শীতে কাঁপছে কুড়িগ্রাম
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১১:৫৫ পিএম, ৭ ডিসেম্বর,সোমবার,২০২০ | আপডেট: ০৮:১৮ পিএম, ২২ নভেম্বর,শুক্রবার,২০২৪
উত্তরাঞ্চলের সীমান্তঘেঁষা জেলা কুড়িগ্রামে জেঁকে বসেছে শীত। হিমালয়ের নিকটবর্তী এ জেলার সর্বত্র ঢাকা পড়েছে ঘন কুয়াশায়। রাতে ও সকালে টুপটাপ শব্দে ঝরছে শিশির। আর সকালে ধানের শিষে জমে থাকা শিশিরের ফোটাই বলে দিচ্ছে শীত এসে গেছে।
আজ সোমবার (৭ ডিসেম্বর) সকাল থেকে ঘন কুয়াশায় আচ্ছন্ন হয়ে আছে রাস্তাঘাট, নদ-নদী, খাল-বিল ও ফসলি জমি।
ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা নৈশকোচ ও ট্রাকগুলো হেডলাইট জ¦ালিয়ে রাস্তায় চলাচল করছে। জীবিকার সন্ধানে ঘর থেকে বের হওয়া দিনমজুর ও খেটে খাওয়া মানুষগুলো যে যার সাধ্য অনুযায়ী নিজেকে জড়িয়ে নিয়েছেন গরম কাপড়ে। কেউ আবার গরম কাপড় না থাকায় হালকা কাপড় পরেই বেরিয়ে পড়েছেন কাজের সন্ধানে। চরমাধবরাম এলাকার জেলে জলকু রাম ও হরি চন্দ্র জানান, আজ প্রচুর শীত পড়েছে। মাছ ধরতে বেরিয়ে খুবই ঠান্ডা লাগছে। কিন্তু মাছ না ধরলে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে না খেয়ে থাকতে হবে। তাই আমরা নিরুপায়। একই এলাকার ৮৩ বছর বয়সী কৃষক জাবেদ আলী জানান, আজ খুব শীত পড়েছে। খুবই ঠান্ডা লাগছে। কিন্তু কাজ না করলে পেটে ভাত যায় না। তাই এ বয়সেও কজে বের হতে হয়েছে। এই শীতে খুবই কষ্ট করছি। কেউ আমাকে একটি কম্বল দিলে উপকৃত হতাম।
পাঁচগাছি ইউনিয়নের উত্তর নওয়াবশ গ্রামের বৃদ্ধ তোজাম আলী জানান, অতিরিক্ত ঠান্ডার কারণে ঘর থেকে বের হতে পারি না। ঠান্ডায় পানিতে অজু করতেও সমস্যা হচ্ছে। কুড়িগ্রাম কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. আমিনুল ইসলাম বলেন, শীতে শাক সবজির তেমন ক্ষতি হয় না। তবে তাপমাত্রা ধারাবাহিকভাবে এক দুই সপ্তাহ ১০-১৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে থাকলে আলু গাছের পাতায় এক ধরনের ছত্রাক আক্রমণ করে আলুখেতের ক্ষতি করে। রাজারহাট আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সুবল চন্দ্র সরকার জানান, কুড়িগ্রামে আজ সোমবার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১৪ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যা দেশের মধ্যে দ্বিতীয় সর্বনিম্ন। ডিসেম্বর মাসের মাঝামাঝি সময়ের পরে শৈত্যপ্রবাহ শুরু হতে পারে। ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে তাপমাত্রা নামলেই শৈত্যপ্রবাহ শুরু হবে। ফেব্রুয়ারি কিংবা মার্চের দিকে গিয়ে শীত শেষ হতে পারে।
জেলা সিভিল সার্জন ডা. মো. হাবিবুর রহমান বলেন, এখনও শীতজনিত রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা যায়নি। শীতজনিত রোগের রোগীদের জন্য উপজেলা মেডিকেল টিম, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সসহ অনান্য মেডিকেল টিম প্রস্তুত রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, শীতে সাধারণত সর্দি-কাশি থেকে শুরু করে অন্যান্য স্বাস্থ্য-সমস্যার বিষয়টিও মাথায় রাখা দরকার। এ সময় জ্বর, অ্যাজমা, গা-ব্যথা, অসাড় ভাবসহ নানা ধরনের সংক্রমণ দেখা দেয়। শীতজনিত রোগ থেকে মুক্ত থাকার জন্য যেসব খাবারে ভিটামিন সি ও জিংক আছে সেগুলো খেতে হবে।
তিনি বলেন, এ সময় বেশি করে ভিটামিনযুক্ত খাবার খাওয়া উচিত। শরীরের ওজন ঠিক রাখতে কিছুটা ঘাম ঝরানো উচিত। বেশি করে ফল ও সবজি খেতে হবে ও শরীরের আদ্রতা বজায় রাখতে প্রচুর পরিমাণে পানি পান করতে হবে।