সখিপুরে স্ত্রীর মর্যাদা পাওয়ার দাবিতে অনশনরত নারী সালিশি বৈঠকে বিষপান
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১১:০৯ পিএম, ৪ আগস্ট,
বুধবার,২০২১ | আপডেট: ০৯:৩৮ পিএম, ১০ সেপ্টেম্বর,মঙ্গলবার,২০২৪
টাঙ্গাইলের সখিপুরে স্ত্রীর মর্যাদা পাওয়ার দাবিতে ৫দিন যাবৎ অনশনরত অবস্থায় সুলতানা খাতুন (২৪) আজ বুধবার সালিশি বৈঠকেই বিষ পান করেছেন। বুধবার সখিপুর উপজেলার দাড়িয়াপুর ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডে আয়োজিত সালিশি বৈঠকের শেষ পর্যায়ে তিনি তার সঙ্গে থাকা বোতলের বিষ মুখে ঢেলে দেন।ওই নারীকে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে তার নিজের বাড়ি ভুয়াপুরে নিয়ে যাওয়া হয়েছে বলে তার বড় ভাই শামীম জানান। তিনি টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর উপজেলা সদরের আজগর আলীর মেয়ে।সে গত ৩১ জুলাই থেকে সখিপুর উপজেলার দাড়িয়াপুর গ্রামের ৩নং ওয়ার্ড ফালু চাঁন শাহ(ফাইলা পাগলা) মাজারপাড় সংলগ্ন মৃত মোজাফফর আলীর ছেলে আবদুর রহিমের বাড়িতে স্ত্রীর অধিকার আদায়ের দাবিতে তিনি অনশন করে আসছিলেন।
এলাকাবাসী জানায়, সখিপুর উপজেলার দাড়িয়াপুর ফালু চানের মাজার এলাকার আবদুর রহিম ও ভূঞাপুর উপজেলা সদরের আজগর আলীর মেয়ে সুলতানা খাতুন গাজীপুর চৌরাস্তায় সেবা এনজিওতে চাকুরী করতেন। এ সময় তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে।এর পর দু'জনের সম্মতিতেই ২০১৭ সালের ৩ আগস্ট ৭ লাখ টাকা দেনমোহরে বিয়ে করেছেন তারা। গাজীপুর চৌরাস্তার ভাওয়াল কলেজ সংলগ্ন একটি বাসা ভাড়া নিয়ে তাঁরা স্বামী-স্ত্রী হিসেবে থাকতেন। কিছুদিন আগে তাঁদের মধ্যে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে আবদুর রহিম বাসা থেকে চলে আসেন। আব্দুর রহিম তার ব্যবহৃত মুঠোফোনের নম্বর পরিবর্তন করে গ্রামের বাড়ি দাড়িয়াপুরে অবস্থান করছিলেন।
আবদুর রহিমের সঙ্গে নানাভাবে যোগাযোগের চেষ্টা করেন স্ত্রী সুলতানা খাতুন। তাকে স্ত্রী হিসেবে মেনে নিতে অস্বীকৃতও জানান স্বামী আব্দুর রহমান। ৩১ জুলাই শনিবার স্ত্রীর অধিকার আদায়ের দাবিতে কাবিননামা এবং বিষের বোতল হাতে নিয়ে স্বামীর বাড়িতে অবস্থান নেন সুলতানা খাতুন। তাঁর আসার খবর শুনে আবদুর রহিম বাড়ি থেকে সটকে পড়েন। বিষয়টি মিমাংসার জন্যে বুধবার সখিপুরের দাড়িয়াপুর ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ড আবাদি বাজার এলাকায় দুইপক্ষের লোকজন নিয়ে সালিশি বৈঠক বসে।
বৈঠকে দাড়িয়াপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আনছার আলী আসিফ, সাবেক চেয়ারম্যান এসএম শাইফুল ইসলাম শামীম, শিক্ষক সানোয়ার হোসেন, ৩নং ওয়ার্ড ইউপি সদস্য শাহীন মিয়া এবং ভূয়াপুর থেকে সন্দুলা ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম, অনশনরত সুলতানার বড়ভাই শামীম ও তাঁর পক্ষের লোকজন উপস্থিত ছিলেন। সালিশি বৈঠকে মেয়েকে তিন লাখ ১০ হাজার টাকা দিয়ে উপস্থিত উভয়পক্ষের সম্মতিতে তাঁদের ছাড়াছাড়ির সিদ্ধান্ত হয়। উভয় পক্ষ সিদ্ধান্তটি মেনেও নেয়। কিন্তু অভিযুক্ত আব্দুর রহিম একলাখ টাকা নগদ পরিশোধ করে বাকি টাকা দিতে ১০ দিনের সময় চান। ইতিমধ্যে ওই নারী হঠাৎ বিষের বোতল বের করে নিজের মুখে ঢেলে দেন। তাৎক্ষণিক তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে তাকে ভূয়াপুর নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
৭নং দাড়িয়াপুর ইউপি চেয়ারম্যান আনছার আলী আসিফ জানান, ওই নারী সুস্থ হলে এ বিষয়ে পরবর্তীতে আবার বসা হবে বলে জানান।