ফরিদপুরের ভাঙ্গায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দুই পক্ষের সংঘর্ষ, আহত ৫০
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১১:৩০ পিএম, ১৪ জুন,সোমবার,২০২১ | আপডেট: ০৪:০২ এএম, ১৫ সেপ্টেম্বর,রবিবার,২০২৪
ফরিদপুরের ভাঙ্গায় দুই পক্ষের সংঘর্ষে অর্ধশত আহত হয়েছে। সংঘর্ষ চলাকালে ৮টি বাড়ি ও ১২টি দোকনে হামলা ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটে। পরে ভাঙ্গা থানার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
আজ সোমবার ভোর সাড়ে ৫টার দিকে এ সংঘর্ষ শুরু হয়ে সকাল সাড়ে ৯টা পর্যন্ত উপজেলার মানিকদহ ইউনিয়নের পুখুরিয়া এলাকায় এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
এ সংঘর্ষে দুই পক্ষের আশেপাশের তিনটি ইউনিয়নের সাত গ্রামের লোক অংশ নেয়। আহতরা ভাঙ্গা ও সদরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিয়েছে। অনেকেই গ্রেফতার এড়াতে স্থানীয় ভাবে চিকিৎসা নিয়েছে।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, স্থানীয় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে মানিকদহ ইউনিয়নের পুখুরিয়া গ্রামের বাসিন্দা ইউনিয়ন পরিষদের আট নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক সদস্য করিম মাতুব্বরের (৭৮) সাথে একই ইউনিয়নের মৃধাকান্দা গ্রামের অবসরপ্রাপ্ত সোনালী ব্যাংক কর্মচারী আবুল কালাম মোল্লার (৬৪) সাথে বিরোধ চলে আসছিল। এ বিরোধের জেরে দুই পক্ষের মধ্যে বিভিন্ন সময়ে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে আসছে। গত প্রায় এক মাস ধরে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছিল।
রবিবার রাত ৮টার দিকে আবুল কালাম মোল্লার ভাতিজা অনিক মোল্লা (২১) পুখুরিয়া বাসস্ট্যান্ডে গেলে তাকে করিম মাতুব্বরের লোকজন মারপিট করে। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে রাতেই দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা চরম আকার ধারন করে। দুই পক্ষই রাতভর সংগঠিত হয়ে সংঘর্ষের প্রস্তুতি নিতে থাকে।
সোমবার ভোরেই সূর্য ওঠার সাথে সাথেই দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। এ সংঘর্ষে দুই পক্ষের হাজার খানেকের বেশি লোক ঢাল, সড়কিসহ বিভিন্ন ধরনের দেশীয় অস্ত্র নিয়ে দফায় দফায় সংঘর্ষে লিপ্ত হয়।
এলাকাবাসী সুত্রে জানা গেছে, এ সংঘর্ষে পাশের ভাঙ্গা উপজেলার নুরুল্লাগঞ্জ ইউনিয়ন ও সদরপুর উপজেলার কৃষ্ণপুর ইউনিয়ন থেকে দাঙ্গাবাজরা অংশগ্রহণ করে। সংঘর্ষ মানিকদহ ইউনিয়নের পুখুরিয়া, ব্রাহ্মণকান্দা, মৃধাকান্দা, নাজিরপুর, খাকান্দা নাজিরপুর, নুরুল্লাগঞ্জ ইউনিয়নের মীরাকান্দা, হরুপদিয়া গ্রামে ছড়িয়ে পড়ে।
সংঘর্ষের সময় এ সময় এক পক্ষের দলনেতা আবুল কালাম মোল্লার বাড়িসহ ৭/৮টি বাড়ি ভাংচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটে। এছাড়া মানিকদহ ইউনিয়নের পুখুরিয়া গ্রামের মুন্সী বাড়ি ও কান্দারবাড়ি নামক স্থানে ১০/১২টি দোকান ভাংচুরের ঘটনা ঘটে।
মানিকদহ ইউপি চেয়ারম্যান আবু সাঈদ মিয়া জানান, আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করেই সংঘর্ষ, হামলা, ভাংচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে। বেশ কিছুদিন যাবত ঐ এলাকায় উত্তেজনা ছিল। গত সপ্তাহে দুই পক্ষই ভাঙ্গা থানায় সংঘর্ষ না করার লিখিত অংগীকার দেন। ৫/৬ দিন না যেতেই এই সংঘর্ষ ঘটে।
ভাঙ্গা সার্কেলের দায়িত্বে নিয়োজিত সহকারি পুলিশ সুপার ফাহিমা কাদের চৌধুরী বলেন, দফায় দফায় এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। পুলিশ লাঠিপেটা করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। ঘটনাস্থল থেকে ১২জনকে আটক করা হযেছে। এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এ ব্যাপারে সোমবার বিকেল সাড়ে পাঁচটা পর্যন্ত কোন পক্ষই থানায় কোন অভিযোগ দেয়নি।