চৌগাছার বর্ষাগাড়ি খাল অপরিকল্পিত ভাবে খনন!
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১১:৩৩ পিএম, ১৯ জুন,শনিবার,২০২১ | আপডেট: ১১:১৮ পিএম, ২০ নভেম্বর,
বুধবার,২০২৪
নদী-নালা, খাল-বিল খনন করা কত যে অপরিহার্য হয়ে পড়েছে তা চৌগাছার সদ্য খনন করা একটি খালের দিকে তাকালে সকলেই বুঝতে পারবে এমনটিই বলছেন স্থানীয়সহ পথচারীর। তবে খাল খনন করতে যেয়ে এর মুখে বাধ দেয়ায় নতুন সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে বলে জানান এলাকাবাসি।
উপজেলার নারায়নপুর ইউনিয়নের হাজরাখানা গ্রামের পাশ দিয়ে প্রবাহমান বর্ষাগাড়ি খাল। মহেশপুর উপজেলার পাঁচবাড়িয়া গ্রাম থেকে শুরু করে চৌগাছার স্বরুপদাহ ও নারায়নপুর ইউনিয়ের বেশ কয়েক গ্রাম ও মাঠের পানি এই খালে এসে পড়ে। খালের ধরন ক্ষমতার বেশি পানি হলেই তা হাজারাখানা গ্রামটির পূর্বপাশে কপোতাক্ষ নদে চলে যায়। কিন্তু খালটি পলি জমে ভরাট হওয়ায় কারনে এখন আর খালে কোন পানি থাকে না। এমন এক সময় ছিল বর্শাগাড়ি খালের পানিতে স্থানীয়রা গোসল করা সহ পরিবারের সব কাজই করত। খালটি কপোতাক্ষ নদের সাথে সংযোগ থাকায় সেই সময়ে প্রচুর পরিমানে দেশী প্রজাতীর মাছের সমারোহ ছিল, দেখা যেত হরেক রকমের পখ-পাখালির মেলা। সেই সব এক সময় স্মৃতির পাতা থেকে হারাতে বসেছিল। এ বছর খালটির কিছু অংশ খনন করা হলে বর্তমানে খালের যৌবন ফিরে পেতে বসেছে। হাজরাখানা নারায়নপুর সড়কে বর্শাগাড়ি খালের উপর নির্মিত ব্রিজ হতে পশ্চিম দিকে এই খনন কাজ সম্পন্ন করা হয়। খালটি খননের পর দুই পাড়ে রোপন করা হয়েছে কলাগাছ। কলাগাছের কচিপাতা আর খাল খননের নতুন মাটি পাড়কে নতুন রুপ দিয়েছে। সেই সাথে গত কয়েক দিনের গুড়িগুড়ি বৃষ্টিপাতে পানি জমা শুরু হয়েছে। অল্প বৃষ্টিতেই খালের খননকৃত স্থানে বলাচলে পানিতে টইটুম্বুর।
সরেজমিন বর্ষাগাড়ি খালের ব্রিজের উপর যেয়ে দেখা যায়, খননকৃত খালের পুরোটাই পানিতে একাকার। বর্ষা মৌসুম শুরু হলেও বৃষ্টিপাত সেভাবে শুরু হয়নি, অথচ খালের পানির যেন অভাব নেই। খালের দক্ষিনপাশে বসবাসকারী একাধিক নারী খালের ভরা পানিতে গোসল করতে দেখা যায়, দুরন্ত শিশু কিশোররা পানিতে গোসলে মেতে উঠেন। গৃহবধুরা বলেন, খালের এমন পানি কখনও দেখেনি, এখন খালে পানি জমায় গোসল করা যাচ্ছে এটিই যেন আমাদের কাছে বড় পাওয়া। কথা হয় হাজরাখানা গ্রামের বাসিন্দা বিএম বাবুল আক্তারের সাথে। তিনি বলেন, খালটি অনেক আগেই খনন করার দরকার ছিল, দেরিতে হলেও খনন করায় খালের সৌন্দর্য বেড়েছে ঠিকই কিন্তু বর্ষায় মানুষের দূর্ভোগও বেড়ে যেতে পারে। কারণ খালের পশ্চিম পাশে বাঁধ দেয়া হয়েছে, সেটি অপসরণ করা না হলে হাজরাখানা গ্রামের একটি অংশে পানি ঢুকে যাওয়ার আংশকা রয়েছে।
সংশ্লিষ্ঠ ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মনিরুজ্জামান মিলন জানান, খালটি খননের ফলে এর সৌন্দর্য বৃদ্ধি পেয়েছে ঠিকই। কিন্তু খাল খননের সময় পশ্চিম পাশে বাধ দেয়া হয়েছে। যার কারনে বর্ষার পানি খালে আসতে পারছেনা, এতে করে জমির ফসলসহ বৃষ্টির পানি গ্রামে ঢুকে পড়তে পারে। এ ছাড়া খালের পূর্ব-পশ্চিমে খনন করা হয়নি, মাঝে খনন করা হয়েছে। এটি অপরিকল্পিত ভাবে খনন বলে মনে করা হচ্ছে। কোন এক ব্যক্তি তার নিজের স্বার্থে খালটি খনন করেছে বলে অনেকে মনে করছেন। উপজেলা প্রকৌশলী মোঃ মুনছুর রাহমান বলেন, বর্ষাগাড়ি খাল খনন সম্পর্কে আমার কাছে কোন তথ্য নেই।