেওয়া হয়।
দীর্ঘ ৫ বছর পর ৪ জুলাই বুধবার সিরাজগঞ্জ সিআইডি পুলিশ এ চাঞ্চল্যকর হত্যা রহস্য উন্মোচন করেছে। নিহত বেকারি দোকান কর্মচারি শাহ আলম বেলকুচি উপজেলার বওড়া গ্রামের মৃত জামাল মোল্লার ছেলে। এ বিষয়ে সিরাজগঞ্জ সিআইডি পুলিশের ইন্সপেক্টর সাখাওয়াত হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, একই গ্রামের স্বামী পরিত্যাক্তা কাকলি বেগমের (৩৫) (ছদ্দ নাম) সাথে শাহ আলম সহ ৩ জনের পরকিয়া প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে।
বিষয়টি শাহ আলম জানতে পেরে কাকলিকে গালাগাল করে ও ওই দু'জনকে তার কাছে আসতে বারণ করে। এতে কাকলি ও ওই দুই পরকিয়া প্রেমিক ক্ষুব্ধ হয়ে তাকে হত্যার পরিকল্পনা করে। এরপর তারা পরিকল্পনা অনুযায়ী সুযোগ খুজতে থাকে।
২০১৭ সালের ২৫ জানুয়ারী রাতে শাহ আলম কাকলির সাথে দেখা করতে এসে তার বিছানায় ঘুমিয়ে পরে। এ সুযোগে কাকলি ও তার দুই পরকিয়া প্রেমিক বালিশ চাপা দিয়ে শ্বাস রোধে হত্যার পর লাশ গুমের উদ্দেশ্যে দূর্গম যমুনা নদীর চরের ছোনের ভিতরে ফেলে দেয়।
এ ঘটনার ২ দিন পর ২০১৭ সালের ২৭ জানুয়ারী বেলকুচি থানা পুলিশ যমুনার চরের ছোনের ভিতর থেকে শাহ আলমের লাশ উদ্ধার করে।
এ ঘটনায় নিহতের স্ত্রী মোছাঃ শিরিনা বেগম বাদী হয়ে বেলকুচি থানায় অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামী করে এশটি হত্যা মামলা দায়ের করে। মামলা নং-১৫, তারিখ-২৭/০১/২০১৭ খ্রিঃ, ধারা-৩০২/২০১/৩৪।
বেলকুচি থানা পুলিশ দীর্ঘ চেষ্টার পর এ হত্যা রহস্য উদঘাটনে ব্যার্থ হয়ে সিরাজগঞ্জ সিআইডি পুলিশের কাছে মামলাটি হস্তান্তর করে।
এরপর সিরাজগঞ্জ সিআইডি পুলিশের বিশেষ পুলিশ সুপার কামাল হোসেনের সার্বিক দিক নির্দেশনায় সিরাজগঞ্জ সিআইডি পুলিশ পরিদর্শক (নিরস্ত্র) মোঃ শাখাওয়াত হোসেন মামলাটির তদন্তভার গ্রহণ করে এ হত্যা রহস্য উদঘাটনের কাজ শুরু করেন।
এরপর তিনি তথ্য প্রযুক্তির সাহায্যে ক্লু-লেস এ হত্যার সাথে জড়িত পলাতক আসামী মোঃ জুলহাস ওরফে জুলুকে (৫৭) গত ৩ আগস্ট রাতে কামারখন্দ উপজেলার জামতৈল রেল স্টেশন এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে।
এরপর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে হত্যার দায় স্বীকার করে। এরপর তাকে ৪ আগস্ট বুধবার দুপুরে সিরাজগঞ্জ আদালতে হাজির করা হলে বিজ্ঞ আদালতেও সে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করে। ফলে তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে এ হত্যার রহস্য উন্মেচন হয়।
আদালতে জুলহাস বলেন, ত্রিভূজ পরকীয়া প্রেম ঘটিত বিষয় নিয়ে মনোমালিন্যের জেরে সহযোগিদের নিয়ে ২০১৭ সালের ২৫ জানুয়ারি রাতে বালিশ চাপা দিয়ে হত্যার পর যমুনার চরের ছোনের ভিতর ফেলে দেয়।