চট্টগ্রাম নগরীতে ফাঁকা বেশিরভাগ সড়ক : মানুষজনও কম, লকডাউন দেখতে এসে গ্রেফতার ২১
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০১:১০ এএম, ২ জুলাই,শুক্রবার,২০২১ | আপডেট: ১১:৫১ পিএম, ২০ সেপ্টেম্বর,শুক্রবার,২০২৪
দেশে শুরু হয়েছে সাত দিনব্যাপী সর্বাত্মক লকডাউন। করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব বেড়ে যাওয়া দেশব্যাপী এ লকডাউন ঘোষণা করেছে সরকার। এবারের লকডাউনকে সফল করতে পুলিশ ও র্যাবের পাশাপাশি মাঠে রয়েছে সেনাবাহিনী ও বিজিবি। লকডাউন শুরুর সকালে নগরীর অধিকাংশ রাস্তা ফাঁকা। রাস্তায় মানুষ এবং যানবাহনের সংখ্যা খুব কম। এছাড়া জরুরি প্রয়োজন ছাড়া এবং যাদের বের হওয়ার অনুমতি আছে সেসব লোকজন ব্যতীত লোকজনের উপস্থিতি তেমন একটা লক্ষ্য করা যায়নি। এদিকে লকডাউন কেমন হচ্ছে রাস্তায় দেখতে এসে গ্রেফতার হয়েছে ২১ জন।
আজ বৃহস্পতিবার সকাল থেকে নগরীর জিইসি, ওয়াসা, লালখান বাজার, দুইনং গেইট, কাজীর দেউড়ি, জামালখান, আন্দরকিল্লা, চকবাজার, প্রর্বত্তক মোড়, গোলপাহাড় এলাকায় এ চিত্র দেখা যায়।
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে সকাল ৬টা থেকে সারাদেশে কঠোর লকডাউন শুরু হয়েছে। আগামী ৭ জুলাই মধ্যরাত পর্যন্ত তা অব্যাহত থাকবে। মানুষের সার্বিক কার্যাবলী ও চলাচলে বিধিনিষেধ আরোপে বুধবার (৩০ জুন) এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের মাঠ প্রশাসন সমন্বয় অধিশাখা। তবে জরুরি প্রয়োজনে এবং নিজস্ব পরিবহন ব্যবস্থার মাধ্যমে যেসব অফিস খোলা আছে, সেসব অফিসের কর্মীদের সড়কে অপেক্ষা করতে দেখা গেছে। গণপরিবহন, সিএনজিচালিত অটোরিকশা, রাইড শেয়ারিং বন্ধ থাকলেও প্রাইভেট কার, রিকশা, অফিসের মাইক্রোবাসগুলো চলাচল করছে। গণপরিবহন না চললেও অফিসযাত্রীদের জন্য ছিল কিছুটা ভোগান্তি। সড়কে শুধু চলছে রিকশা। কিন্তু রিকশা ভাড়া দ্বিগুণ হওয়ায় কিছুটা বিপদে অফিসগামী লোকজন। অন্যদিকে চট্টগ্রামে প্রচন্ড বৃষ্টি হওয়ায় নগরীর অধিকাংশ রাস্তা পানিতে ডুবেছিল। পানির কারণে অফিসগামী মানুষের হেঁটে যেতে দুর্ভোগ পোহাতে হয়। অন্যান্য দিন সকাল সাড়ে ৭টা থেকে ৯টা পর্যন্ত সড়কে অফিসগামী মানুষের ভিড় থাকে। সেই তুলনায় অনেক কম মানুষের উপস্থিতি দেখা যাচ্ছে। কঠোর বিধিনিষেধের প্রথম দিনে সবাই পরিস্থিতি বোঝার চেষ্টা করছে বলে মনে করেন, পরিস্থিতি ঢিলেঢালা থাকলে হয়েতো মানুষ বের হবে- এমনটাই বলছিলেন দুইনাম্বার গেইটে দাঁড়িয়ে থাকা রিকশা চালক।
এদিকে লকডাউনকে সফল করতে নগরীর জেলা প্রশাসনের ১২ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট-এর নেতৃত্বে সার্কিট হাউজ থেকে একযোগে সকাল সাড়ে ১০ টার দিকে অভিযান শুরু হয়। জেলা প্রশাসনকে সহযোগিতা করছে পুলিশ, সেনাবাহিনী, বিজিবি, আনসার, র্যাব ও ১০০ জন স্বেচ্ছাসেবক। বিধিনিষেধ চলাকালে আইনশৃঙ্খলা এবং জরুরি পরিষেবা, যেমন কৃষি পণ্য ও উপকরণ (সার, বীজ, কীটনাশক, কৃষি যন্ত্রপাতি ইত্যাদি) খাদ্যশস্য ও খাদ্যদ্রব্য পরিবহন, ত্রাণ বিতরণ, স্বাস্থ্যসেবা, কোভিড-১৯ টিকা প্রদান, রাজস্ব আদায় সম্পর্কিত কার্যাবলী, বিদ্যুৎ, পানি, গ্যাস/জ্বালানি, ফায়ার সার্ভিস, টেলিফোন ও ইন্টারনেট (সরকারি-বেসরকারি), গণমাধ্যম (প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়া), বেসরকারি নিরাপত্তা ব্যবস্থা, ডাক সেবা, ব্যাংক, ফার্মেসি ও ফার্মাসিটিক্যালসসহ অন্যান্য জরুরি/অত্যাবশ্যকীয় পণ্য ও সেবার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট অফিসের কর্মচারী ও যানবাহন প্রাতিষ্ঠানিক পরিচয়পত্র বহন করে যাতায়াত করতে পারবেন। প্রজ্ঞাপন অনুসারে, পণ্য পরিবহনে নিয়োজিত ট্রাক-কাভার্ডভ্যান, কার্গো ভেসেল এ নিষেধাজ্ঞার আওতাবহির্ভূত থাকবে। বন্দরসমূহ (বিমান, সমুদ্র ও স্থল) এবং এ সংশ্লিষ্ট অফিস এই নিষেধাজ্ঞার আওতাবহির্ভূত থাকবে। শিল্প কারখানাসমূহ স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণপূর্বক নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় চালু থাকবে।